নাটোরের লালপুরে পাওয়ার ক্রাশার বন্ধে মাঠে নেমেছে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল

নাটোর প্রতিনিধি:  নাটোরের লালপুর উপজেলার নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল এলাকায় পাওয়ার ক্রাশারে (যন্ত্রচালিত আখ মাড়াই কল) আখ মাড়াই বন্ধে ২০১৯-২০ আখ মাড়াই মৌসুম শুরুর আগেই মাঠে নেমেছে সুগার মিল প্রশাসন। তারা সভা সমাবেশ ছাড়াও নানা ভাবে আখচাষীদের সাথে মতবিনিময় করে চলেছেন। মিল প্রশাসন বলছে চলতি মৌসুমে মিল জোন এলাকায় পর্যাপ্ত আখ রয়েছে। প্রতি বছরের ন্যায় অসাধু ব্যবসায়ীরা যদি অবৈধভাবে পাওয়ার ক্রাশারে আখ মাড়াই শুরু করে তবে মিলটির আখ মাড়াই লক্ষ্যমাত্রা ব্যহত হবে।

নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল সূত্রে জানা যায়, মিলের নিজস্ব খামারে উৎপাদিত আখসহ এ বছর মিল জোনে মিলের কৃষি খামারসহ ২৪ হাজার একর জমিতে আখের আবাদ হয়েছে। চলতি ২০১৯-২০ আখ মাড়াই মৌসুমে দুই লাখ ৯৬ হাজার মে.টন আখ মাড়াই করে ২৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। নভেম্বরের শুরুতেই সুগার মিলে আখ মাড়াই শুরু হবে। কাঙ্খিত আখ না পেলে মিলটিতে লোকসান অবধারিত।

নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আনোয়ার হোসেন বিটিসি নিউজকে জানান, যন্ত্রচালিত আখ মাড়াই কলে আখ মাড়ায়ের ফলে চিনিকল লক্ষমাত্রা অর্জনে ব্যার্থ হয়। ফলে লোকসান গুনতে হয়। আর অবৈধ মাড়াই কলে আখ মাড়াই করে উৎপাদিত গুড় দিয়ে তৈরী করা হয় ভেজাল গুড় যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এতে একদিকে যেমন চিনি শিল্প ধংসের পথে যাচ্ছে অপর দিকে দেশের মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুকির মধ্যে পড়ছে।

মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল কাদের বিটিসি নিউজকে জানান, চাষীদের কাছ থেকে ক্রয়কৃত আখের মূল্য সময়মত পরিশোধসহ আখচাষীদের সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোথাও কোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এব্যাপরে সচেতনতা সৃষ্ঠির লক্ষে আখচাষীদের নিয়ে সভা সমাবেশ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) চেয়ারম্যান অজিত কুমার পাল বিটিসি নিউজকে জানান, চাষীর কাছ থেকে আখ ক্রয়ের সাথে সাথেই আখের মূল্য পরিশোধ করা হবে। আখের মূল্য বকেয়া থাকবে না। যাতে চাষীরা তাদের আখ সুগার মিলে সরবরাহ করেন। তিনি জানান, চিনিশিল্পকে লাভ জনক করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। চিনিকলে পর্যাপ্ত আখ প্রাপ্তি নিশ্চত হলেই কেবল সেগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব।

উপজেলা চেয়ারম্যানও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসাহাক আলী কৃষকদের উদ্দেশ্যে বিটিসি নিউজকে বলেন, চিনিশিল্প টিকিয়ে রাখার স্বার্থে চিনিকলে আখ সরবরাহ করতে হবে। চিনিকল না থাকলে আখ চাষও বন্ধ হয়ে যাবে। তখন আর পাওয়ার ক্রাশার মালিকরা আখ কিনবে না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানীন দূতি বিটিসি নিউজকে জানান, মিল জোনে অবৈধ পাওয়ার ক্রাশার চলতে দেওয়া হবে না। চাষীরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্য তাদেরকে আগে থেকেই সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে মিল এলাকায় পাওয়ার ক্রাশারে আখমাড়াই, গুড় তৈরী ও গুড় পরিবহন বন্ধে প্রচারণা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। নাটোর জেলা প্রশাসক শাহ রিয়াজ স্বাক্ষরিত প্রচারপত্রে বলা হয় সরকারের ২৯ জুলাই প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন এস.আরও নং ২৫০/২০১৯ অনুযায়ী ১ জুলই শেকে ৩১ মে পর্যন্ত মিল জোন এলাকায় শক্তিচালিত মাড়াইকলে আখ মাড়াই শাস্তি যোগ্য অপরাধ।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.