নাটোরে আওয়ামী লীগের হামলায় চার বিএনপি নেতা-কর্মী আহত

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোর সদর ও সিংড়া উপজেলার কয়েকটি স্থানে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলায় বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ চারজন আহত হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্র কমিটি গঠনের সভা পন্ড, নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর, পোষ্টারে আগুন দেয়ার ও মিলাদ মাহ্ফিলের তবারক লুটের ঘটনা ঘটেছে।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানান, বিকেল পাঁচটার দিকে সদর উপজেলার হয়বতপুর এলাকায় বিএনপি নেতা কর্মীরা নির্বাচনী কেন্দ্র কমিটি গঠনের সভার আয়োজন করছিলেন। এ সময় খোলাবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন নৌকার কর্মী তাঁদের ওপর হামলা করে। এতে বিএনপির সভাটি পন্ড হয়ে যায়। হামলাকারিদের মারপিটে নজরুল ইসলাম ও আবুল খায়ের নামের দুই কর্মী আহত হন। সেখান থেকে পালিয়ে বাঁচেন খোলাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম। তবে সেখান থেকে তিনি হয়বতপুর বাজারে এলে হামলাকারিরা আবারও তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় কুপিয়ে আহত করে।

স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মোবাইল ফোনে তিনি জানান, প্রথমে তাঁকে উদ্দেশ্য করে তিনটি গুলিও ছোঁড়া হয়েছিল তবে তা লাগেনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হয়বতপুর বাজারের একজন চা বিক্রেতা জানান, বিএনপি কর্মীদের মারপিট ও সভা পন্ড করার ঘটনা অনেকেই দেখেছেন। তবে তিনি গুলির শব্দ শুনতে পাননি। নাটোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু হাইকোর্ট থেকে মনোনয়ন পাওয়ায় স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য বাবর আলী ও শাহ আলম এছাড়াও একইদিন দুপুরে সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের তেলকুপি মাদ্রাসায় এক দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন।

শাহ আলম জানান, তাঁরা মিলাদের মুসল্লীদের জন্য খিঁচুড়ি পাক করেছিলেন। নৌকার কর্মীরা এসে ডেকসহ সমস্ত তবারক লুট করে নিয়ে গেছে। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্তুজা বাবলু বলেন, বিএনপি নিজেরাই এসব ঘটনা ঘটিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে।তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপি তাঁর দলীয় নেতা-কর্মীদের পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য বলেছেন। নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী জালাল উদ্দিন আহমেদ জানান,এসব ঘটনা তাঁরা শোনেননি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

এদিকে সিংড়া উপজেলা আবারও আওয়ামী লীগ কর্মীরা বিএনপি প্রার্থী দাউদার মাহমুদেে নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর ও তাঁর পোষ্টারে আগুন দিয়েছে। সোমবার রাতে উপজেলার শেরকোল ইউনিয়নের ভাগনাগরকান্দি গ্রামে বিএনপি প্রার্থীর পোষ্টার পুড়ানোর ঘটনা ঘটে। তবে কে বা কারা পোষ্টারে আগুণ দিয়েছে তা কেউ বলতে পারেননি। একইদিন সন্ধ্যায় সুকাশ ইউনিয়নের জয়কুঁড়ি বাজারে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে বিএনপির নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর এবং আমিনুল ইসলাম নামে যুবদলের এক নেতাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ করেছেন বিএনপি প্রার্থী দাউদার মাহমুদ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওহিদুর রহমান শেখ বলেন, বিএনপির নেতারা নিজেরাই পোষ্টার পুড়িয়ে আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। বিএনপি প্রার্থী উপজেলা জুড়ে তাঁর পোষ্টার লাগিয়েছেন, কোথাও কোনো বাধা বা হুমকি দেয়া হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সার্বক্ষণিক নির্বাচনী মাঠে আছেন এবং তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.