দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)’র নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা

 

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দুর্নীতি, অপরাজনীতিমুক্ত সুশাসন প্রতিষ্ঠা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সুফিবাদ ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে, সুষম বণ্টনের মাধ্যমে বৈষম্যহীন, উন্নয়নমুলক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মিশন নিয়ে ইশতেহার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)।
আজ ৩ জানুয়ারি বুধবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক মিলনায়তনে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান শাহজাদা ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ইশতেহারটি পাঠ করেন।
ইশতেহারে মৌলিক অধিকার যেমন অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে অঙ্গীকার করা হয়। দেশের মানুষের খাদ্যের অধিকার নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ ভর্তুকি দেয়ার পাশাপাশি সিন্ডিকেট ভাঙ্গন ও ভেজালমুক্ত খাবারের নিশ্চয়তার বিষয় উঠে এসেছে। শিক্ষা ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাণিজ্য বন্ধ করে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো মানবিক ও অলাভজনক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার ব্যবস্থা নিবে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)।
এছাড়াও ইশতেহারের গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ন্যায় বিচার, মানবাধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির ওপর আলোকপাত করা হয়। দলটি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, মাদক, কালো টাকা, অর্থ পাচার, কালোবাজারী, অবৈধ মজুদদারী নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর।
এছাড়াও ইশতেহারটিতে আরো বলা হয়েছে, জনগণের ক্ষমতায়ণ নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী এবং নারীদের সমধিকার বাস্তবায়ন করা হবে। দেশীয় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদের ওপর রাষ্ট্রীয় মালিকানা নিশ্চিত করত প্রতিটি নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুতের চাহিদা নিশ্চিত করা হবে। শিল্প উন্নয়নের লক্ষ্যে বিপুল শ্রমশক্তি কাজে লাগাতে শ্রমঘন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পভিত্তিক শিল্প উন্নয়ন কৌশলের ওপর জোর দেয়া হবে।
সংবিধানের আলোকে এবং আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী শ্রমনীতি ও শ্রমিক কল্যাণে বহুমুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। দেশে যোগাযোগ-ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ, সুগম ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে সড়ক, রেল ও নৌপথের সম্প্রসারণ ও সংস্কার বাস্তবায়ন করা হবে। জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সুরক্ষায় দূরদৃষ্টি সম্পন্ন পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। উপকূলবর্তী এলাকায় ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে সর্বোচ্চ কম ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় উপকুলীয় নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরী এবং সাগর ও নদী মোহনায় জেগে উঠা নতুন চর স্থায়ী করার প্রয়োজনে পরিকল্পিত বনায়ন কার্যক্রম ও সবুজায়ন করার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদ্মা বহুমুখী বাধ, কালনী-কুশিয়ারা প্রকল্প ও উপকূলীয় বাধ পুনর্বাসন প্রকল্প চালু করা, ভারত থেকে বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত ৫৪টি আন্তর্জাতিক নদ-নদীর পানি প্রবাহ ও বণ্টনে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা এবং ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প ও টিপাইমুখ বাধ স্থগিত করতে কূটনৈতিক উদ্যোগ নেয়াসহ দক্ষিণ হিমালয় অঞ্চলে যৌথ পানি সম্পদ ব্যবহার, পরিবেশ প্রকৃতি ও জীব-জৈব রক্ষায় বহুমাত্রিক উদ্যোগ গ্রহণ করবে। নারী নির্যাতন, যৌতুক প্রথা, এসিড নিক্ষেপ, যৌন হয়রানি, ধর্ষণ, নারী ও শিশু পাচাররোধে কঠোর কার্যকর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং কর্মজীবী নারীদের শিশু পরিচর্যার জন্য শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র (চাইল্ড কেয়ার) গড়ে তোলা হবে। শিশু, যুবক, নারী ও প্রতিবন্ধীদের জীবন মান উন্নয়নসহ প্রবীণ নাগরিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণের বিষয়ে নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান সকল মুক্তিযোদ্ধাকে ‘রাষ্ট্রের সম্মানিত নাগরিক’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
এছাড়াও ক্রীড়া, সংস্কৃতি, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুর উন্নয়ন, পররাষ্ট্রনীতি এবং শান্তি ও সহাবস্থানের বিষয়ে বিভিন্ন অঙ্গীকার করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে এক পক্ষ বিশিষ্ট আইন সভা রয়েছে। প্রাদেশিক পরিষদ গঠন করে দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইন সভা গঠন এবং আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি চালু করা হবে। দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রীর পদে না থাকার বিধান থাকা; রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনা। বিরোধী দল হতে স্পিকার ও ন্যায়পাল নিয়োগের প্রস্তাবে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) সংকল্পবদ্ধ।
এ সময় বিএসপির কো চেয়ারম্যান এডভোকেট কাজী মহসীন, দপ্তর সম্পাদক শাহ মুহাম্মদ ইব্রাহিম সহ কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান স. ম. জিয়াউর রহমান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.