দশ দফা নির্দেশিকা ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, করোনা এড়িয়ে সতর্কভাবে হোক দুর্গাপুজো

(দশ দফা নির্দেশিকা ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, করোনা এড়িয়ে সতর্কভাবে হোক দুর্গাপুজো–ছবি: সংগৃহীত)
কলকাতা প্রতিনিধি: কীভাবে আয়োজন করা হবে এ বারের দুর্গাপুজোর? প্যান্ডেলের ভিতরে, বাইরে কী কী গাইডলাইন মানতে হবে? পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠকে সেই নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
এবার নিয়মবিধিতে অনেক বদল আসতে চলেছে, সেই ইঙ্গিত ছিলই । আজ বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরে পুজো কমিটিগুলোর সঙ্গে বৈঠকে নয়া নিয়মাবলি নিজেই জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
সতর্কতার সঙ্গে পুজোর আনন্দে মাততে এবার বাদ গেল প্রথাগত বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য। সংক্রমণ এড়াতে যোগ হল নতুন অনেক নিয়মই। চলতি বছর রাজ্যে ৩৭ হাজারেরও বেশি দুর্গাপুজো (Durgapuja) হচ্ছে বলে হিসেব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
১. প্যান্ডেল খোলামেলা করতে হবে৷ মণ্ডপের চারপাশ খোলা রাখতে হবে৷ চারপাশ ঘেরা থাকলে মণ্ডপের ছাদ খোলা রাখতে হবে যাতে হাওয়া চলাচল করতে পারে এবং সংক্রমণের আশঙ্কা।

২. দর্শনার্থীদের এবং মণ্ডপ চত্বরে থাকা প্রত্যেকের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক৷ মাস্ক না পরলেও নাক, মুখ ঢেকে রাখতে হবে ৷ পুজো উদ্যোক্তা এবং পুলিশের উদ্যোগে মণ্ডপে মাস্ক রাখতে হবে, যাতে কারও কাছে মাস্ক না থাকলে তাঁকে মাস্ক দেওয়া যায় ৷

৩. মণ্ডপের অনেকটা আগে থেকেই দর্শনার্থীদের স্যানিটাইজার দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে৷ মণ্ডপের ভিতরে ভিড় এড়াতে প্রবেশ এবং বেরনোর আলাদা পথ রাখতে হবে ৷ ভিড় এড়াতে ব্যারিকেড, দাগ দিয়ে মানুষ দাঁড়ানোর জায়গা চিহ্নিকরণের ব্যবস্থা করে দিতে হবে ৷

৪. বেশি সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে ৷ এদের জন্য মাস্ক, স্যানিটাইজার, ফেস শিল্ড দিতে হবে ৷ পুলিশকর্মী যাঁরা পুজোর সময় দায়িত্বে থাকবেন, তাঁদেরকেও পর্যাপ্ত সংখ্যক মাস্ক, স্যানিটাইজার এবং সুরক্ষা সরঞ্জাম দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷

৫. অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ এবং সিঁদুরখেলাতেও ভিড় এড়াতে অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ ছোট ছোট দলে ভাগ করে অঞ্জলির আয়োজন করার অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ ফুল, বেল পাতা বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷

৬. প্রসাদ বিতরণে ভিড় এড়াতে হবে ৷ আবাসনের পুজোতেও এই নির্দেশিকা মানতে হবে ৷ একই সময়ে সবাই সিঁদুরখেলায় অংশ না নিয়ে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে সিঁদুরখেলার অনুরোধ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷

৭. বিসর্জনেও বেশি মানুষ নিয়ে যাওয়া যাবে না ৷ পাশাপাশি একই এলাকার সব পুজোর বিসর্জনও একদিনে হবে না৷ ঘাটগুলিকেও স্যানিটাইজ করার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷

৮. পুজোর সময় আলাদা করে কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না৷ অতিরিক্ত ভিড় এড়ানোর জন্যই এই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷

৯. উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও সংক্ষিপ্ত রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন  মুখ্যমন্ত্রী।

১০. মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, পুরস্কার দেওয়ার জন্য যে বিচারক বা প্রতিনিধি দল  মণ্ডপে মণ্ডপে আসেন, তাঁদের একসঙ্গে দু’টির বেশি গাড়ি যেন মণ্ডপ চত্বরে প্রবেশ না করে৷ ভার্চুয়াল মাধ্যমে মণ্ডপ দেখে পুরস্কার দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি৷ এ বার বিশ্ব বাংলা পুরস্কারও ভার্চুয়ালি দেওয়া হবে৷ পুরস্কার দেওয়ার জন্য বিচারকরা সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টের মধ্যে মণ্ডপগুলিতে যাবেন ৷ যে কোনও মূল্যে যাতে ভিড় এড়ানো যায়, সেই অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
করোনা কাঁটায়, শারীরিক দূরত্ববিধি মানার জন্য বাদ পড়ছে বেশ কয়েকটি প্রথা। তার মধ্যে অন্যতম – রেড রোডের পুজো কার্নিভ্যাল বাতিল। দুঃসংবাদ ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”এবার কার্নিভ্যালটা করতে পারছি না। কারণ, রেড রোডে এবার নমাজও বাতিল হয়েছে। আমি দুঃখিত এর জন্য।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ (বাংলাদেশ) এর বিশেষ (কলকাতা) প্রতিনিধি রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.