নাটোরের বড়াইগ্রামে ১২ বছর শিকলে বন্দী থাকা সাইফুলের গল্প


নাটোর প্রতিনিধি: বাবার আদর পেতে বারবার পথের ধারে নির্জন বাগানে ছুটে যায় ১২ বছর বয়সী মেয়ে মীম খাতুন। ওখানেই চারটি মেহগনী গাছে পলিথিন মোড়ানো ১০ বর্গফুট জায়গা বাবাকে শেকল বন্দী করে রেখেছে পরিবারের সদস্যরা।
মায়ের কাছে মীম জানতে পেরেছে, ৩ মাসের গর্ভে যখন সে; তখন তার বাবা আকস্মিক মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। এতে কারণে-অকারণে বাড়ি-ঘর ভাংচুর সহ মানুষকে মারধর করতে উদ্যত হতো বাবা।
উপায় না দেখে গ্রাম প্রধানদের পরামর্শে বাধ্য হয়ে বাবাকে শেকল বন্দী করে রাখে পরিবারের সদস্যরা। এভাবে কেটে যায় ১২টি বছর। ঘটনাটি নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর এলাকার। ওই এলাকার মৃত ছামাদ সেখের একমাত্র ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৬)কে এখন শেকল বন্দী ‘সাইফুল পাগল’ বলেই চেনেন এলাকাবাসী।
সাইফুলের মা হেলেনা বেগম জানান, সাইফুলের বয়স যখন ১৮ মাস তখন তার বাবা মারা যায়। এরপর মানুষের বাড়িতে ঝি এর কাজ করে ও বিভিন্ন সময় ভিক্ষা করে ছেলেকে বড় করে সে। ছেলে বড় হওয়ার পর ভ্যান চালানো শুরু করলে আশা
প্রতিবেশী স্কুল শিক্ষক আলফুর রহমান বিটিসি নিউজকে জানান, সাইফুল মানসিক ভারসাম্যহীন এটা ঠিক। তবে উপযুক্ত চিকিৎসা করালে নিশ্চিত সে সুস্থ হবে।
তিনি আরও জানান, সাইফুলের দুই সন্তানই মেধাবী। সাইফুলের চিকিৎসাসহ দুই সন্তানের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে জেলা প্রশাসন বা বিত্তবানদের সহায়তা প্রয়োজন।
বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন বিটিসি নিউজকে জানান, যদি তাদের পরিবার থেকে আবেদন করে তাহলে তার জন্য একটি টয়লেট ও ছেলে মেয়ের পড়াশোনার বিষয়ে আমার সামর্থ অনুযায়ী সহযোগিতা করবো।
ইউএনও মোছা. মারিয়াম খাতুন বিটিসি নিউজকে জানান, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বিটিসি নিউজকে জানান, সাইফুলের চিকিৎসার ব্যাপারে ও অন্যান্য সহায়তা প্রদানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.