নাটোরের সিংড়ায় ভুইফোড় সাংবাদিকের ছড়াছড়ি

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের সিংড়া উপজেলায় ভুইফোড় সাংবাদিকের ছড়াছড়ি। গলায় ভূইফোঁড় বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল ,অনলাইন টেলিভিশন বা সংবাদ এজেন্সীর কার্ড ঝুলিয়ে এবং গাড়িতে প্রেস লিখে চাঁদাবাজি ,জমি দখল, দোকানপাট দখল, থানায় দালালী, প্রতারণাসহ নানা অপকর্মে জড়িত হয়ে পড়ছে। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নিরীহ লোকজনকে নানাভাবে হয়রানি করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
দামি বেশভূষা, হাতে ক্যামেরা, বাহন হিসেবে মোটরসাইকেল বা প্রাইভেট কার, কোমরে গলায় কিংবা পকেটে ঝোলানো যেনতেন পত্রিকা বা অনলাইন নিউজ পোর্টাল বা অনলাইন টিভির পরিচয়পত্র, দেখে বোঝার উপায় নেই এরা প্রতারক বা চাঁদাবাজ। এরা সরাসরি প্রবেশ করছে সরকারি দপ্তরে। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সামনে চেয়ার নিয়ে বসে পড়ছে। থানায় যাচ্ছে, দালালি করছে। ব্যবসায়ী মহলকে বিপাকে ফেলে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
জানা যায়, যেখানে একটি পত্রিকা কিংবা টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমোদন নিতে পোড়াতে হচ্ছে বহু কাঠখড়। সেখানে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল তৈরী করতে মাত্র ২ থেকে ৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেই বনে যাচ্ছেন স¤পাদক, প্রকাশক কিংবা সাংবাদিক। সিংড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মটরসাইকেলে প্রেস লিখে সাংবাদিকের পরিচয় দিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন বেশ কিছু ভুয়া সাংবাদিক। এরা কারা? অনেকে দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকা,অনলাইন টিভি, নিউজ পোটাল আইডি কার্ড এবং বুম সংগ্রহ করে সাংবাদিকের পরিচয় দিয়ে বেড়াচ্ছেন। আসলে তারা কি সাংবাদিক না সাংঘাতিক? অনেক মহলের প্রশ্ন। অনেককে পুলিশ প্রশাসনের ছত্রছায়ায় দেখা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, একটি পরিচয়পত্রের মেয়াদ পার হওয়ার পর কম্পিউটারে ভুয়া আইডি কার্ড বানিয়ে সেখানে কার্ডের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছে এরাই আসল সাংবাদিক। এতে প্রকৃত সাংবাদিকদের মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। কেউ শিক্ষক, কেউবা বাসের হেলপার, আবার কেউ চাকরিজীবী, কেউ নৈশপ্রহরী। অনেকে ঠিকাদার ও ছোট ব্যবসায়ী। এরা সাংবাদিকের মান ক্ষুন্ন করে নিজেরা ফায়দা লুটতে ও নিজেকে সাংবাদিকের পরিচয় জাহির করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। তারা সমাজে ভাল মানুষ সেজে প্রভাব বিস্তার করতে চায়। এছাড়াও সিংড়ায় ব্যাঙের ছাতার মতো ভূইফোঁড় সাংবাদিকের ছড়াছড়ি হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এরা প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গ্রামে-গঞ্জে ও শহরে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলে নিজেরা ফায়দা লুটছে।
স্কুল শিক্ষক ফরমান আলী বিটিসি নিউজকে জানান, সিংড়া উপজেলায় যত সাংবাদিক আছে পুরো জেলায় তত সাংবাদিক নেই । এ ভূইফোঁড় সাংবাদিকরা আবার আলাদা ভাবে প্রেসক্লাবও খুলে ফেলেছে ।
নাম সর্বস্ব নিউজ পোর্টালের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ সময়ের দাবীতে পরিণত হয়েছে। টাকার বিনিময়ে ৮ম শ্রেণী-একাদশ শ্রেণীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও বনে যাচ্ছেন সম্পাদক ও প্রকাশক। তাদের বেশীর ভাগই ১৮-২২ বছরের। টাকার বিনিময়ে দেয়া হচ্ছে অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রেসকার্ড। অনেকেই আবার নিজের স্বাক্ষরিত কার্ডে নিজেই স¤পাদক প্রকাশক, স্টাফ রিপোর্টার কিংবা জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি’র কার্ড ব্যবহার করছেন। যার ফলে জেলার সংবাদিকতায় বাড়ছে কপি পেস্টের ব্যবহার। এসব অপসাংবাদিকতা বন্ধ করতে জেলা প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে ওই সাংবাদিক পরিচয় বহনকারী ভুঁইফোঁড় সাংবাদিকরা স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কয়েকজন ব্যক্তির সাথে সখ্য গড়ে তুলে দালালিপনা করতে দেখা যায়। এ ব্যাপারে বিভিন্ন মহল ভুয়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.