নাটোরের লালপুরে এক রাতে ফুটলো রাতের রাণী ‘নাইট কুইন’

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের লালপুরে একটি গাছে এক সঙ্গে তিনটি রাতের নারী “নাইট কুইন” ফুল ফুটেছে। সারা বিশ্বে রাতের রানী হিসেবে পরিচিত ‘নাইট কুইন’ ফুল। আমাদের দেশে দুর্লভ প্রজাতির ফুল হিসেবেই গণ্য করা হয় ‘নাইট কুইন’কে।
মিষ্টি মনোহারিণী সুবাস, দুধসাদা রঙ, স্নিগ্ধ ও পবিত্র পাপড়ি আর সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবেই পরিচিত ‘নাইট কুইন’
‘নাইট কুইন’ যে রাতে নিজেকে মেলে ধরে প্রকৃতির কাছে,সে রাতেই আবার ঝরে পড়ে। তাও আবার একটি ফুলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় বছরের পর বছর।
গতকাল বৃহস্পতিবার (০৭ অক্টোবর) গভীর রাতে দুর্লভ এই ফুলটিরই দেখা মিলে লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া গ্রামে সাংবাদিক আশিকুর রহমান টুটুল এর ফুল বাগানে। উদ্ভাসিত হলো বহু আরাধ্যের ’নাইট কুই ‘। ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি অপেক্ষায় ছিলেন একটি ফুলের জন্য। বেশ কয়েক বার কলি এসেও ফুল ফোটার আগেই ঝরে পড়ে গেছে। কিন্তু এবার আর ‘রাতের রানী’ হতাশ করেননি তাকে। একটি গাছে এক সঙ্গে ৩টি রাতের রানীর দেখা মিলেছে।
আশিকুর রহমান টুটুল লালপুর প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সামাজিক সংগঠন ওয়ালিয়া তরুণ সমাজের সভাপতি। আশিকুর রহমান টুটুল বিটিসি নিউজকে জানান, ‘৪ বছর আগে একটি বাড়ি থেকেনাইট কুইনের একটি পাতা এনে টবে লাগিয়েছিলেন তিনি। নিবিরযত্নে গছটি বড় হয়ে মাঝে কয়েকবার কলি এলেও ফুল ফুটেনি। ৪টি বছর ধরে অপেক্ষার পরে গত জুলই মাসে প্রথম একটি গাছে এক সঙ্গে তিনটি ফুল ফুটে। তিন মাসের ব্যবধানে আজ রাতে আরো তিনটি ফুল ফুটেছে।
তিনি আরো বলেন, ‘বিকেল থেকেই গাছে কলি তিনটি অদ্ভুত সুন্দর রূপে সাজে। যেন বুজে থাকা পদ্ম ফুল। ফুল ফোটা থেকে বুজে যাওয়া পর্যন্ত প্রতিটি ধাপই রাত জেগে উপভোগ করেছি। আমি ছোট থেকেই ফুল পছন্দকরি। তবে পরিবারের সবাই মিলে মিষ্টি সুবাসের রাতের অতিথিকে উপভোগ করেছি। ফুলের মিষ্টি গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবেশিরা রাতের রানীকে একবার দেখার জন্য ছুটে আসে তার বাসায়। তিন মাসের ব্যবধানে এক সঙ্গে তিনিটি ফুল ফোটায় তার পরিবার অত্যন্ত আনন্দিত।
’জানা গেছে, বহু আরাধ্য ও অপেক্ষার পর দেখা দেয় বলেই হয়তো নাইট কুইনকে সৌভাগ্যের প্রতীকও বলা হয়। তবে সৌভাগ্য আর কাহিনী ছাপিয়ে ফুলটির অপার সৌন্দর্যই একে ‘রানী’ উপাধি দিয়েছে। পাথর কুচির মতো পাতা থেকেই এ ফুল গাছের জন্ম হয়। আবার পাতা থেকেই প্রস্ফুটিত হয় ফুলের গুটি।
নাইট কুইনের বৈজ্ঞানিক নাম পেনিওসিরাস গ্রেজ্জি। বিরল ক্যাকটাস জাতীয় এ ফুলটির বৈশিষ্ট্য অন্যান্য ফুলের তুলনায় একটু আলাদা। ফুলটির আদিনিবাস আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চালে এবং মেক্সিকোতে। দেখতে অনেকটা পদ্ম ফুলের মতো, সাদা রং ও মিষ্টি গন্ধ যুক্ত। বছরের মাত্র একদিনে এবং মধ্যরাতে পূর্ণ বিকশিত হয়। আর শেষ রাতেই জীবনাবসান ঘটে।
১৫ দিন পর গুটি থেকে কলি হয়। যে রাতে ফুলটি ফুটবে, সেই বিকেল থেকেই কলিটি অদ্ভুত সুন্দর রূপে সাজে। যেন বুজে থাকা পদ্মফুল। ধীরে ধীরে অন্ধকার যখন চারপাশকে ঘিরে ধরে, ঠিক তখনই নিজের সৌন্দর্যে স্বমহিমায় প্রকাশিত হয় নাইট কুইন। এর সুবাসে তীব্রতা না থাকলেও অদ্ভুত মিষ্টি এক মোহ আছে, যাপুষ্প প্রেমীদের সব সময়ই টানে। সারা দুনিয়ায় নাইট কুইন নিয়েনানা কাহিনী আছে।
ফুল দেখতে আসা ওয়ালিয়া তরুণ সমাজের কোষাধক্ষ্য আজিবর রহমান তার অভিমত ব্যক্ত করে বিটিসি নিউজকে বলেন,‘আমি জীবনে অনেক বার নাইট কুইনের নাম শুনেছি আজ বাস্তবে দেখলাম, তার অপরূপ সৌন্দর্য দেখে আমি বিমোহিত।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.