দীর্ঘদিন সংস্কারবিহীন রামগঞ্জ-জামতলি সড়কে প্রসূতি’র বাচ্চা প্রসব

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ পৌরসভার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর বেহাল দশা চরম ভোগান্তি তৈরি করেছে পৌরবাসীর জন্য। বিশেষ করে রামগঞ্জ আঙ্গারপাড়া পাকার মাথা থেকে জামতলি বাজার পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে সহস্রাধিক গর্ত ও খানাখন্দে চলাচল হয়ে পড়েছে দুর্বিষহ।
এই ভাঙা রাস্তার কারণেই সম্প্রতি ঘটে যায় এক মানবিক ঘটনা। টামটা গ্রামের এক প্রসূতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে সড়কেই সন্তান প্রসব করেন।
বিষয়টি বিটিসি নিউজকে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক ডা. পলাশ।
রামগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, যেমন শিশুপার্ক ব্রিজ থেকে ফায়ার সার্ভিস, সোনাপুর চৌরাস্তা থেকে চিতোষী সড়ক, পানিয়ালা বাজার, ওয়াপদা সড়ক, রতনপুর, কলচমা, বাঁশঘর, কাজীরখীল, শ্রীপুর-অভিরামপুর, নন্দনপুর-ভাদুর এসব এলাকাগুলোর সড়ক দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় আজ চরম অব্যবস্থাপনায় পড়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই দেখা দেয় হাঁটুসমান জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়।
টামটা ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি কাউসার পাঠান ও স্থানীয় পরিবহনচালক খোরশেদ বিটিসি নিউজকে জানান, নিয়মিত পৌরকর দিয়েও আমরা কোনো নাগরিক সুবিধা পাই না। এই সড়কগুলো দ্রুত সংস্কার না হলে আরও বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
অটোরিকশাচালক মিজানুর রহমান বিটিসি নিউজকে বলেন, প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। যাত্রীও ঠিকমতো পাওয়া যায় না। গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয় কলেজশিক্ষার্থী নিরব, ব্যবসায়ী মমিন হোসেন ও সেলিম মিয়া জানান, প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হয়েও রামগঞ্জ পৌর এলাকার অধিকাংশ সড়ক চলাচলের অযোগ্য। ড্রেনেজ ব্যবস্থাও অপ্রতুল। সড়ক থাকে পানির নিচে। নির্দিষ্ট ডাস্টবিন না থাকায় যত্রতত্র ময়লা ফেলা হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি।
টামটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম জনবহুল রাস্তা এটি, অথচ আমরা সড়কের ন্যূনতম সুবিধাও পাচ্ছি না। বর্ষা আসলেই মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হয়।
রামগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস. এম. রবিন শীষ বিটিসি নিউজকে বলেন, পৌরসভার সড়ক উন্নয়নে ইতোমধ্যে একাধিক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। ডিসেম্বরে দৃশ্যমান উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হবে।
১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত রামগঞ্জ পৌরসভা ২০০৪ সালে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা লাভ করে। সাবেক স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত জিয়াউল হক জিয়ার হাত ধরে পৌরসভার প্রাথমিক উন্নয়ন শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে কার্যকর কোনো উন্নয়ন না হওয়ায় অধিকাংশ সড়ক এখন জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পৌরবাসীরা বলছেন, কর বাড়লেও নাগরিক সুবিধা বাড়েনি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি মো. আসলাম সরকার আসলাম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.