দেশব্যাপী বৈধ হলো ১৮ লক্ষ ভরি স্বর্ণ

ঢাকা প্রতিনিধি:  সরকারের দেওয়া সময়সীমা গত ৩০ জুন শেষ হয়েছে দেশব্যাপী অবৈধ স্বর্ণ বৈধ করার। এই সময়ে সারাদেশে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের হাতে থাকা ১৮ লক্ষ ভরি অবৈধ স্বর্ণ বৈধ হয়েছে।

প্রতি ভরি স্বর্ণ বৈধ করতে এক হাজার টাকা করে আয়কর পরিশোধ করতে হয়েছে। সেই হিসেবে ১৮ লক্ষ ভরি স্বর্ণ বৈধ হওয়ার মাধ্যমে সরকার ১৮০ কোটি টাকা আয়কর পেয়েছে। এর বাইরে ডায়মন্ড ও রুপা মিলিয়ে আরো তিন কোটি টাকা আয়কর পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে স্বর্ণ, ডায়মন্ড ও রুপা বৈধ করার মাধ্যমে সরকার ১৮৩ কোটি টাকা আয়কর পেয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ভরিতে এক হাজার টাকা কর দিয়ে চোরাই পথে আসাসহ সব ধরনের অবৈধ স্বর্ণ বৈধ করার সুযোগ দেয় এনবিআরের আয়কর বিভাগ। এছাড়া, প্রতি ক্যারেট ডায়মন্ড ৬ হাজার টাকা ও প্রতি ভরি রৌপ্য ৫০ টাকা কর দিয়ে বৈধ করা হয়েছে। আয়কর বিভাগ এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গত ৩০ জুন পর্যন্ত এ সুযোগ দেওয়া হয়। স্বর্ণ বৈধ করতে ব্যবসায়ীদের উত্সাহিত করতে এর মধ্যে ঢাকাসহ আটটি বিভাগীয় শহরে স্বর্ণ মেলারও আয়োজন করা হয়।

এনবিআর সদস্য কানন কুমার রায় বলেন, যে পরিমাণ স্বর্ণ বৈধ হয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। তবে আরও বেশি পরিমাণ স্বর্ণ বৈধ হবে বলে আমাদের প্রত্যাশা ছিল। আপাতত স্বর্ণ বৈধ করার সুযোগ দেওয়ার চিন্তা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, বৈধ স্বর্ণই এখন বিক্রি করা যাবে। এর বাইরে থাকা বাদবাকি স্বর্ণ অবৈধ হিসেবেই গণ্য হবে। ওইসব স্বর্ণ ধরা পড়লে তা আর আইনগতভাবে ফেরত পাওয়ার দাবি করতে পারবেন না ব্যবসায়ীরা।

সূত্র জানিয়েছে, বাসাবাড়িতে কিংবা ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহারের জন্য থাকা স্বর্ণ অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে না।

এই শর্ত প্রযোজ্য হবে ব্যবসায়ী, মহাজনদের কাছে মজুত থাকা স্বর্ণের ক্ষেত্রে।

স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) কাছে এখনো দেশব্যাপী স্বর্ণ বৈধ করার তথ্য আসেনি বলে জানান, সংগঠনটির সহ-সভাপতি এনামুল হক খান।

গতকাল মঙ্গলবার স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস)  সহ-সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, যারা কর দিয়ে বৈধ করেছে, এখন থেকে তারাই ব্যবসা করতে পারবে। এত প্রচার-প্রচারণার পরও যারা স্বর্ণ বৈধ করার উদ্যোগ নেয়নি, তাদের উদ্দেশ্য খারাপ। বাজুস বৈধ ব্যবসায়ীদের পক্ষেই কাজ করবে।

দেশে কী পরিমাণ স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কাছে মজুত আছে তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে বিদেশ থেকে চোরাই পথে আসা বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের হাতে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গত দুই বছর আগে ঢাকায় আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শো রুম থেকে ১৫.১৩ মণ অবৈধ স্বর্ণালঙ্কারসহ ৭ হাজার ৩৬৯ পিস ও ৩৭৮ জোড়া ডায়মন্ডের অলঙ্কার আটক করে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। এরপরই দেশব্যাপী অবৈধ স্বর্ণের বিশাল ভান্ডারের বিষয়টি নজরে আসে। এর পর স্বর্ণ বৈধ করার উদ্যোগ নেয় সরকার। এ লক্ষ্যে স্বর্ণ আমদানি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মো: ফারুক আহম্মেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.