নাটোরের লালপুরে জাল সনদে ১৯ বছর শিক্ষকতা

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের লালপুরে মো. সানোয়ার হোসেন নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে জাল সনদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সনদ জালিয়াতির বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এলেও অজানা কারণে নেওয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা। ফলে গত প্রায় ১৯ বছর ধরেই জাল সনদ দিয়েই চাকরি করে আসছেন অভিযুক্ত এই শিক্ষক।
অভিযোগ রয়েছে, সানোয়ার হোসেন উপজেলার সালামপুর দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) হিসেবে কর্মরত আছেন। ভুয়া সনদ ব্যবহার করে প্রায় ১৯ বছর ধরে চাকরি করে সরকারি খাত থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কম্পিউটার প্রশিক্ষণের ভুয়া সনদে বছরের পর বছর ধরে চাকরি করা শিক্ষক সানোয়ারের সনদ জালিয়াতির বিষয়টি আলোচনায় আসে গত ৩ মাস আগে। এনিয়ে গত ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর ওই শিক্ষক সনদ যাচাইয়ে নাটোর জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর আবেদন করেন ওই মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম। পরে জেশিঅ/নাট/২০২২/১৯১৭ জেলা শিক্ষা অফিসের স্মারক নম্বরের চিঠির প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমী (নেকটার) উপ পরিচালক মুহাম্মদ মাহমুদুর রহমান স্বাক্ষরিত ৫৭.২১০০০০.০০৭. ৩৬.০০২.২৩.৬ স্মারক নম্বরে সানেয়ার হোসেন নামে ওই শিক্ষকের সনদ জাল ও ভুয়া জানিয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দেয়।
নেকটার ওই চিঠি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সালামপুর দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মো. সানোয়ার হোসেন, বাবার নাম মো. আব্দুল কাদের। তার সনদ নম্বর- ২৩৪০৫৬ ও রেজিষ্ট্রেশন নম্বর- ১১০০২৫। সনদপত্র যাচাই কমিটি অত্র সনদপত্রটি নেকটার (সাবেক নট্রামস) কতৃক ইস্যুকৃত নয় এবং সনদ পত্রটি জাল ও ভুয়া বলে উল্লেখ করে।
এবিষয়ে মাদ্রাসাটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই বাচাইয়ের জন্য সকল শিক্ষকের কাগজপত্র চাওয়া হলে তিনি তার কাগজপত্র দেন নি। বিষয়টি সন্দেহ হলে জেলা শিক্ষা অফিসের তার সনদ যাচাই বাচাইয়ের জন্য আবেদন করি। পরে তারা যাচাই বাচাই করে জানায় ওই শিক্ষক দীর্ঘ দিন ধরে জালায়াতি করে চাকরি করে আসছেন। এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হবে।
আর মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মহির উদ্দিন বিটিসি নিউজকে বলেন, জেলা শিক্ষা অফিস সনদ যাচাই করলে সানোয়ার হোসেনের সনদ জাল বলে জানা যায়। বিষয়টি অবগত হয়েছি। এবিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত শিক্ষক সানোয়ার হোসেন বিটিসি নিউজকে বলেন, আমার সনদ ভূয়া এই মর্মে অফিসিয়ালি আমাকে কিছু জানানো হয় নি। ২০০৩ সালে আমার নিয়োগ হয়েছে, এমপিও ২০০৪ সালে। এরপরে ২০০৭ সালে ও ২০১৯ সালে মন্ত্রণালয় থেকে অডিটে এসেছে, আমার সনদ ভুয়া বা জাল হলে তখনি তারা আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতো। এখন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
নাটোর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আখতার হোসেন বিটিসি নিউজকে বলেন, এবিষয়ে কোন অভিযোগ পাই নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.