নাগেশ্বরীতে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে প্রাচীনতম কালীমন্দির, সংস্কারের উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে সংস্কারের অভাবে অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রাচীনতম কালীমন্দির। তবুও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় নাগেশ্বরী পৌরসভার পূর্ব সুখাতি মাস্টারপাড়া (কানিপাড়া) এলাকার পুরনো কালীমন্দিরটি বেহাল অবস্থায় রয়েছে। মরিচা ধরা চাল ও বারান্দার টিনে ফুটো হয়ে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সে ফুটো বেয়ে ঘরের মেঝেতে পানি ও কাদা জসে আছে। পুজা করার মতো পরিবেশও নেই। যেনো পরিত্যক্ত্য একটি মন্দির। এমনকী মাঠেও পানি জমে আছে। মাঠটিও যেনো গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায় মৃত জসমন্তর সেনের পূর্ব পুরুষরা বৃটিশ শাসন আমলে খরকুটো দিয়ে নির্মাণ করেন এই মন্দির। তখনকার দিন থেকেই খরকুটো দিয়ে তৈরি মন্দিরে পূজা করে আসছে সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজারও লোক। এভাবেই কয়েকযুগ অতিবাহিত হলেও এ মন্দিরে লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া।

এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও এ মন্দিরের সংস্কার না হওয়ায় অবহেলা আর অযত্নে পরে থাকার পর বর্তমান সময় থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে স্থানীয়দের সহযোগিতায় এলাকায় চাঁদা তুলে বাঁশ-খরের মন্দির ঘর ভেঙ্গে ইট দিয়ে কোনোরকমভাবে সংস্কার করলেও তা যেনো ব্যবহারের অনুপোযোগী।

বর্তমানে মন্দিরের ঘরের টিনের চাল অধিকাংশ যায়গায় শিলাবৃষ্টিতে ফুটো হয়ে গেছে। এতে করে বর্ষার সময় সেখানে পূজা-পার্বন করাও দায় হয়ে গেছে তাদের।

স্থানীয় ননী গোপাল সেন, সুশীল চন্দ্র সেন জানায়, তাদের ওই এলাকার সকল নারী-পুরুষ কালীপূজার সময় পুজা করেন। অথচ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হয়েও এটি সংস্কার করার উদ্যোগ নেয়নি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। তারা আরও জানায় ওই এলাকার অধিকাংশ হিন্দু পরিবার দরিদ্র হওয়ায় নিজস্ব খরচে সংস্কার করার সামর্থ্যও নেই তাদের।

মন্দির কমিটির সভাপতি অরুন কুমার সেন, সুবাস চন্দ্র সেন, সাধারণ সম্পাদক গনেশ চন্দ্র সেন, কোষাধ্যক্ষ প্রশান্ত কুমার সেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, বর্তমানে সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদা-পানির কারণে পূজা করা দুষ্কর হয়ে পড়ে। কালীমন্দিরের কাজ দূর্গামন্দিরে গিয়ে করতে হয়। মন্দিরটি সংস্কারের জন্য বিভিন্ন যায়গায় দেনদরবার করেও এটি সংস্কারে কেউ এগিয়ে আসছে না।

এ ব্যাপারে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উপজেলা শাখার সভাপতি মহেন্দ্রনাথ রায় বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অযত্ন অবহেলায় থাকুক তা আমরা চাই না। ব্যাক্তিগতভাবে আমি চাই সরকারী ভাবে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে কোনো বরাদ্দ দিয়ে এটি সংস্কার করা হয় যাতে হিন্দু সম্প্র্রদায়ের লোকজন ভালোভাবে পূজা-পার্বন পালন করতে পারেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, মন্দিরটি সংস্কারের জন্য পরবর্তী এডিপির বরাদ্দ আসলে সেখানে একটা বরাদ্দ দিয়ে সংস্কার করে দেয়া হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মো. হাফিজুর রহমান হৃদয়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.