দেউলিয়ার শঙ্কায় মালদ্বীপ, ভারতের দ্বারস্থ হচ্ছেন মুইজ্জু

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ঋণে জর্জরিত মালদ্বীপ। এমন পরিস্থিতিতে আগামী সপ্তাহে ভারত সফরে যাচ্ছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দ্য ডিপ্লোম্যাটের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের মুখপাত্র হীনা ওয়ালিদ গত ১০ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রেসিডেন্টের খুব শিগগিরই ভারত সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে তিনি এ নিয়ে বিস্তারিত আর কিছু জানাননি।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখে রয়েছে মালদ্বীপ। গত সপ্তাহের শুরুর দিকে দেশটিতে ডলারের বিপরীতে সুকুকের দাম ৭০ শতাংশ কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা দলে দলে দেশটির সুকুক বন্ড বিক্রি করছে। এ কারণে দেশটির আর্থিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 
দ্বীপরাষ্ট্রটির ডলারের রিজার্ভ কমে যাওয়ায় সুকুক বন্ডের রেকর্ড দরপতন হয়েছে। গত জুন মাসের হিসাব অনুযায়ী, মালদ্বীপের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে ৩৯.৫ কোটি ডলার থাকা সত্ত্বেও ব্যবহারযোগ্য ভান্ডার মাত্র ৪৫ লাখ ডলারের।
ব্লুমবার্গের তথ্য অনুসারে, সুকুক বন্ডের সুদ বাবদ ২০২৬ সালে মালদ্বীপকে প্রায় ৫০ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে। আপাতত আগামী ৮ অক্টোবর পরবর্তী কিস্তির সুদ পরিশোধ করতে পারে কিনা সেদিকে সকলের দৃষ্টি। 
এমঅ্যান্ডজির জ্যেষ্ঠ বন্ড কৌশলবিদ পূরভি হরলালকা বলেন, মালদ্বীপের সুকুক বন্ডে দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়ার কারণ দেশটিকে প্রচুর বিদেশি ঋণ শোধ করতে হবে। কিন্তু এর জন্য তাদের পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেই। শেষ মুহূর্তে চীন, জিসিসি বা উপসাগরীয় দেশ ও ভারতের মতো বন্ধুরাষ্ট্র সরকার থেকে বৈদেশিক মুদ্রা না এলে অক্টোবরের সুদ পরিশোধ করতে না পারার সম্ভাবনাই জোরালো।’
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ জুন পর্যন্ত মালদ্বীপের রিজার্ভ প্রায় অর্থেক কমে ৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলারে নেমেছে, যা একবছর আগে ছিল ৭০ কোটি ডলার ছিল। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ৪ কোটি ৫০ লাখ ডলারে নেমেছে। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে ৪০ কোটি ডলারের মুদ্রা বিনিময় আলোচনা চলছে বলে গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
এদিকে বিজনেজ টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর্থিক সংকটের হাত থেকে মালদ্বীপকে রক্ষা করতে সাহায্যের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। তবে মালদ্বীপ এই প্রসঙ্গে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে সাহায্যের আবেদন করেনি।
তবে ধারণা করা হচ্ছে, আসন্ন ভারত সফরে মুইজ্জু দেশের আর্থিক সংকট নিয়ে আলোচনা করবেন। গত বছর মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে মোহামেদ মুইজ্জু সরকার। তিনি মূলত চীনপন্থী হিসেবে বিবেচিত। এরপর থেকে ভারতের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক অনেকটা তলানিতে যায়।
এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘অপমান’ করায় চলতি বছর মুইজ্জু সরকারের দুইজন জুনিয়র মন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, মুইজ্জুর ভারত সফরের আগে ওই দুই মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। মুইজ্জুর অফিসের একজন কর্মকর্তা দুইজন মন্ত্রীর পদত্যাগের কথা নিশ্চিত করেছেন। তবে এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.