নাটোরের লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত বড়াল নদীতে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন


নাটোর প্রতিনিধি: বালু উত্তোলনের মহোৎসব। খোদ বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদ কার্যালয় সংলগ্ন ইউএনও পার্ক এলাকা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত ৫ স্থানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

এছাড়া বাঁশবাড়িয়া এলাকায় আরও একটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এসব অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক হওয়ায় প্রতিবাদ করার সাহস করছেনা কেউ।

এদের কেউ কেউ স্থানীয় সংসদ সদস্যের নিকটাÍীয় পরিচয় দিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে নির্বিঘে এ অপকর্ম করে যাচ্ছে। বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলনের কারনে আবাদি জমি, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতিসহ নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা

নদী অথবা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও নিষেধাজ্ঞার পরোয়া করছে না এসব প্রভাবশালী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতরা হলেন সরকারী দলের সমর্থক ভুলু, মানিক, আলম, রানা, পাইলট, মহন ও আফ্রিদি। এরমধ্যে একজন স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের নিকটাÍীয় হিসেবে পরিচিত হওয়ায় কেউ বাধা দিতে সাহস পাননা।

ভুক্তভোগীরা বিটিসি নিউজকে জানান, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারনে ইউএনও পার্ক সংলগ্ন রেলওয়ে ব্রীজ সহ ২টি ও জয়ন্তীপুরের ব্রীজ হুমকির মুখে পড়েছে। অবৈধভাবে ড্রেজার মেসিন বসিয়ে বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলন করায় নদীর দু’পারের আবাদি জমি, বাগান ও বসতবাড়ি ভেঙে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন বাঁশবাড়িয়া, ধুপইল, শোভ, চিমনাপুর ও জয়ন্তীপুর গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ।

বালু উত্তোলনকারীরা সরকারী দলের প্রভাবশালী সদস্য হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে কোন অভিযোগ করার সাহস করেনা কেউ। তবে বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে মৌখিকভাবে একাধিকবার জানানো হয়েছে বলে জানান তারা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে নদীতে প্রকাশ্যে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হলেও প্রশাসনের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। সেতু,কালভার্ট, ড্যাম, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা নদী অথবা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও নিষেধাজ্ঞার পরোয়া করছে না এসব প্রভাবশালীরা।

স্থানীয় সংসদ সদস্য শহীদুল ইসলাম বকুলের নিকটাÍীয় পরিচয়দানকারী আফ্রিদির সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তারা কার কাছে অনুমতি নিয়ে বালু উত্তোলন করছেন, জানতে চাইলে তিনি জবাব এড়িয়ে বলেন, জেলার এক সাংবাদিকের সাথে বালু উত্তোলনের ব্যাপারে কথা হয়েছে। এছাড়া বালু উত্তোলনের বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে।

বাগাতিপাড়া ইউএনও’র দায়িত্বে থাকা লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে বানীন দ্যুতি বিটিসি নিউজকে বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়টি তিনি জানেন না। সরেজমিন গিয়ে প্রমাণ মিললে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার কথা বলেন তিনি।

স্থানীয় সংসদ সদস্য শহীদুল ইসলাম বকুল বিটিসি নিউজকে বলেন, বালু উত্তোলনের সাথে তার কোন আত্নীয় জড়িত থাকার বিষয়টি সঠিক নয়। তবে দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ কেউ জড়িত থাকতে পারে। যদি কারো বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া যায় তবে স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বিটিসি নিউজকে বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়টি জানার পর ইউএনওকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.