দেশে একতরফা নির্বাচন করার জন্য সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়েছে : বুলবুল

 

বিএনপি প্রতিবেদকজিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ চার আসামিকে ৭ বছর করে সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এছাড়াও ট্রাস্টের নামে ঢাকা শহরে থাকা ৪২ কাঠা জমি রাষ্ট্রায়ত্ত করার আদেশ দেন আদালত। সেইসাথে সকালে জিয়া অর্ফানেজ ,মামলার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়েছে। এই ফরমায়েসি রায়ের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় মালোপাড়াস্থ্য বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে রাজশাহী মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সকাল ১০টা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত হতে থাকেন। এদিনও পুলিশ রাস্তার দুইপার্শে অবস্থান নেয়।

সমাবেশে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেটি শফিকুল হক মিলন সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। আরো উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু, রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সভাপতি শওকত আলী, মতিহার থানা বিএনপি’র সভাপতি আনসার আলী, জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলী, শাহ্ মখ্দুম থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু, মতিহার থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক ডিকেন, রাজপাড়া থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন, বোয়ালিয়া থানা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বজলুল হক মন্টু ও হাবিবুর রহমান বিপ্লব, মহানগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল হক রানা, জেলা যুবদলের সভাপতি মোজাদ্দেদ জামানী সুমন, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রিটন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হাসনাইন হিকোল, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম সমাপ্ত, মহানরগর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বাবলু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাকির হোসেন রিমন, মহানগর তাঁতী দলের সভাপতি আরিফুল শেখ বনি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবেদুর রেজা রিপন, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আল আমিন, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার রহমান ভূট্টো, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান উদ্দিন রাসু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারেক বীন খালেদ, মহানগর যুবদলের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মেরাজ।

আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম আহবায়ক এ্যাডভোকেট রওশন-আরা পপি, মুসলিমা বেলী, জরিনা ও গুলশান আরা মমতা, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান জনি, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম টুটুল, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রবি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকবার আলী জ্যাকি জেলা ছাত্রদলেল সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম কুসুমসহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহেযাগি সংগঠনের নেতাকর্মী। সমাবেশ পরিচালনা করেন মহানগর যুবদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বুলবুল বলেন, এই অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তার ক্ষমতা ধরে রাখতে আল্লাহর সহযোগিতা চায়না। চায় শয়তানের সহযোগিতা। কিন্তু এই শয়তান তাদের শেষ রক্ষা করতে পারবেনা। আগামী ৬ তারিখে রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ বেগম খালেদা জিয়াকে প্রধান অতিথি করে সমাবেশ করা হতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, সরকারের এই সাজানো রায়কে আর বিএনপি ভয় পায়না। বিগত ১২ বছর ধরে কোন ভয় পায়নি। সকল বাধা, নির্যাতন, মামলা, খুন, গুম উপেক্ষা ও সহ্য করে বিএনপি নেতাকর্মীরা মাঠে রয়েছে। আগামীতেও থাকবে। বর্তমান সরকারকে চাদাবাজ, দর্ণীতিবাজ ও লুটেরা আখ্যা দিয়ে বুলবুল আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে এর দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। সেইসাথে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট কি হবে তা বলা যাচ্ছেনা। বাংলাদেশের মানুষ এখন এই অবৈধ ও ফ্যাসিষ্ট সরকারের কবল থেকে মুক্তির আশায় প্রহর গুনছে। বিএনপি, ২০দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট বাংলাদেশের মানুষকে এই হায়নারুপি সরকারের কবল থেকে রক্ষা করবে।

