দুর্নীতির দায়ে এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষকে ওএসডি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিভিন্ন তহবিল থেকে ৫৬ লাখ আট হাজার ৮৮৬ আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. হুমায়ুন কবির মজুমদারকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। তাকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমকি অধিদফতরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে ওএসডি করা করা হয়েছে।
বুধবার (৩১ মে) দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের সরকারি কলেজ শাখার উপ-সচিব চৌধুরী সামিনা ইয়াসমীনের স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বিসিএস (সাধারণ) ক্যাডারের কর্মকর্তাকে (প্রফেসর ড. মো. হুমায়ুন কবির, অধ্যক্ষ, এডওয়ার্ড কলেজ, পাবনা) পুনারাদেশ না দেয়া পর্যন্ত নিজ বেতন ও বেতনক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদফতরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলি/পদায়ন করা হলো। তাকে আগামী ৪ জুনের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল হতে অবমুক্ত হবেন। অন্যথায় একই তারিখে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত মর্মে গণ্য হবেন।
জানা গেছে, ২০১৬/২০১৭ অর্থ বছরে কলেজ তহবিলের বিভিন্ন খাত হতে ২ কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগ উঠে অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির মজুমদারের বিরুদ্ধে। এরই আলোকে দুর্নীতি দমন জেলা কার্যালয় পাবনা তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। দীর্ঘ দিনের তদন্ত কার্যক্রম শেষে ২০২১ সালে জুন মাসে তার বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত হয়। দুদকের প্রাথমিক তদন্তে ৫৬ লক্ষ ৮ হাজার ৮৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মিলে।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, কলেজের ছাত্র সংসদের কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও অধ্যক্ষ ছাত্র সংসদ তহবিল থেকে ১৫টি চেকের মাধ্যমে পাঁচ জন ছাত্রনেতা ও কর্মচারীর নামে পাঁচ লাখ দুই হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। কলেজের উন্নয়ন তহবিল থেকে উন্নয়ন কমিটির সুপারিশ ছাড়াই কোটেশন ছাড়া ভুয়া আবেদন, বিল, ভাউচার করে ৩৮টি চেকের মাধ্যমে ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ২৩৮ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। কলেজের বিবিধ তহবিল থেকেও একইভাবে ভুয়া আবেদন ও বিল ভাউচার করে ৩৭টি চেকের মাধ্যমে ১৩ লাখ চার হাজার ৪২ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া কলেজের বেসরকারি আদায় তহবিল থেকে ভর্তি কার্যক্রম ও ফর্ম পূরণ বাবদ নির্ধারিত ফি সহ, অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে এ ফান্ডে জমা দিয়ে পরে ২৮টি চেকের মাধ্যমে ১৮ লাখ তিন হাজার ৭০৬ টাকা উত্তোলন করে তা আত্মসাৎ করেছেন।
মামলার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গত ২৯ মার্চ জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পাবনা আঞ্চলিক কার্যালয়ে তলব করা হয়। পরে সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পাবনা অঞ্চলের দুদকের সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্র ধর। পরের দিনও তাকে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. খায়রুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এজন্য তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুতই এই মামলার চার্জশিট দেয়া হবে।
এবিষয়ে অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. হুমায়ুন কবির মজুমদারের ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন। এরপর একাধিকবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.