নাটোরের গুরুদাসপুরে বেড়গঙ্গারামপুর বটতলা হাটে প্রতিদিন বিক্রি হয় ৩ কোটি ২০ লাখ টাকার লিচু বিক্রি

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোর গুরুদাসপুরের লিচুর খ্যাতি দেশ জুড়ে। যা মেটাচ্ছে ফলপ্রেমিদের রসনা তৃপ্তি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার জেলা জুড়ে হয়েছে বা¤পার ফলন। এরই মধ্যে বাজারে এসেছে দেশী জাতের লিচু। মৌসুমের শুরুতে ভালো দাম পাচ্ছেন বাগানিরা। প্রতিদিনই লিচু কিনতে নাটোরের হাটগুলোতে আসছে দুর-দূরান্তের ব্যবসায়ীরা।বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে লিচুর বাগান। গাছে গাছে লাল টসটসে লিচু, সাথে মিষ্টি গন্ধ। কোন বাগানে মাদ্রাজি, চায়না, বোম্বে আবার কোনটিতে বেদেনা, কাঁঠালি, হাড়িয়াসহ দেশী জাতের সুমিষ্ট লিচু। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আকারে বড়, থোকা থোকা লিচুর ভারে গাছের ডাল নুইয়ে মাটি ছুঁইছুঁই অবস্থা। কৃষকরা বলছেন, বাম্পার ফলন হয়েছে।

নাটোরের গুরুদাসপুরে লাল টসটসে ও রসাল আগাম মোজাফফরপুরী জাতের লিচু বাজারে এসেছে। উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বেড়গঙ্গারামপুর বটতলায় বসেছে এ লিচু বিক্রির পাইকারি মোকাম। ১০ মে এ মৌসুমের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে বেচাবিক্রি শুরু হয়েছে। চলবে জুনের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত।

লিচু ব্যবসায়ী আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মেসার্স মোল্লা ফল ভান্ডারের মালিক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ২০০১ সাল থেকে এখানে বসছে লিচুর পাইকারি ও খুচরা মোকাম। কারণ মোকামটি সিংড়া ও বড়াইগ্রাম উপজেলার সীমান্ত এলাকায়। তা ছাড়া লিচুর উৎপাদনও হয় নাজিরপুর ইউনিয়ন এলাকায় বেশি।

বাগান থেকে আনা লিচু আড়তে স্তুৃপ করা হচ্ছে। এসব লিচু ছড়িয়ে পড়বে সারা দেশে। বাগান থেকে আনা লিচু আড়তে স্তুুপ করা হচ্ছে। এসব লিচু ছড়িয়ে পড়বে সারা দেশেব্যবসায়ীদের ভাষ্যমতে, আগাম ও অপেক্ষাকৃত সুমিষ্ট হওয়ায় এ লিচু কিনতে ভিড় জমে এ মোকামে। প্রতিদিন ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, নোয়াখালী, কুমিল্লা, বরিশাল, হবিগঞ্জসহ অভ্যন্তরীণ অনেক জেলার পাইকারেরা ট্রাক ভরে এই মোকাম থেকে লিচু কিনে নিয়ে যায়।

আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদকের তথ্যমতে, প্রতিদিন ৭০-৮০ ট্রাক লিচু এ মোকাম থেকে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। প্রতি ট্রাকে গড়ে দুই লাখ লিচু থাকে। প্রতিটি লিচুর গড় দাম ২ টাকা হিসেবে ৮০ ট্রাকে প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ টাকার লিচু বিক্রি হয়ে থাকে এই মোকামে।

গুরুদাসপুর উপজেলা ছাড়াও পাশের সিংড়া ও বড়াইগ্রাম উপজেলায় উৎপাদিত লিচুও আসে এ মোকামে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন, গুরুদাসপুরে ৫১০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

গতকাল রোববারবার মোকামে গিয়ে দেখা গেছে, আকার ও মানভেদে প্রতি ১ হাজার লিচু বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে গাছে গাছে ঝুলে থাকা পাকা-আধপাকা টসটসে লিচু ঝুলতে দেখা গেছে। এলাকার কমবেশি সব বাড়িতেই রয়েছে লিচুর গাছ।এলাকার পুরস্কারপ্রাপ্ত লিচুচাষি মো. আবদুস সালাম মোল্লা বলেন, এ বছর খরার কারণে লিচুর গায়ের রং জ্বলে গেছে। তবে আকার–আকৃতি ভালো হয়েছে।
নাটোরের বাজার ও আড়তগুলো। সেখানে ভিড় করছেন বিভিন্ন অঞ্চলের ফলের পাইকার ব্যবসায়ীরা। হেসে খেলে বেচাকেনা হচ্ছে এই হাট গুলোয়।

বাগানিরা বলছেন লিচুর মান ভালো হওয়ায় তাদের প্রত্যাশা বাণিজ্য হবে প্রায় দেড়শত কোটি টাকারও বেশি।

একজন ব্যবসায়ী বলেন, এখানে চাঁদাবাজি নাই একারণে এইখান থেকে ব্যবসা করে সবাই।

কৃষি অফিসের দেয়া তথ্য মতে চলতি বছর নাটোরে ৭৪৭ হেক্টর লিচুর বাগান থেকে ৬ হাজার টন লিচু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.