নওগাঁ-৬ আসনের সাংসদ ইসরাফিল আলমের মৃত্যুতে উপ-নির্বাচন’ ডজনেরও বেশী মনোনয়ন প্রত্যাশী

বিশেষ প্রতিনিধি: নওগাঁর-৬ (রাণীনগর-আত্রাই) আসনের সাংসদ ইসরাফিল আলম চলতি বছরের গত ২৭ জুলাই মৃত্যু বরণ করেন। তার মৃত্যুর পর এ আসনে উপ-নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংসদ মনোনয়ন প্রত্যাশী ডজনেরও বেশী নাম শোনা যাচ্ছে। এদিকে কেন্দ্রের নির্দেশনার দিকে তাকিয়ে সাড়া পাবার অপেক্ষায় রয়েছেনে বিএনপি। এছাড়া জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নামও শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন মাধ্যমে।
ইতোমধ্যেই মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মাঠ পর্যায়ে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন। তারা নির্বাচনী মাঠ দখল এবং মনোনয়ন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পোস্টার ব্যানার লাগানোসহ বিভিন্ন সভা-সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল ও মতবিনিময় করছেন। তবে কেন্দ্র থেকে এখনো সাড়া পাননি বিএনপি। এমন তথ্য বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীদের সূত্র থেকে জানা গেছে। এদিকে এই উপ-নির্বাচনের সময় কোন ধরনের প্রাণহানী চাননা এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজন বলেও মনে করছেন সচেতন মহল।
দু’টি উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নওগাঁ-৬ আসনে বড় ২টি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ১৬ হাজার ৮৮৬ জনের মতো।
ইতি পূর্বের বিভিন্ন নির্বাচন থেকে জানা যায়, ১৯৯১ ও ৯৬ সালে বিএনপি থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীর। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক সাংসদ মুক্তিযোদ্ধা ওহিদুর রহমান। ২০০১ ও ২০০৬ সালে পুনরায় আলমগীর কবীর বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন প্রয়াত ইসরাফিল আলম। ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষের দিকে আলমগীর কবির এলডিপিতে যোগ দেন। একই বছরে এলডিপি থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন ইসরাফিল আলম। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীরের ছোট ভাই বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বুলু। এরপর ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীরকে পরাজিত করে আবারো বিজয়ী হন ইসরাফিল আলম। এরপর থেকে আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে এই আসনটি।
এবারের উপ-নির্বাচনকে ঘিরে নওগাঁ-৬ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে প্রয়াত এমপি ইসরাফিল আলমের সহধর্মীনি সুলতানা পারভিন বিউটি, নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক সাংসদ শাহীন মনোয়ারা হক, রাণীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও রাণীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন হেলাল, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি নাছিম আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক সুমন, নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য রাণীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র উপদেষ্টা আব্দুর রহমান, রাণীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আসাদুজ্জামান নূরুল, জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক পীযূষ কুমার সরকার, আত্রাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নহিদ ইসলাম বিপ্লব, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক শেখ রফিকুল ইসলাম, জেলা যুবলীগের সভাপতি খোদা’দাদ খাঁন পিটু, সাধারণ সম্পাদক বিমান কুমার রায়, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন উপ-কমিটির সদস্য জাহেদুল হক জাহিদ, অবসরপ্রাপ্ত মেজর আব্দুল জলিলসহ আরো অনেকের নামে শোনা যাচ্ছে।
এছাড়াও জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন রাণীনগর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি কাজী গোলাম কবির ও আত্রাই উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেসের নাম শোনা যাচ্ছে।
অপরদিকে, এ পর্যন্ত কেন্দ্র থেকে সাড়া না পাওয়ায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র পক্ষ থেকে উপ-নির্বাচনের লক্ষ্যে কোন প্রকার আনুষ্ঠানিকতায় অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.