“দেশে প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা কেউ যদি থাকেন, তিনি খালেদা জিয়া”

ঢাকা প্রতিনিধি: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা উল্লেখ করে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘যে নেত্রী একজন গৃহবধূ ছিলেন। প্রথম জিয়াউর রহমান সাহেবের বিদ্রোহের পরে তাঁর স্ত্রী সেদিন যখন সোয়াত জাহাজের দিকে এগুচ্ছিলেন, তখন পাকিস্তানি কমান্ডার আমাদের অষ্টম বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডার সোহরাব হোসেন সেনাবাহিনীর সৈনিকদের নিরস্ত্র করবার চেষ্টা করছিল। সেই সময়ে কিন্তু খালেদা জিয়া প্রথম বলেছিলেন, তোমরা অস্ত্র সমর্পণ করবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না জিয়াউর রহমান ফিরে আসেন। এই দিয়ে তার শুরু।’
রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আজ শুক্রবার (২৫ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি সবসময় বলার চেষ্টা করেছি আপনাদেরকে যে, দেশে প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা কেউ যদি থাকেন, তিনি হচ্ছেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া। তাঁকে (খালেদা জিয়া) আজ মিথ্যা মামলায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। ৪০ বছর ধরে যিনি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করলেন, তাঁকে আজ এই সরকার আটক করে রেখেছে। অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না তারা।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমাদের দলের নেতা তারেক রহমান সাহেবও ওই সময় কিন্তু তাঁর ছোট ভাইসহ দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে বন্দি ছিলেন। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধের ওই ছোট মানুষটির অবদানও অস্বীকার করার উপায় নেই। এই নেতাকে আজকে দেশে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না। দেশে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটা চরমভাবে… এটাকে বলা হয় যে, বার্জিং। মানে রাজনীতিকে নির্মূল করে দেওয়া, বিএনপিকে নির্মূল করে দেওয়ার চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তিযুদ্ধ নয়, ‘এক ব্যক্তি’র জন্মশতবার্ষিকীকে সরকার প্রাধান্য দিয়েছে। এখানে অবস্থা দৃষ্টিতে তাই মনে হয়েছে। তারা (সরকার) কতগুলো প্রোগ্রামে স্বাধীনতার যুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধকে সামনে নিয়ে এসেছে। মুক্তিযুদ্ধে যারা সেদিন নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রবাসী সরকার, এমএজি ওসমানী সাহেব কয়বার তাদের নাম উচ্চারণ করা হয়েছে, সেক্টার কমান্ডারদের নাম কয়বার করা হয়েছে, তাজউদ্দিন সাহেবের (তাজউদ্দিন আহমেদ) নাম কয়বার উচ্চারণ করা হয়েছে। আপনারা নিজেরাই তো বুঝবেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ কোথায় গেল? এখানে তো একজন ব্যক্তির ব্যাপারটা এসে যাচ্ছে সামনে।’
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি হালকা করে বলি, আওয়ামী লীগের একটা ক্যামিস্ট্রি আছে যেটাকে বলা হয়, রসায়ন। রসায়নটা হচ্ছে কি যে, ফার্সিদের বলা হয় আনচু ডিজাবেস্ট মানে আমি ছাড়া আর কেউ নেই। এটাই সমস্যা তাদের।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা চতুর্দিক থেকে জাতিগতভাবে খুব বিপজ্জনক অবস্থায় পড়ে আছি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের যে লক্ষ্য ছিল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করা, সেটাই আজকে সবচেয়ে বিপদের সম্মুখীন হয়েছে। দেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। সারা বিশ্বে আমরা চিহ্নিত হয়েছি মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী একটি দেশ হিসেবে। দেশে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটা চরমভাবে এটাকে বলা হয় যে, বার্জিং মানে রাজনীতিকে নির্মূল করে দেওয়া, বিএনপিকে নির্মূল করে দেওয়ার চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করছে তারা (সরকার)।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও সদস্য সচিব আবদুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মোমাসুদ রানা খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.