দিঘলিয়া সরকারি এমএ মজিদ ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও পরিচালনা পরিষদের কতিপয় সদস্যের বিরুদ্ধে অর্থ আত্নসাতের অভিযোগ  

বিশেষ (খুলনা) প্রতিনিধি: খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের দিঘলিয়া সরকারি এমএ মজিদ ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষের কাঁধে ভর করে কলেজ পরিচালনা পরিষদের কতিপয় সদস্য কলেজের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পাশাপাশি করেছে দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা।
এ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষকে জিম্মি করে কলেজটির পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত ও রেজুলেশন ছাড়াই ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকা তুলে আত্নসাৎ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কলেজটির কতিপয় জিবি সদস্য দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও শুধু তদন্ত হয়েছে। কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
স্থানীয় এমপি ও কতিপয় ব্যক্তির তদবিরে দুর্ণীতি ও অর্থ ভাগাভাগির ঘটনা ধামাচাপা পড়ে গেছে। কারণ হিসেবে জানা গেছে কলেজের এ অর্থ লুটপাট ও নানা অনিয়ম ও দুর্ণীতির সাথে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আওয়ামী লীগের ঘরণা শিক্ষকরাই জড়িত।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, দিঘলিয়া সরকারি এমএ মজিদ কলেজটি ২০১৮ সালে সরকারিকরণ করা হয়।
সরকারিকরণের পূর্বে উক্ত কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন মীর্জা নুরুজ্জামান। কলেজটি সরকারি হওয়ার পূর্বে অর্থাৎ ২০১৬ সালে কলেজটির উন্নয়ন কাজে ব্যয়ের জন্য খুলনা ন্যাশনাল ব্যাংকে এফডিআর করে জমা রাখা ২১,৩৯,১৬১ দশমিক এক দুই টাকা পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত ও রেজুলেশন ছাড়াই তুলে নিয়ে আত্নসাৎ করেছেন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মীর্জা নুরুজ্জামান ও কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ খান রওশন আলী ও কলেজ পরিচালনা পরিষদের কতিপয় সদস্য। পরবর্তীতে সোনালী ব্যাংক দিঘলিয়া শাখায় ৫ লাখ টাকার এফডিআর করা হয়েছে। বাকী ১৬ লাখ ৩৯ হাজার টাকা আত্মসাত করা হয়েছে এমনটাই জানা গেছে।
অভিযোগে আরও জানা যায়, কলেজ পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়াই ৩০ বছরের অধিক বয়সী ৫/৬টা মেহগুনী গাছ বিক্রি করে আত্নসাৎ করেছে।
জানা যায়, এ বিষয়টি তদন্ত করার জন্য দিঘলিয়া উপজেলার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুল আলম উপজেলা শিক্ষা অফিসার মাধ্যমিক মোঃ মাহফুজুর রহমানকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সে তদন্ত রিপোর্ট ও পরবর্তী পদক্ষেপ আলোর মুখ দেখেনি।
কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যসহ এলাকার বিজ্ঞমহল জানিয়েছেন, উপাধ্যক্ষ খান রওশন আলী তাদের জানিয়েছিলেন কলেজের ১০ লাখ টাকা কলেজের তৎকালীন সভাপতি ও দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খান নজরুল ইসলামের নিজস্ব এ্যাকাউন্টে জমা আছে। যা আজও কলেজ কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও সংশ্লিষ্টগণ তা আমলে আনেননি।
উল্লেখ্য উক্ত কলেজের উপাধ্যক্ষ জাল জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছিলেন। কলেজের অধ্যক্ষ মীর্জা নুরুজ্জামান থাকলেও আওয়ামী লীগের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তিনিই কলেজে ছড়ি ঘুরাতেন। তিনিই প্রভাব খাটিয়ে কলেজের জিবি সদস্যদের উপেক্ষা করে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যকে বাদ দিয়ে নিজের সুবিধামত সভাপতি বানিয়ে কলেজের উক্ত টাকা তিনিই নয় ছয় করেছেন। যে অর্থ কলেজের সম্পদ।
এক সূত্রে জানা গেছে তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খান নজরুল ইসলাম ছিলেন উক্ত কলেজের সভাপতি। তার আমলেই কলেজটির উল্লেখিত লাখ লাখ টাকার নয় ছয় হয়েছে। কলেজের তৎকালীন উপাধ্যক্ষ খান রওশন আলী ও কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি খান নজরুল ইসলামের দৌড়ঝাপে খুলনা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদী’র হস্তক্ষেপে ঘটনাটা ধামাচাপা দেওয়া হয় যা বর্তমানে আইনের আওতায় আনা দরকার বলে বিজ্ঞমহলের অভিমত।
এ ব্যাপারে কথা হয় দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মাসুম বিল্লাহ এর সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, দিঘলিয়া কলেজ বর্তমানে সরকারি কলেজ। এ কলেজের অনিয়ম ও দুর্ণীতি দেখার দায়িত্ব আমার নয়।
এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে আশু কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকার বিজ্ঞমহল।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (খুলনা) প্রতিনিধি সৈয়দ আবুল কাসেম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.