দিঘলিয়ায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ডের পরিসমাপ্তি ঘটলেও সরকারের মজবুত টেকসই উন্নয়নের অনুপস্থিতি ঘটেছে ঢের


বিশেষ (খুলনা) প্রতিনিধি: খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলায় নানামুখী ছোট/ বড় উন্নয়ন কর্মকান্ডের পরিসমাপ্তি ঘটলেও নানা কারণে এ সকল উন্নয়ন কর্মসূচিতে সরকারের মজবুত টেকসই উন্নয়ন হয়নি এমন ব্যাপক অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ অনিয়ম ও টেকসই উন্নয়নের অন্তরায়ের ক্ষেত্রে দলীয় গ্রুপিং, উন্নয়ন কাজে অপেশাদারিত্বের ঠিকাদারী ব্যবস্থাপনা, স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে দলীয় ও বিদ্রোহীর দেয়াল সৃষ্টি, প্রশাসনের সুষ্টু তদন্ত ও জবাবদিহিতার অনুপস্থিতিতার কারণে বড় বাঁধা হিসেবে চিহ্নিত করছেন এ জনপদের রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গসহ বিজ্ঞমহল।
দিঘলিয়া উপজেলার বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, বিগত বছরগুলোতে দিঘলিয়া উপজেলায় ছোট-বড় অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। এ সকল উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে নদী ভাঙ্গন রোধ প্রকল্প, সরকারি আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘর নির্মাণ, যোগাযোগের ক্ষেত্রে রাস্তা ও কালভার্টের উন্নয়ন, ছোট ছোট ব্রিজ নির্মাণ, কাঁচা ও আধাপাকা রাস্তা নির্মাণ, মৎস্য চাষ উন্নয়নে জলাশয়, খাল ও পুকুর পুনঃখনন, মা ইলিশ ও জাটকা নিধন রোধে নানা প্রকল্প, মসজিদ, মন্দীর ও মাদ্রাসার উন্নয়ন, হাট-বাজার ও রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নসহ নানামুখী ছোট-বড় উন্নয়ন কর্মকান্ডের পরিসমাপ্তি ঘটেছে।
এসকল উন্নয়ন প্রকল্প পরিসমাপ্তির ক্ষেত্রে সরকারি নানা নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই টেন্ডারে কার্যাদেশ দেওয়ার মাধ্যমে পেশাদারী জবাবদিহিতামূলক ঠিকাদারী ব্যবস্থার মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে অগ্রীম চুক্তিভিত্তিক ঠিকাদারীর মাধ্যমে অপেশাদারী ঠিকাদারী ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা, ঠিকাদারদের কাজ না করে অপেশাদারি ঠিকাদারদের মাঝে কাজ বিক্রির ব্যবস্থাপনার সফল বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করাসহ নানা অনিয়ম দিঘলিয়ার মজবুত টেকসই উন্নয়নকে ব্যাপকভাবে বিতর্কিত জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
দিঘলিয়া উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পসহ উপজেলা ত্রাণ দপ্তরের ছোট-বড় লাখ লাখ টাকার প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ সকল মহলের মুখে মুখে। এ সকল প্রকল্পে উন্নয়ন কাজ সরকারের মজবুত টেকসই উন্নয়ন ক্ষেত্র বিশেষে হুমকির মধ্যে পড়েছে এমনই অভিমত দিঘলিয়া জনপদের রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গসহ বিজ্ঞমহলের।
উল্লেখ্য দিঘলিয়া উপজেলার দিঘলিয়া মোড়লপাড়ার আশ্রয়ণ প্রকল্পে রডছাড়া ঢালাই কাজের মাধ্যমে ঘর নির্মাণ ও পুকুর চুরির গোপন অজানা নানা আর্থিক চুক্তির জারিজুরি ফাঁস, অনিয়ম ও দুর্নীতির কাজে জড়িত সজীবকে শাস্তির বদলে মুক্তি দেওয়া এবং পুরষ্কার স্বরূপ পুণরায় উন্নয়ন কাজে সম্পৃক্ত করাসহ সজীবের খুঁটির জোর ও কে এই সজীব জনমনের এ জিজ্ঞাসার জবাব শনাক্ত না করা জনমনে এখনও নানা প্রশ্ন শুধু জিজ্ঞাসা হয়েই রয়ে গেছে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, দিঘলিয়ায় বিগত বছরগুলোতে ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণ কাজের পরিসমাপ্তি ঘটলেও এ সকল নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রে সরকারের উন্নয়ন ক্ষেত্রে কাঙ্খিত মজবুত টেকসই উন্নয়ন অনুপস্থিত। এ জনপদে নির্মিত রাস্তাগুলো নির্মাণের কিছুকাল যেতে না যেতেই কোথাও রাস্তার দুই পাশ ভেঙ্গে ও বসে পড়ছে। রাস্তা কোথাও উঁচু এবং কোথাও নিচু। বর্ষা হলেই রাস্তার ওপর পানি জমে থাকে। রাস্তাগুলো দিয়ে ওভারলোড যানবাহন যাতায়াতে জন দুর্ভোগ সৃষ্টি হলেও কর্তৃপক্ষের কোনো মাথা ব্যাথা নেই এমনটিই অভিযোগের কথা জানিয়েছে এলাকাবাসী।
