ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি: দূর্গম যমুনার নদীর বন্যা কবলিত মানুষের দূর্ভোগ লাঘবে জানমাল রক্ষার্থে জামালপুরের ইসলামপুরে নির্মিত হচ্ছে মাটির কিল্লা। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে সারা দেশে কিল্লাগুলো নির্মিত হয়। সে সময় এগুলো ‘মুজিব কিল্লা’ নামে পরিচিতি পায়।
সম্প্রতি এ সব কিল্লার সংস্কার ও উন্নয়ন শুরু করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। তারই অংশ হিসেবে জামালপুরের ইসলামপুরে কুলকান্দি হেদায়েতিয়া আলিম মাদরাসা ও চিনাডুলী আফরোজা ফরিদ সুরুজ্জামান টেকনিক্যাল কলেজ নামে নির্মিত হচ্ছে দুটি মুজিব কিল্লা।
জানাগেছে, প্রতি বছর যমুনার ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের ৬টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষকে দীর্ঘদিন পানিবন্দি থেকে জীবনধারণ করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে ওই লক্ষাধিক মানুষকে বন্যার পানিবন্দি দশা থেকে বাঁচানোর বড় চ্যালেঞ্জ। অকাল বন্যার পানি থেকে বাঁচার রক্ষা কবজ হরিণধার বাঁধটি ভাঙনে বিলিন হওয়ায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই যমুনা নদী থেকে বাঁধাহীন ভাবে নেমে আসা বন্যায় তলিয়ে যায় উপজেলার সদর ইউনিয়ন, পাথর্শী, কুলকান্দি, বেলগাছা, চিনাডুুলি ও নোয়ারপাড়া ইউনিয়ন সমুহের নিম্নাঞ্চলের হাজার হাজার একর ফসলি জমি।
আবার যমুনা নদীতে বন্যার পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করতেই ওই ৬টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ওই সময় পানিবন্দিদের ঘরে ঘরে বিশুদ্ধ পানি ও রান্নাকরা খাদ্যের তীব্র সঙ্কটসহ গো-খাদ্যেরও অভাব দেখা দেয়। পানিবন্দি অনেক শিশুদের পানিতে ডুবে মরার ঘটনা ঘটে। অনেকের মাঝেই পানিতে ডুবে মরার আতঙ্ক বিরাজ করে।
এ ছাড়াও বিগত দিনে যমুনার তীব্র ভাঙ্গনের ফলে উপজেলার কুলকান্দি,বেলগাছা,চিনাডুলী ও সাপধরী ও পার্থশী ইউনিয়নের বিরাট অংশ নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে হাজার হাজার পরিবার ভিটা বাড়ি হারিয়ে ভূমিহীন হয়ে পড়েছে। এ সব মানুষ মোরাদাবাদ বাঁধ, কুলকান্দি, ছড়াবাতা ও গুঠাইলে বিচ্ছিন্ন ভাবে বসবাস করে আসছেন। পাশাপাশি গরু ছাগল মহিষ ও হাঁস মুরগি কবুতরসহ বসবাস করতে প্রতিনিয়তই দূর্ভোগ পেহাতে হয়।
ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছস ও প্রাকৃতিক দূর্যোগে বিচ্ছিন্ন এসব মানুষের জান-মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।বন্যা কবলিত মানুষের দূর্ভোগ লাঘবে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব ফরিদুল হক খান এমপির ঐক্লান্তিক প্রচেষ্টায় নির্মিত হচ্ছে উপজেলায় দুটি মুজিবকিল্লা। মুজিব কিল্লায় বন্যা কবলিত মানুষ আশ্রয় সহ গরু,ছাগল,হাস মুরগি নিয়ে দুর্ভোগ লাঘব সহ আতঙ্ক বিহীন সাচ্ছন্দে আশ্রয় নিতে পারবে।
কুলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান জানান- মুজিবকিল্লা নির্মিত হচ্ছে এতে বন্যায় আক্রান্ত মানুষরা নির্বিঘেœ আশ্রয় নিতে পারবে। বন্যার তাদের দূর্ভোগ লাঘব হবে বলে আমি মনে করি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু বলেন, ‘চলমান মুজিবকিল্লার কাজ বাস্তবায়নে আমাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। প্রতিনিয়তই আমাদের তদারকি রয়েছে। মুজিবকিল্লায় প্রাকৃতিক দূর্যোগে মানুষের জীবন বাঁচাতে ও গবাদি পশু-পাখির আশ্রয়স্থল হিসাবে ভরসা পাবে নির্মানাধীন মুজিব কিল্লায়।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব ফরিদুল হক খান এমপি বলেন- আমার এলাকার যমুনা পাড়ের বন্যা কবলিত মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে কয়েকটি ফ্লাল্ড সেল্টার ও মুজিব কিল্লা নির্মাণ বরাদ্ধ দিয়েছেন। যাহার কাজ চলমান রয়েছে। বন্যায় দূর্গম চরের মানুষ,গবাদি পশু পাখি সহ মুজিব কিল্লা শতভাগ ব্যবহার করবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ পাবে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.