দিঘলিয়ায় কৃষকেরা বোরো আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন


দিঘলিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি: খুলনার দিঘলিয়ায় কৃষকরা বোরো ধান রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দেশের চাকরিজীবীদের নানা ধরণের ছুটি থাকলেও কৃষকদের কোন ছুটি নেই। তারা দেশের খাদ্য চাহিদা পুরণে প্রতিনিয়ত ফসলের ক্ষেতে ঘাম ঝরানো কঠোর পরিশ্রমের মাঝে প্রতিটি দিন অতিবাহিত করছেন।
একের পর এক ধরণের কৃষি কাজ লেগে থাকে তাদের জীবন যাত্রায়। আমন ধান কাটার পর শুরু হয় শাক সবজি গম, সরিষা ও ভূট্টাসহ নানা ধরনের চাষাবাদে। তারপর তা শেষ হতেনা হতে আবার শুরু হয়ে যায় বোরো ধান রোপনের উপযোগী সময়। তাইতো এখন বোরো ধান রোপনের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন দিঘলিয়ার ধান চাষীরা।
ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বোরোর জমি তৈরি ও ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা। কেউবা জমিতে হালচাষ দিচ্ছেন, কেউবা ধানের চারা রোপন করছেন আবার যারা আগাম চারা রোপন করেছেন তাঁরা সেই জমিতে সেচ দিচ্ছেন।
দিঘলিয়া উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, ৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হচ্ছে, যা গত বছরের তুলনায় ১ হাজার হেক্টর বেশি। এবছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৯ হাজার ৯০০ মেট্রিকটন। ধানের মূল্য বেশি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না দেখা গেলে উৎপাদন লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
সূত্র জানায়, গত বোরো মৌসুমের শেষ সময়ে দফায় দফায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষতি হয় ফসলের। সেই সাথে বাজারে ধানের ভালো দাম না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় চাষিরা। তবে এবার সকল হতাশা কাটিয়ে আবারও বুকভরা আশা নিয়ে মাঠে নেমেছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার গাজীরহাট, বারাকপুর, দিঘলিয়া, সেনহাটি, যোগীপোল ও আড়ংঘাটা ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে ও ঘেরে বোরো ধান রোপন করছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা কৃষি সংশ্লিষ্টদের।
উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের ফরমাইশখানা গ্রামের কৃষক রাকিব মোল্লা, কামাল মোল্লা, মুরাদ মোল্লা, দিঘলিয়া ইউনিয়নের সুগন্ধী গ্রামের কৃষক শাহজাহান আলী, গোয়ালপাড়া গ্রামের মঈনুদ্দিন, ব্রহ্মগাতী গ্রামের বিল্লাল শেখ, মোহাম্মদ আলী ও আবুল কালাম জানান, আমন ঘরে তোলার পর তীব্র শীত উপেক্ষা করে নতুন স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছেন তাঁরা, ইরি বোরো ধান চাষের গুরুত্বপূর্ণ সময় পৌষ-মাঘ।
এ দু’মাসে বোরো জমিতে ধানের চারা রোপন করতে হয়। চারা রোপনের সময় শৈতপ্রবাহ ও কুয়াশা তাদের দমাতে পারেনা। তাঁরা এবার সরকারিভাবে বিনামূল্যে সার ও বীজ পেয়েছেন। এবার জমি চাষাবাদ করছেন এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফসলের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
বারাকপুর ইউনিয়নের আঃ ওহাব শেখ, মোঃ ইউনুস শেখ, আনোয়ার হোসেন,জাহিদ শেখ, খান ওলিয়ার রহমান, দাউদ সরদার সোয়াইব সরদার, মোঃ জাহিদ শেখ ও ইসরাফিল হোসেন বলেন, তাঁরা এবার ধান চাষ করছেন। কেউবা নিজের জমিতে, কেউবা বর্গা চাষি। ফলন ভালো হলে লাভবান হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন সবাই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ কিশোর আহমেদ বলেন, এ বছর ২ হাজার ১০০ কৃষকের প্রত্যেককে ২ কেজি করে হাইব্রিড ধানের বীজ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার কৃষকের প্রত্যেককে ৫ কেজি করে উপসী ধানের বীজ এবং ১০ কেজি করে ডিএপি ও ১০ কেজি করে পটাশ সার বিনা মূল্যে দেওয়া হয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে। তাছাড়া কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ প্রদান অব্যাহত রয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর দিঘলিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি সৈয়দ আবুল কাসেম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.