নদী ভাঙ্গন রোধ প্রকল্প বাস্তবায়ন, মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ, আধাপাকা রাস্তা নির্মাণে প্রকল্প নির্বাচন ও কাজে অনিয়ম, রাস্তার নির্মাণ কাজে ঠিকাদারদের জবাবদিহিতার অনুপস্থিতিসহ নানা অভিযোগ মানুষের মুখেমুখে।যত্রতত্র সরকারি রাস্তার গাছ কর্তন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঔষধ ও আনুষাঙ্গিক মালামাল সরবরাহে ঠিকাদার নিয়োগে পুলিশ মোতায়েনে টেন্ডারদাতাদের সিডিউল জমাদানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নির্ধারিত ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়া ও সিন্ডকেটে আয়ের অর্থ ভাগাভাগি করে নেওয়া, বাজারে উন্নয়ন প্রকল্প পরিসমাপ্তির পর হাট-বাজারের কমিটির নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে মোটা অংকের অর্থ বাণিজ্যে ব্যবসায়ীদের ঘর বরাদ্দ দেওয়া, স্বল্প খরচে জন্ম নিবন্ধন ও অন লাইন জন্ম নিবন্ধন করণ কাজে মোটা অংকের টাকা আদায়ে জন জীবনকে ব্যয়বহুল ডিজিটাল বিড়ম্বনায় ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া, সকল সুবিধাভোগীদের মাঝে ওয়ান লাইনের সিস্টেম চাপিয়ে দিয়ে মোটা অংকের টাকা লুফে নেওয়া অন্যতম।
দিঘলিয়া জনপদটি একাধিক নদী দ্বারা খন্ডিত ও জেলা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন জনপদ। এ জনপদের মানুষকে প্রতিনিয়ত ১৮টি খেয়াঘাটের ইজারাদারদের নানা অনিয়ম বাড়তি অর্থলোলুপ বাধা ও ব্যক্তিস্বার্থকেন্দ্রিক নানা অনিয়ম ও জুলুম নির্যাতন অতিক্রম করে জেলা শহরসহ দেশ-বিদেশে যাতায়াত করতে হয়।
স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন স্তরের জন প্রতিনিধিগণ হাজার হাজার মানুষের যৌক্তিক দাবীর মুখেও জনগণের কাঙ্খিত সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যার্থ হয়েছে। ব্যক্তি স্বার্থকেন্দ্রিক বছরের পর বছর অবৈধভাবে শক্ত অবস্থান নিয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অক্টোপাশে জনস্বার্থ আটকা। সে জাল ছিন্ন করে উচ্ছেদ করে গণমানুষের দাবীর সফল বাস্তবায়ন ঘটাতে পারেনি দিঘলিয়া উপজেলা প্রশাসন, সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধি, খুলনা জেলা প্রশাসনসহ খুলনার রাজনৈতিকমহল।
বরং মালামাল ও যানবাহন নিয়ে জীবন ও মালামালের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার ব্যবস্থাকে অঘোষিত ও অবৈধ চা়ঁদাবাজীর আওতায় এনে সাধারণ পারাপার যাত্রীদের জীবন যাত্রা করেছে দুর্ভোগ, ব্যয়বহুল ও বহুলাংশে নির্যাতনের সামিল। এ জনপদের মানুষ জোরালো দাবী নিয়ে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সামনে এলেও জনগণের সেই যৌক্তিক দাবী নদী পারাপার ঘাটে সুপ্রতিষ্ঠিত অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি ও নানামুখী অবৈধ ব্যবসা ও চাঁদাবাজির বেড়াজালের জাল ছিন্ন করতে পারেনি। পক্ষান্তরে মানুষের সামনে এমনটায় এসেছে কেন তারা এ যৌক্তিক দাবী নিয়ে তাদের সুপ্রতিষ্ঠিত দীর্ঘদিনের সাজানো অনিয়মকে পাল্টে দেবে? এখানে জন সুবিধার চেয়ে তাদের সুবিধা রয়েছে ঢের।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (খুলনা) প্রতিনিধি সৈয়দ আবুল কাসেম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.