নাটোরের অর্ধশত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী নিমতলা দধি ও মিষ্টান্ন ভান্ডার বন্ধ হয়ে গেল !

নাটোর প্রতিনিধি:  নাটোর শহরের প্রাণকেন্দ্র নিমতলার অর্ধশত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহি পুরাতন নিমতলা দধি ও মিষ্টান্ন ভান্ডার বন্ধ হয়ে গেছে।

মামলা চলমান থাকা সত্বেও আজ শনিবার দুপুরে ওই প্রতিষ্ঠানের জিনিসপত্র সরিয়ে পাকা দেয়াল নির্মাণ করে প্রতিষ্ঠানটির দখল নেওয়া হয়।

দখলদার মো.এরশাদের দাবি তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের ভাইয়ের কাছ থেকে ওই জমি খরিদ করেছেন। দখল নয়,কেনা জমি বুঝ করে নিয়েছেন।

পুরাতন নিমতলা দধি ও মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক দুলাল পাল (৭২) বিটিসি নিউজকে জানান, মিষ্টান্ন ভান্ডারটির বয়স অর্ধশত বছরেরও বেশি। ঐতিহ্যবাহি এই দোকানটি তিনি নিজে ও তাঁর এক ছেলেকে নিয়ে পরিচালনা করে আসছেন।

দোকান ও আশে পাশের ১৩ শতাংশ ৬৭ লিং জমির মালিক তিনি ও তাঁর সহদর ননি গোপাল পাল। অর্ধেকের ওপর তাঁর দোকান ও বসতবাড়ি রয়েছে। বাঁকি অর্ধেক তাঁর ভাই ভোগদখল করতেন।

দুলাল পালের ছেলে আইনজীবী রনজিৎ পাল বিটিসি নিউজকে জানান, দখল সংক্রান্ত ঝামেলা থাকায় তাঁরা কাকার বিরুদ্ধে আদালতে বাটোয়ারা মামলা করেন। মামলায় স্থিতি অবস্থার আদেশ রয়েছে। তবুও তাঁর কাকা তাঁর অংশটুকু জনৈক প্রবাসী মো: এরশাদসহ তিনজনের কাছে বিক্রি করে দেন।

সে মোতাবেক তাঁরা পূর্ব-পশ্চিম লম্বা করে দখল নেন। পরে তাঁর দোকানটিও দখল করে নেওয়ার হুমকি দেন। প্রায় দুই বছর আগে একবার দখল করার উদ্যোগ নেওয়া হলে সরকারের একজন মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে দোকানটি রক্ষা পায়।

হঠাৎ করে শনিবার সকালে তাঁদেরকে নাটোর পৌরসভায় ডাকা হয় দখল ছেড়ে দেওয়ার জন্য। তাঁরা পৌরসভার মেয়রকে বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তির আবেদন জানান।

তবুও তাঁর ছোট ভাইকে সেখানে ডেকে নিয়ে সমঝতার কথা বলে সাক্ষর নেওয়া হয়। এর পর পরই দুপুর ১২টার কিছু পরে মো: এরশাদসহ শতাধিক লোকজন মিষ্টান্ন ভান্ডারে গিয়ে দোকানের মালামাল সরিয়ে ফেলেন এবং তড়িঘড়ি করে ইট বালু এনে দোকানের ভেতর পাকা দেয়াল নির্মাণ করে দোকানটি বন্ধ করে দেন। তাঁরা ভীত সন্ত্রস্ত।

এ সময় আইনজীবী পরিবারের এক নারী সদস্য বিটিসি নিউজকে জানান, তাঁরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন। তাঁরা চেয়েছিলেন আদালতের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান। আদালতের রায় তাঁদের বিপক্ষে গেলেও তাঁরা তার বিরুদ্ধে আপীলও করতেন না। তা আর হলো না।

নিমতলার অপর এক মিষ্টি বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিটিসি নিউজকে জানান, অর্ধশতবছরের এই মিষ্টির দোকানটি বন্ধ হওয়াতে তাঁরাও মনকষ্ট পেয়েছেন। ব্যবসায়ীক প্রতিযোগী হলেও ওই প্রতিষ্ঠানটি নাটোরের মিষ্টি ব্যবসার ইতিহাসের একটি অংশ। তাঁরা চেয়েছিলেন আইনের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি হউক।

নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী বিটিসি নিউজকে জানান, মো.এরশাদ টাকা দিয়ে ১০ বছর আগে জমি কিনেছেন। তিনি পৌরসভার কাছে দখল বুঝে নেওয়ার আবেদন করলে মানবিক কারণে উভয় পক্ষের সমঝতার মাধ্যমে সমাধান করে দেওয়া হয়েছে। দোকানের জমি একজন শরিক বিক্রি করে দিলে দোকান রক্ষা করা যাবে কি করে। আদালতে মামলা চলমান থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মামলার পক্ষরা সমঝোতা করলে তাতে তো সমস্যার কিছু থাকে না।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.