না,গঞ্জের অগ্নিকাণ্ডে পুড়লো হবিগঞ্জের তুলি

হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: লকডাউনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সেজান জুস কারখানায় কাজ করতে গিয়েছিল অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তুলি আক্তার। ঙ্গে বড় বোন লিমাও। ঈদের আগেই দু’জনের বাড়ি ফেরার কথা। কিন্তু তা আর হলো না।

কারাখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড থেকে বড় বোন রক্ষা পেলেও এখনও নিখোঁজ ছোট বোন। তুলি ও লিমা হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার ভাদিকারা গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে। লেখাপড়া করতো উপজেলার কালাউক উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে, আর লিমা লাখাই মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে।

তাদের বড় বোন হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজে অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী জুহি আক্তার বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদক জানান, সংসারে অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা আছে। এজন্য লকডাউনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে দুই বোন মিলে অর্থ উপার্জনের জন্য কাজে গিয়েছিল। তুলি গত ৩০ জুন স্কুলে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিয়ে ওইদিনই কর্মস্থলে যায়। কোরবানি ঈদের আগেই তাদের বাড়ি ফেরার কথা ছিল।

তিনি বলেন, সেজান জুস কারখানায় অগ্নিকাণ্ড শুরু হলে লিমা নিচতলায় থাকায় বেরিয়ে আসতে পেরেছে। কিন্তু তুলি চতুর্থ তলায় ছিল। শুক্রবার দিনগত রাত পৌনে বারোটা পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

এরপর থেকে তাদের মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন পরিবারের অন্য সদস্যরা।

নিখোঁজ তুলির বাবা আব্দুল মান্নান বিটিসি নিউজকে বলেন, আমার ৬ মেয়ে ও ২ ছেলে। এদের মধ্যে তুলি ৫ নম্বর। সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে গিয়ে আমার মেয়ের উচ্চ শিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন পুড়ে গেছে আগুনে। একথা বলতে বলতে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি সরকারি সহযোগিতাও কামনা করেছেন।

অগ্নিকাণ্ড থেকে বেঁচে ফেরা লিমার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, একসঙ্গে কাজ করতে গিয়েছিলাম। আমার বোন চারতলায় আর আমি নিচতলায় কাজ করতাম। ভাবিনি একসঙ্গে কাজে গিয়ে বোনকে হারিয়ে একা ফিরবো।

কর্ণগোপ এলাকায় সেজান জুস কারখানায় প্রায় সাত হাজার শ্রমিক কাজ করেন। সাততলা ভবনে থাকা কারখানাটির নিচ তলার একটি ফ্লোরের কার্টন থেকে হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এক পর্যায়ে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় কালো ধোঁয়ায় কারখানাটি অন্ধকার হয়ে যায়। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা ছোটাছুটি করতে শুরু করে। কেউ কেউ ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। আবার কেউ কেউ ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়তে শুরু করেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর হবিগঞ্জ প্রতিনিধি মোঃ জুনাইদ চৌধুরী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.