নাটোরের লালপুরে অসহনীয় লোডশেডিং, দুর্বিসহ জনজীবন

নাটোর প্রতিনিধি: দেশের সবচেয়ে উষ্ণতম উপজেলা নাটোরের লালপুরে ভ্যাপসা গরম আর অসহনীয় লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। দেড়ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের পর এক ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ পাচ্ছেন গ্রাহকরা।
অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ১৪-১৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকায় মানুষের চরম ভোগান্তি এবং জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে।
এ দিকে, চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ।
স্থানীয়রা জানায়, দিন-রাত সমানতালে লোডশেডিং হচ্ছে। ফলে শিশু-বৃদ্ধসহ বাড়িতে থাকা অসুস্থ মানুষজনকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। খাবার পানি, রান্নাসহ ঘরের আনুষঙ্গিক কাজ করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গৃহিণীরা। রাতেও বিদ্যুতের একই অবস্থা হওয়ার কারণে ভোগান্তি আরও বেড়ে গেছে। গ্রাহকরা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষুব্ধ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এইচএসসি পরীক্ষার্থী আতিয়া ফেরদৌস রুবা বলেন, পরীক্ষার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি আছে। তীব্র গরম মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে পড়াশোনা করতে পারা যাচ্ছে না। ভ্যাপসা গরমে দিনে-রাতে ঠিকমতো বিশ্রাম ও ঘুম না হওয়ায় শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
লালপুর ইউনিয়ন পরিষদ ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা শাহজাহান আলী জানান, অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের জন্য জনগণকে ডিজিটাল সেন্টারের বিভিন্ন সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সেবা বঞ্চিত জনগণ ভোগান্তিতে পড়ছেন।
থানাপাড়া গ্রামের ভ্যানচালক মফিল উদ্দিন বলেন, দিনে রাতে কতবার যে বিদ্যুৎ গেছে তার হিসাব নেই। বিদ্যুৎ না থাকায় ভ্যানের ব্যাটারি চার্জ দিতে না পারায় ভাড়া খাটতে পারছেন না। ভ্যানের ওপর নির্ভরশীল তাই এখন সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়েছে।
নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর লালপুর জোনাল অফিস সূত্রে জানা যায়, বৃহম্পতিবার বেলা ১২ টায় চাহিদা ছিল ১৮ মেগাওয়াট। সেখানে বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র ৮ মেগাওয়াট। একইভাবে গত রাতে ২৩ মেগাওয়াটের স্থলে মিলছে মাত্র ১২। সংযোগপ্রাপ্ত ৭০ হাজার ৬০৯ জন গ্রাহকের সর্বোচ্চ চাহিদা প্রায় ২৬ মেগাওয়াট। জ্বালানি সংকট ও পাওয়ার প্লান্টের সমস্যার কারণে চাহিদার থেকে ৫০ শতাংশেরও কম বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে। তবে সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে।
নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, অতিরিক্ত গরমের কারণে চাহিদার চেয়ে উৎপাদন ও সরবরাহ কম থাকায় লোডশেডিং হচ্ছে।
নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বলেন, তিনি নিজেও একজন ভুক্তভোগী। ইতিমধ্যে চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন। শীঘ্রই সমস্যা থেকে উত্তোরনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.