দাবি না মানলে রাজপথেই সরকার পরিবর্তন : মির্জা ফখরুল

ঢাকা প্রতিনিধি: নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি না মানলে রাজপথেই সরকার পরিবর্তন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জাতীয় প্রেসক্লাবে ওভারসিজ করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ওকাব) এর ‘মিট দ্য ওকাব’ অনুষ্ঠানে আজ শনিবার (২৩ জুলাই) একথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার যদি নিজেরা উদ্যোগ না নেয় অর্থাৎ এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা যে দাবিগুলো করেছি, তা না মানে, তাহলে রাজপথই একমাত্র সমাধান।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আশাবাদী এবং আত্মবিশ্বাসী যে, এবার জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন নিয়ে আমরা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এই সরকারের পরিবর্তন আনতে পারব।’
ফখরুল বলেন, ‘কে এম নুরুল হুদা সাহেব ২০১৮ সালে অত্যন্ত কলঙ্কময় নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছেন। তিনিও পরে বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অত্যন্ত কঠিন। আর বর্তমানে যিনি আছেন, তিনি তো একেবারে হাল ছেড়ে দিয়েছেন মনে হয়। তিনি এরই মধ্যে বলেই দিয়েছেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন খুব কঠিন হচ্ছে এবং এখানে যদি বিএনপি না আসে বা মূল বিরোধী দল যদি না আসে, সেই নির্বাচন অর্থবহ হবে না।’
নির্বাচনকালীন সরকারের জন্য সরকারকেই সংসদে আইন আনতে হবে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘এটা সরকারকেই আনতে হবে। আমরা তো তাই করেছিলাম। ১৯৯৬ সালে নতুন সংসদ হওয়ার পরে সারা রাত জেগে সংসদে আইন পাস করে আমরা পদত্যাগ করেছিলাম। সংসদ বাতিল করা হয়েছিল। সেই নির্বাচনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১১৬টা আসনে বিরোধী দলে বসেছিল। আমরা মেনে নিয়েছি। দ্যাট ইজ ডেমোক্রেসি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ব্যাক ডোর বলে কোনো কথা নেই। আমাদের যা কিছু সব ফ্রন্ট ডোর।’
আগামী নির্বাচনে বিএনপি গেলে তার নেতা কে হবেন জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই দলের নেতৃত্ব তো নির্ধারিত হয়ে আছে। দেশনেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি আমাদের নেত্রী, তাঁর অবর্তমানে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের নেতা। সুতরাং এখানে কোনো অস্পষ্টতা নেই।’
আলোচনার সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ‘না, আলোচনার পথ কোথায়? সরকার যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে কথা বলতে চায়, তখন আমরা সেটা ভেবে দেখব। তার আগে তো না। আগে তাদের (সরকার) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে একমত হতে হবে।’
দাবি পূরণ না হলে নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনার নিশ্চয় মনে আছে, ২০১৮ সালে আমরা কখন নির্বাচনে গিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরে আমরা নির্বাচনে গিয়েছি। সেখানে সেই আলোচনায় উনি (প্রধানমন্ত্রী) প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং তিনি একথাও বলেছিলেন যে, আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে, আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি যে, নির্বাচনটি সুষ্ঠু হবে, সেই দিন থেকে কেউ অ্যারেস্ট হবে না, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, কোনোভাবে বাধা দেওয়া হবে না। আমরা গণতন্ত্রের স্বার্থেই সমস্ত দল একমত হয়েই সেই নির্বাচনে গিয়েছিলাম। কিন্তু, শেখ হাসিনা তার সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি। তিনি কয়েকদিন পর থেকেই ধরপাকড় শুরু করেছিলেন এবং যত রকমের নির্যাতন-নিপীড়ন করা দরকার, বিরোধী দলের ওপর তিনি তাই করেছিলেন।’
মিট দ্য প্রেসের অনুষ্ঠানে ওকাবের আহ্বায়ক বিবিসির সংবাদদাতা কাদির কল্লোল ও সদস্য সচিব জার্মান নিউজ এজেন্সি-ডিপিএ’র সংবাদদাতা নজরুল ইসলাম মিঠুর সঞ্চালনায় এতে ওকাবের জ্যেষ্ঠ সদস্য ফরিদ আহমেদ মূল মঞ্চে ছিলেন। মিট দ্য ওকাব অনুষ্ঠান বিএনপির মিডিয়া সেলের জহির উদ্দিন স্বপন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ঢাকা প্রতিনিধি মোমাসুদ রানা খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.