দুর্গাপুরে সোমেশ্বরী নদী দিয়ে বয়ে আসা পাহাড়ি বালুতে নষ্ট হচ্ছে কৃষিজমি

নেত্রকোনা প্রতিনিধি: নেত্রকোনা দুর্গাপুরে সোমেশ্বরী নদী দিয়ে বয়ে আসা পাহাড়ি বালুতে তলিয়ে যাচ্ছে শত শত হেক্টর কৃষি জমি। এতে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। প্রতিকার পেতে ইতিমধ্যে তারা মানববন্ধন করেছেন। নদী থেকে দ্রুত বালু অপসারণ এবং উত্তোলনের ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
জানা যায়, মামলাজনিত কারণে উপজেলায় খরস্রোতা সোমেশ্বরী নদী থেকে গত তিন মাস যাবত্ বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। এতে পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে আসা বালুতে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে আশপাশের কৃষিজমি গ্রাস করছে।
ইতিমধ্যে সোমেশ্বরীর বালু দুর্গাপুরের বেশ কিছু এলাকার জমিতে বালুর স্তর পরে বিনষ্ট হয়ে গেছে। এদিকে নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ থাকায় এর সঙ্গে জড়িত প্রায় শত শত শ্রমিক এখন বেকার হয়ে পড়েছেন।
নেত্রকোনার সোমেশ্বরী নদীর এই বালু ভবন নির্মাণকাজে সারা দেশে ব্যবহূত হয়। যে বালু প্রতিফুট বিক্রয় হতো ১৫-২০ টাকা। বালু উত্তোলন বন্ধ থাকার কারণে সেই বালু এখন প্রতিফুট বিক্রয় হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। এতে বেড়েছে উত্পাদন খরচ।
নেত্রকোনা জেলা রাজস্ব অফিস সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলা প্রশাসন উন্মুক্ত ডাকের মাধ্যমে গত বছরের মতো এবারও দুর্গাপুরের পাঁচটি বালু মহাল ইজারার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে ইজারার জন্য ডাক দেন। কিন্তু নদীর পরিবেশ রক্ষা নিয়ে আদালতে মামলা হলে বালু উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়।
দুর্গাপুরের পরিবেশবিদ মোহন মিয়া বিটিসি নিউজকে বলেন, বালু উত্তোলন বন্ধ থাকায় পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে আসা বালুতে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে অতি বর্ষণ হলে নদী ডুবে গিয়ে আশপাশের এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। এছাড়া ভাঙনেরও সৃষ্টি হয়। নেত্রকোনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণে অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান বলেন, সোমেশ্বরী নদীর দুই পাড়ের এলাকার কৃষিজমি বাঁচাতে হলে নদী থেকে বালু অপসারণ করতেই হবে।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সারওয়ার জাহান বিটিসি নিউজকে বলেন, দুর্গাপুরে বন্যার অন্যতম কারণ হচ্ছে সোমেশ্বরী নদী। নদীর ভাঙনও হচ্ছে এ কারণে। বালুতে নদী ভরাট হয়ে গেলে এ অবস্থা আরো খারাপ হয়। নদীর পানি দুই পাড়ের এলাকা ডুবিয়ে দেয়। আর বালুতে কৃষি জমি বিনষ্ট হয়। তাই নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ রাখা ঠিক নয়। বালু উত্তোলন করলে কিছুটা হলেও নদীর নাব্যতা ফিরে আসে এবং বন্যায় ক্ষতি কম হয়।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাক আহমেদ রুহী বিটিসি নিউজকে বলেন, মামলাজনিত কারণে এখন বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। জেলা প্রশাসন সেই দিকটা দেখছে। তবে দুর্গাপুরের কৃষি জমি আর বালু শ্রমিকদের রক্ষার জন্য বালু উত্তোলনে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ বিটিসি নিউজকে বলেন, মামলাজনিত কারণে বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। তবে, আদালতের নির্দেশেই বালু উত্তোলনের সার্বিক টেন্ডার প্রক্রিয়া প্রস্তুত করা আছে। মামলা নিষ্পত্তির জন্য সার্বিক কার্যক্রম জেলা প্রশাসন থেকে নেওয়া হয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নেত্রকোনা প্রতিনিধি মো. জুলফিকার আলী মানিক। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.