দলীয়করণের মাধ্যমে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছিল পার্বত্যাঞ্চলে : উপদেষ্টা

বিশেষ প্রতিনিধি: পার্বত্য চট্টগ্রাম-বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, দলীয়করণের মাধ্যমে বৈষম্য সৃষ্টি করে এ পর্যন্ত পার্বত্য জেলার জনগোষ্ঠীকে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সময় পিছিয়ে রাখা হয়েছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন এ সরকার সে সব বৈষম্য গুঁড়িয়ে দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৈষম্যহীন পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়তে চাই।
রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স ভবনের অডিটোরিয়ামে বান্দরবান পার্বত্য জেলার সরকারি বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সুধীজন, ছাত্র-শিক্ষক প্রতিনিধি, বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাতে এলে সেখানে আয়োজিত আলোচনা সভায় সোমবার (১৯ আগস্ট) উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘পাংখোয়া, মার্মা, খুমী, খেয়াং, বম, চাক, ম্রো, তঞ্চংগা, লুসাই, ত্রিপুরা, চাকমা সব সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে গুরুত্ব বিবেচনা করে তাদেরকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। বৈষম্যমুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়তে কাউকে পিছিয়ে রাখা হবে না।’
এ সময় বান্দরবান থেকে আগত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক উপদেষ্টাকে কাছে পেয়ে এবং তাদের প্রয়োজনের কথা জানাতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন। উপস্থিত নেতারা এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা ওই অঞ্চলের শান্তি বিরাজের জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা দেশ বিদেশের কুটনীতিকদের কাছে একটি মডেল বাংলাদেশ পুনর্নির্মাণে সহযোগিতা ও সমর্থন চেয়েছেন। আমরা সে লক্ষ্যে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করবো। তিনি বলেন, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য উপদেষ্টা দেশের জনগণের কাছে কথা দিয়েছেন— আমাদের দেশে ইন্টারনেট আর বন্ধ হবে না।
এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ডিজিটাল যুগকে আমরা পছন্দ করি। তবে যেদিন আমরা গ্লোবাল স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করতে পারবো, সেদিনই বলা যাবে আমরা ডিজিটাল যুগে আছি। গুড গভর্ন্যান্স গড়ে তুলবো। আমরা পার্বত্য তিন জেলা পরিষদগুলোকে পুনর্গঠন করবো। আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলতে সর্বপ্রথম শিক্ষক নিয়োগে আমাদের কঠোর ব্যবস্থা নেবো। শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তনে এনে পার্বত্য চট্টগ্রামকে আধুনিক শিক্ষানগর হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে কোনও প্রকার দুর্নীতির প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। সব জায়গাতেই সংস্কার করা হবে। পার্বত্য এলাকায় খেলাধুলার আগ্রহকে বাড়ানোর জন্য সেখানে ফুটবলের মাঠ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
তিনি আরও বলেন, সবাইকে আইন-শৃ্ঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে। আমাদের ভয় নেই, আমাদের পাশে বীর ছাত্র-জনতা রয়েছে। তিনি বলেন, আমি ১৯৭১ সালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও সম্ভ্র্রম হারা মা-বোনসহ ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে স্বৈরাচারী সরকার পতনে শহীদ হওয়া সেই সব বীর ছাত্র এবং নিরীহ মানুষদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানাচ্ছি। আলোচনার এক পর্যায়ে সবাই যার যার অবস্থান থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাকে সহায়তা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কংকন চাকমা, ইউএনডিপির কর্মকর্তা এ. এ. মং, রুমা উপজেলার লেলুং খুশী, থানচির ছাত্র প্রতিনিধি উকিংওয়ং মার্মা, লামার মাং ইয়ং ম্রো, চাক এর প্রতিনিধি অংজাইঐ, বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশনের নির্বাহী সদস্য খুই সিং প্রু লুবু, বান্দরবান সদরের সুকান্ত ত্রিপুরা, রাজুময় তঞ্চংগা, উমংসিং খেয়াং, জেনী বম, লাল জারলম বম, বরেন বম, উখিংনু চাক, থানচি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ক্যহলাচিং মার্মা, রোয়াংছড়ি উপজেলার নুএসিং মারমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.