দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু পরিষদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার সংবাদ সম্মেলন

চট্টগ্রাম ব্যুরো: আগামি ৭ জানুয়ারী ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যোগ্য নেতৃত্ব বাছাইয়ে নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। এবারের নির্বাচন আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে একটি স্মার্ট, উন্নত, সমৃদ্ধ, ও পরাশক্তির প্রভাবমুক্ত সুখী বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথে ভিত্তিস্বরূপ। গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখার জন্য এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অথচ একটি মহল এই নির্বাচনকে বানচালের অথবা প্রশ্নবিদ্ধ করার মাধ্যমে অন্য কোন অপশক্তিকে ক্ষমতায় আনার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
বঙ্গবন্ধু পরিষদ, চট্টগ্রাম জেলা শাখা ভোটারদেরকে ভোটে অংশগ্রহণ করা জন্য এবং ভোট প্রতিহত করার যে অপচেষ্টা কিছু কিছু দল করছে তার বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করা এবং ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার সাহস যোগানোর জন্য গত ১৮ ডিসেম্বর তারিখ থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রচারনামূলক কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হল গত ১৫ বছরের উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও মর্যাদার লড়াইয়ে বাংলাদেশের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরার জন্য লিফলেট বিতরণ, পথসভা, সুধী সমাবেশ ও আলোচনা সভা উল্লেখযোগ্য। আজকের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তার কিছু নমুনা আপনাদের সামনে তুলে ধরার প্রয়াস পাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা বাংলায় গোলা ভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ থাকা সত্ত্বেও, শুধুমাত্র যোগ্য বাঙালি নেতৃত্বের অভাবে বাংলার জনগণ ছিল চিরবঞ্চিত, নিপীড়িত, শোষিত, নিগৃহীত ও পরাধীন। টুংগীপাড়ার খোকা ও বাঙালির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আশা আকাঙক্ষা ও ভরসার বাতিঘর হয়ে আত্মপ্রকাশ করলেন, জাগালেন ঘুমিয়ে থাকা বাঙালিকে, উদ্বুদ্ধ করলেন অধিকার আদায়ে, ঐক্যবদ্ধ করলেন স্বাধীনতার মন্ত্রে এবং স্বপ্ন দেখালেন সমৃদ্ধি ও মর্যাদার। সেই মহান নেতার ডাকে সারা দিয়ে নয় মাসের সংগ্রামে বাঙালি পেল স্বাধীনতা আর বিশ্ব পেল বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পরপরই মর্যাদাশীল বাংলাদেশ বিনির্মাণে দিলেন পরিপূর্ণ রূপরেখা। কিন্তু ১৯৭৫ সালে ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে থমকে যায় বাংলাদেশ ও বাঙালির স্বপ্ন। স্বাধীন বাঙালির সমৃদ্ধির আশা হতাশায় রূপান্তরিত হয়। মাঝিবিহীন নৌকায় কূলকিনারাহীন নদীতে ভাসতে থাকে সহজ সরল ও সাঁতার নাজানা বাঙালি। স্বৈরশাসন, সাম্প্রদায়িকতা, শোষণ, নির্যাতন ও নিপীড়নে অতিষ্ঠ জনগণ যখন বঙ্গবন্ধুর মত নেতৃত্বের স্বপ্নে সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনারত, তখনই আশার প্রতীক হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তারই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা জায়গা করে নিলেন জনগণের হৃদয়ে। তার মনণশীলতা, দূরদর্শিতা, জনগণের জন্য ভালোবাসা ও বাবার অপূর্ণ স্বপ্ন বাস্তবায়নে দৃঢ়তা বাংলাদেশের মানুষকে আবার স্বপ্ন দেখাতে শুরু করলেন। প্রথম পাঁচ বছরের শাসনে হয়ে উঠলেন বাংলাদেশের জনগণের নেতা এবং পরের ১৫ বছরে সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে হয়ে উঠলেন বিশ্ব নেতা।
জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৫ বছর বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। পদ্মাসেতু, মেট্রোরোল, বঙ্গবন্ধু টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, চট্টগ্রাম কক্সবাজার রেললাইন, শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ ইত্যাদি কতিপয় মেগা প্রকল্প শুধু বাংলাদেশের সক্ষমতাকেই প্রমাণ করে না পাশাপাশি দিচ্ছে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী অর্থনীতি ও সমাজ ব্যবস্থার হাতছানি। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও এই সরকারের ধারাবাহিকতা টেকসই উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির আগামীর পথে বাংলাদেশ আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে এবং নির্মিত হবে সোনার বাংলা।
দক্ষিণ এশিয়ার ২য় বৃহত্তম ও বিশ্বের ৩৩ তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে প্রত্যাশা এবং উন্নতির রোল মডেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ৭.২% প্রবৃদ্ধি ও প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার জিডিপির বাংলাদেশ আজ দ্রুত গতির উন্নত অর্থনীতির একটি দেশ। জাতীয় বাজেট বেড়ে হয়েছে ৭.৬২ লক্ষ কোটি টাকা যা ১৫ বছর আগে ছিল প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা। বিদেশি নির্ভরতা কাটিয়ে বাংলাদেশ সরকার আজ নিজেই বাজেট প্রণয়নে সক্ষম। ৮০ বিলিয়ন ১ ডলারের বাজেটে বিদেশি অনুদান মাত্র ২.২৩ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। সমৃদ্ধ বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিকল্পনার অগ্রভাগে রয়েছে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামকে ঘিরে সরকার গ্রহণ করেছেন মহাপরিকল্পনা।
বঙ্গোপসাগরের সুনীল জলরাশি ও এর সম্পদ ব্যবস্থাপনা: গভীর সমুদ্র বন্দরের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আমদানী-রপ্তানীর কেন্দ্র স্থাপন; মিরেশ্বরাই ও আনোয়ারায় অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ; পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ঘিরে পরিকল্পিত পর্যটন শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে অতি অল্প সময়ের মধ্যে বৃহত্তম চট্টগ্রাম হবে কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্র। মহাপরিকল্পনার পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন যোগ্য নেতৃত্ব। বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার দৃঢ়, সৎ, ও সাহসী নেতৃত্বের গুণে আজ এতসব পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। তার সরকারের ধারাবাহিকতাই কেবল পারে স্বপ্নের সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলার বাস্তবায়ন। আসুন গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখে উৎসব মুখর পরিবেশে ভোটের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে সমর্থনের মাধ্যমে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা: মুহাম্মদ আইয়ুবুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপিকা বেগম সৈয়দা তাহেরা, সহ সভাপতি ডা: দিলীপ দে,ইন্জিনিয়ার এনামুল বাকি, চবির অধ্যাপক ড. সজীব কুমার ঘোষ, অধ্যাপক ড. সুমন দে, অধ্যাপক মোরশেদুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মাহবুবুল আলম ডা: মাইনুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মো : রবিউল ইসলাম সহ অনেকে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান স. ম. জিয়াউর রহমান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.