নাটোরের ৬০ বছরের পুরাতন শিশু পার্ক রক্ষায় স্মারকলিপি প্রদান

নাটোরে প্রতিনিধি: নাটোরের ৬০ বছরের পুরাতন শিশু পার্কটি রক্ষায় জেলা প্রশাসকের কাছে নাটোরের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠন ও সজেচতন নাটোরবাসীর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবর এক স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। স্মারকলিপিতে বলা হয়, নাটোর শহরের কাচারী মাঠ সংলগ্ন শিশু-কিশোরদের দীর্ঘদিনের ব্যহৃত ক্রীড়া চর্চা ও বিনোদনের ঐতিহাসিক শিশু পার্কটি ভেঙ্গে জেলা প্রশাসনের আওতায় নিয়ে লেডিস ক্লাব করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই পার্কের সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে সেখানে ভবন নির্মাণের জন্য মাটি খননের কাজ শুরু হয়েছে। অবিলম্বে শিশু পার্কের জায়গায় লেডিস ক্লাব নির্মাণের কাজ বন্ধ করে আবারও শিশু পার্ক হিসেবে চালু রাখার দাবী জানানো হয়েছে।

স্মারকলিপি গ্রহনের পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মহকুমা প্রশাসকের পুরাতন বাসভবন চত্বরে লেডিস ক্লাব নয়, সেখানে সরকারি নির্দেশনায় জেলা প্রশাসকের নতুন বাংলো তৈরি করা হচ্ছে। শিশু-কিশোরদের কথা বিচেনা করে খুব শীঘ্রই শহরের ফাঁকা কোন খাস জমিতে নতুন করে আধুনিক একটি শিশু পার্ক তৈরি করে দেয়ায় আশ্বাস দেয়া হয়েছে। স্মারকলিপিতে অন্যান্যের মধ্যে স্বাক্ষর করেন নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন বাদল, কথা সাহিত্যিক জাকির তালুকদার, দৈনিক প্রান্তজনের সম্পাদক মোঃ সাজেদুর রহমান, নাটোর প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মোঃ রেজাউল করিম রেজা, ঈংগীত থিয়েটারের সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুকুমার রায় বিপ্লু, চাঁদের হাটের সভাপতি আলী আকমল বাপ্পি ও কবি আশিক রহমান টিটু।

এব্যাপারে নাটোরের প্রবীন ব্যক্তিরা জানান, শিশু পার্কের জায়গাটি প্রকৃত পক্ষে গণপূর্ত বিভাগের। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে থেকেই সেখানে মহকুমা প্রশাসকের সরকারী বাসভবন ছিল এবং তারই উত্তর-পশ্চিম কোণায় প্রায় এক বিঘা জমির ওপর ৬০ বছরেরও বেশী সময় ধরে শিশু পার্কটি করা ছিল। ওই শিশু পার্কটি নাটোর পৌরসভার তত্বাবধানে পরিচালিত হতো। দীর্ঘদিন ওই পার্কে মুকুল ফৌজ নামে একটি জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন তাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করতো।

মাঠটি ছোট হওয়ায় ৭০ দশকের প্রথম দিকে তদানিন্ত মহকুমা প্রশাসক আমিন মিয়া চৌধুরী তাঁর বাসভবনের সাথে উত্তর দিকে থাকা কিছু জায়গায় শিশু পার্কের জন্য স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিলে সেই জায়গা টুকুও শিশু পার্কের ভিতরে ঘিরে নিয়ে মুকুল ফৌজের কার্যক্রম চালানো হতো। পার্কে শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য স্লিপার ও দোলনাসহ একটি সেড ছিল।

এরপর থেকে ওই পার্কটি শহরের শিশু-কিশোরদের একমাত্র খেলাধুলা ও বিনোদনের জায়গা হিসেবে ব্যহৃত হয়ে আসছিল। হঠাৎ করেই ঐতিহাসিক এই পার্কটি ভেঙ্গে সেখানে জেলা প্রশাসকের নতুন বাংলো তৈরির উদ্যোগ নেয়ায় শহরবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। #

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি মোঃ নাসিম উদ্দীন নাসিম।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.