বুলবুল আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা প্রদান এবং ষড়যন্ত্র করে বিদেশে পাঠানোর পাঁয়তারা সরকারের সফল হবে না। কারণ বেগম জিয়া এদেশে জন্মেছেন এবং এই দেশের উন্নয়ন, গণতন্ত্র রক্ষা ও মানুষের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নিজের জীবন বাজি রেখে আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশের কথা না ভেবে, দেশের জনগণকে বিপদে ফেলে শুধুমাত্র নিজের এবং পরিবারের জীবন বাঁচাতে বিগত তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দেশ ছেড়ে বিদেশে পারি দিয়ে ছিলেন। কিন্তু গণতন্ত্রের নেত্রী, তিনবারের সফল প্রদানমন্ত্রী দেশ মাতা বেগম খালেদা জিয়া কারো প্রলোভনে দেশ থেকে পালিয়ে যাননি। এরজন্য তাঁকে চরম মুল্য দিতে হচ্ছে। তাঁর ২ ছেলের মধ্যে একজনকে হারাতে হয়েছে। আরেকজন বিদেশের মাটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং নিজেও জেলে পড়ে আছেন। এই সরকারের কবল থেকে দেশকে, জাতিকে, গণতন্ত্রকে এবং বেগম খালেদা জিয়াকে রক্ষা করতে আন্দোলনের কোন বিকল্প নাই উল্লেখ করে আগামী ৬ তারিখের বিভাগীয় মহাসমাবেশ থেকে এই সরকারের পতনের আন্দোলনে সকল নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণকে রাজপথে নামার আহবান জানান। এছাড়াও আজকে বিকেল ৪টায় মনববন্ধনে উপস্থিত হওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের আহবান জানান বুলবুল। সেইসাথে সরকারের এই সাজানো রায় এবং সাজা প্রত্যাখান করেন তিনি।

সমাবেশে বিএনপি, যুবদল, সেচ্ছাসেবক দল , মহিলা দল ও ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বেগম জিয়ার সাজার তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানান। সেইসাথে বেগম জিয়ার মুক্তি, নিদর্লীয় নিরেপক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচন এবং তারেক জিয়াকে সাজানো মামলায় সাজা প্রদানের প্রতিবাদে কঠোর আন্দোলনে বিএনপি সাথে থেকে আন্দোলন করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

সভাপতির বক্তব্যে মিলন বলেন, বাংলাদেশের মানুষ নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন, স্বাধীন বিচার বিভাগ, সু-শ্বাসন ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়। আর আওয়ামী লীগ চায় যে কোন মুল্যে নিজেদের ক্ষমতা বাড়াতে। বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার নিজের ক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর মত নির্বাচন করতে চায়। ইতোমধ্যে সিটি কর্পোরেশনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি, রাতের অন্ধকারে পুলিশ, প্রশাসন ও ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ছেলেদের দিয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট কেটে বাক্স ভর্তি করেছে। এছাড়াও নির্বাচনের দিনও তারা পুলিশের সহায়তায় ভোট কেন্দ্র দখল করে নিজেদের প্রার্থীদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছে। কিন্তু আগামী সংসদ নির্বাচনে সেটা আর হতে দেওয়া হবেনা। এই সরকার সম্পূর্নভাবে নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য বেগম জিয়াকে গতকাল জিয়া অরফানেজ মামলায় সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে রায় প্রদান করেছে। এই রায় ও সাজা বিএনপি ও জনগণ মানেনা।

বেগম জিয়াকে যতই সাজা প্রদান করা বিএনপি আর কোন ভয় পায়না। আওয়ামী লীগ এখন আতঙ্কে রয়েছে। জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের সাথে আলোচনায় বসতে স্বেচ্ছায় রাজি হয়েছে। পালানোর পথ না পেয়ে এবং আগামী নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। এই সরকার সীমাহিন দুর্নীতি ও লুটতরাজ করেছে। এখন আবার বিদেশী প্রভুদের যে কোন মূল্যে সন্তোষ্ট করে ক্ষমতায় থাকার জন্য স্বপ্ন দেখছে। প্রভুদের সহায়তায় দেশে একটি পাতানো নির্বাচন করতে ব্যকুল হয়ে আছে। কিন্তু বেগম জিয়ার মুক্তি ছাড়া এদেশে সংসদ নির্বাচন কোনভাবেই হতে দেওয়া হবে না বলে তিনি ঘোষনা দেন। বাংলাদেশের মানুষ এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বীকার করেনা। শুদুমাত্র পুলিশ ও প্রশাসনের দম্ভে এই সরকার ক্ষমতায় টিকে আছে এবং প্রধানমন্ত্রী বলতে এবং মানতে বাধ্য করছে। তিনি পুলিশ ও প্রশাসনের সদস্যদের প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী এবং জনগণের সেবক উল্লেখ করে তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার পরামর্শ দেন। তিনি আরো বলেন, বিএনপি কখনো দমন, নিপিড়ন ও প্রতিহিংসার রাজনীতি করেনা। ক্ষমতায় গেলে কোন পুলিশ ও প্রশাসনের ব্যক্তিদের ক্ষতি করা হবেনা। আগামী ৬ নভেম্বর বিভাগীয় মহাসমাবেশ খেকে এই সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হবে। এই আন্দোলনে সবাইকে মাঠে নামার আহবান জানান মিলন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি )#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.