দিঘলিয়ায় নৌ-সেনা সদস্যদের পাহারায় স্বস্তি ফিরছেনা সাধারণ মানুষের মাঝে

বিশেষ (খুলনা) প্রতিনিধি: খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সাধারণ মানুষের আতংক কাটছেনা পুলিশের অনুপস্থিতির মাঝে স্বল্প পরিসরে নৌ-সেনা সদস্যদের উপস্থিতি।
দিঘলিয়ার বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর থেকে সারা খুলনা শহরের পাশাপাশি দিঘলিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কয়েকদিন যাবৎ চলছে নিরব চাঁদাবাজীসহ হামলা, ভাঙ্গচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট। পাশাপাশি চলছে দিঘলিয়া থানাসহ ফাঁড়ি পুলিশের নিরবতা ও কর্মবিরতি। ফলে খুলনা জেলা শহর থেকে ভৈরব নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন ও আতাই নদী দ্বারা খন্ডিত এ উপজেলার দেড় লাখ মানুষের জান মালের নিরাপত্তা হয়ে পড়েছে অরক্ষিত।
গত কয়েক দিনে ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, প্রেসক্লাবে ভাঙ্গচুর, লুটপাট অগ্নিসংযোগ ঘটিয়েছে চিহ্নিত দুর্বৃত্তরা। হিন্দু এলাকায় জামাত-শিবিরসহ এলাকার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা রাতে পাহারা বসিয়েছে। শান্তি মিছিল করেছে।
প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। কিন্তু একটি মহলের দিঘলিয়ার গাজীরহাট, বারাকপুর, দিঘলিয়া ও সেনহাটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে যেন ধামছে না ভাঙ্গচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা। চলছে হিন্দু সম্প্রদায়সহ নানা লোকের বাড়িতে হামলা, ভাঙ্গচুর ও লুটপাটের ভয় দেখিয়ে গোপন চাঁদাবাজি। শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক জনপ্রতিনিধিসহ নানা পেশার মানুষ যারা নিজ নিজ অবস্থানে থেকে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত হয়ে পড়েছিলেন। আবার কেউবা চলার পথে কারো ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হয়ে অবস্থান ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এমনটায় জানিয়েছেন এলাকার বিজ্ঞমহল।
অপর দিকে নৌসেনাদের দিঘলিয়ায় ক্ষুদ্র পরিসরে উপস্থিতি এবং তাদের তৎপরতায় সমাজের সাধারণ মানুষের মাঝে শঙ্কা কাটাতে পারছেনা। কারণ পুলিশের ন্যায় সাধারণ মানুষের পাশে এসে দুই পক্ষের মাঝে এসে শান্তির অবস্থানে এসে দাঁড়াতে পারছেন না সেনা সদস্যরা এমনটাই জানিয়েছেন এলাকার বিজ্ঞমহল।
দিঘলিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফরমাইশখানা গ্রামের মোড়ল পাড়ায় বসবাস করে নবী হোসেন লিটন।
দৌলতপুর অগ্রনী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সম্প্রতি বাড়ি করেছে। গত ৫ আগষ্ট দিনে দুপুরে চিহ্নিত দুর্বৃত্তরা তার বাড়িতে হামলা, ভাঙ্গচুর, লুটপাট চালিয়েছে বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন উক্ত নবী হোসেন। ঘরের জানালা, আসবাব পত্র, মোটরসাইকেল, আলমিরাসহ নানা জিনিসপত্র ভেঙ্গে তসনস করেছে। নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, কাপড় চোপড়সহ নানা জিনিস লুট করে নিয়ে গেছে। আমিতো কোন দলের সক্রীয় কর্মীও নই। তবু কেন আমার বাড়ি ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করা হলো?  আমার সর্বস্ব লুণ্ঠন ভাঙ্গচুর করার পরও এগিয়ে আসেনি কোনো মহল। এমনকি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোনো সদস্য।
গত শুক্রবার বিকালে দিঘলিয়া উপজেলা মোড়ে সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে দিঘলিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বসতবাড়িসহ স্থাপনায় হামলা, ভাঙ্গচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রতিবাদে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত সমাবেশে সমাবেশ মোড়ের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন তার দোকানঘরে দুর্বৃত্তের অগ্নিসংযোগে সর্বস্ব পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়ার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমি আমার সব কিছুই এই দোকানের মালামালের পিছনে আমার সব কিছুই বিনিয়োগ করে আজ আমি নিঃস্ব। আমার সব পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এমনকি খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসার পথে দুই জায়গায় পথ রোধ করেছে দুর্বৃত্তরা। কারা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আটকালো তাও আশকারা হয়নি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পক্ষ থেকে। আমরা কোথায় এবং কার কাছে যাব বিচারের জন্য? আমার এই সর্বনাশ যারা করেছে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (খুলনা) প্রতিনিধি সৈয়দ আবুল কাসেম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.