ত্বকের সমস্যায় কি ভাবে পরিচর্যা করবেন তা দেখেনিন

 

বিটিসি হেল্থ ডেস্ক :  প্রচুর ভিটামিন সি, খুব কম চর্বি ও শর্করা খাবার বুড়িয়ে গেলেও সুন্দর রাখে ত্বক। এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যেমন- মাছ, ফল, সবজি ত্বককে রক্ষা করে।

খাদ্যে থাকা চাই ভিটামিন:

এন্টিএজিং ক্রিমে থাকতে পারে ভিটামিন সি ও ই। এসব ভিটামিন-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াও উচিত। সঙ্গে খনিজ সেলেনিয়াম। ফলে রোদ থেকে ত্বক রক্ষা পাবে। এমনকি ত্বকে ভাঁজ রেখা, বার্ধক্য রেখা দেখা দেবে দেরিতে। কমলালেবু, পেয়ারা, আমলকী, বাতাবিলেবু, লেবু এসব খাওয়া চাই বেশি বেশি।

দৌড়ানো বুড়ো হওয়া ত্বক থেকে বাঁচায় : 

ব্যায়াম করলে রক্ত চলাচল বাড়ে, ত্বক থেকে দূর হয়ে যায় বিষ বর্জ্য। রক্ত চলাচল উন্নত হলে ত্বকের টিসুতে আসে বেশি বেশি অক্সিজেন ও পুষ্টিকণা যা ত্বককে কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে। তাই কুষণ রেখা সহজে পড়ে না। ব্যায়ামে বরং রোমকূপ খুলে যায়। ব্যায়ামের পরপর মুখ ধোয়া উচিত। কপালে আটসাঁট বন্ধনী পরা উচিত নয়, এতে ঘাম আটকা পড়ে, ত্বকে হয় উত্তেজনা।

 ত্বক চাই সৌন্দর্য বিশ্রাম :

রাত জেগে দেখুন কয়েক রাত, ত্বকে পড়বে এর চিহ্ন। চোখের নিচে কালি, ফ্যাকাশে ত্বক, ফোলা চোখ। রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম শরীর ও ত্বককে রাখে তুঙ্গে। চিৎ হয়ে ঘুমানো ভালো। একদিন মুখ বালিশে চেপে শুলে ত্বকে ভাঁজ পড়বে।

গর্ভসঞ্চার বদলে দেয় ত্বক :

৯০ শতাংশ গর্ভবতী নারীর তলপেটে রেখা দাগ পড়বেই। প্রসবের পর মিলিয়ে যাওয়ার কথা। ময়শ্চারাইজার ব্যবহারে সুফল পাওয়া যায়। ভিটামিন এ পিল এবং লেজারেও সুফল পাওয়া যায়। ত্বকের আরেকটি সমস্যা হলো ব্রণ, শরীরে বাড়তি হরমোনের জন্য হতে পারে। দিনে দু’বার মুখ ধোয়া, তৈলমুক্ত ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শও প্রয়োজন।

মেলাস্মা এড়াতে :

গর্ভের সময় বা গর্ভ নিরোধক পিল ব্যবহারের সময় কোনো কোনো নারীর মুখে পড়ে গাঢ় রেখা। ত্বক রঞ্জক মেলানিন অতিরিক্ত হলে এমন গাঢ় ছাপ ছাপ দাগ পড়ে মুখে। প্রসবের পর বা পিল ছাড়ার পর মেলাস্মা মিলিয়ে যায়। খররোদ এড়ালে এবং সানক্রিন লোশন ব্যবহার করলে একে এড়ানো যায়। ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধও ব্যবহার করা যায়। তবে খররোদ এড়ানো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

ত্বকে যেন না পড়ে ক্ষতিকর রশ্মি :

রোদের বিশেষ করে খররোদে অনেক সময় থাকলে ত্বকে এর প্রভাব পড়ে, বিরূপ প্রভাব। ব্যবহার করুন ব্রড স্পেকট্রাম সানব্লক। জিংক অক্সাইড, টাইটানিয়াম অক্সাইড বা এভোরেনজোন প্রোডাক্ট ব্যবহার করা যায় ডাক্তারের পরামর্শে। মাথায় ছাতা পরা, লম্বা হাতা জামা পরা, সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত রোদ এড়ানো ভালো। কারণ সে সময় রোদ থাকে বেশি।

বুড়িয়ে যাওয়া ত্বকের খেয়াল : 

বুড়ো হতে থাকলে ত্বকেও আসে পরিবর্তন। ত্বকে বেশি কোলাজেন তৈরি হয় না এবং যে ইলাস্টিন ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে তাও দুর্বল হয়ে যায়। ত্বককোষ দ্রুত তৈরি বা হানি কোনোটিই হয় না সহজে। বুড়িয়ে যাওয়া ত্বক উজ্জীবিত করতে ঘষে ঘষে মরা ত্বক তুলে ফেলুন। শুকিয়ে যায় না এমন সাবান, ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন। রেটিনয়েড বা ভিটামিন সি ক্রিমও ব্যবহার করতে পারেন। রোদ থেকে দূরে থাকুন। ক্যাফেইন পান করবেন, নাকি ত্বকে প্রলেপ দেবেন

চা ও কফিতে যে ক্যাফেইন তা পানিশূন্য করে ত্বককে। ফলে ত্বক যায় শুকিয়ে। কিন্তু দেখা গেছে, ত্বকে চা পাতা বা কফি প্রয়োগ করলে ক্যাফেইন রোদ থেকে ত্বকের ক্ষতি রোধ করে। কিছু ত্বক ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়। ইঁদুরের মধ্যে পরীক্ষায় তা দেখা গেছে।

ধূমপান ত্বকের জন্য ভালো নয় :

ধূমপান মোটেও ঠিক নয়, ত্বকের জন্য খুব খারাপ। অকালে ত্বকে ভাঁজ পড়ে, ত্বক যায় শুকিয়ে। ধূমপানে ত্বকে কমে রক্ত চলাচল। ভাঙে কোলাজেন। কম কোলাজেন তাই ত্বকে কুঞ্চন। ঠোঁটের এই নড়াচড়া, ওঠানামা এসব ত্বকে ভাঁজ পড়তে সাহায্য করে। সিগারেটের শলাও ঠোঁটে লাগানো এর চর্চাতো হয়ই। তাই ধূমপান বর্জন ত্বকের জন্য জরুরিও বটে।

ত্বক পরিচ্ছন্ন রাখুন :

প্রতিদিনই ত্বক দূষণের সংস্পর্শে আসে। সিগারেটের ধোঁয়া, মোটরগাড়ির ধোঁয়া, ধোঁয়াসা ত্বক পরিছন্ন রাখা চাই এসব থেকে। ত্বকের চাহিদা অনুযায়ী একে প্রতিদিন মৃদু সাবান বা ওয়াশ দিয়ে ধোবেন মুখ, মৃত ত্বক কোষ সরাতে মুখ ঘষুন। এরপর প্রয়োগ করুন রেটিনয়েড ক্রিম বা ময়শ্চারাইজার। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য তৈলমুক্ত ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

শীতে ঘরে বাইরে :

হিম শীতল আবহাওয়া ও শীতল বাতাস শুষ্ক ত্বক আনে। একজিমা ও রজাসিয়া থাকলে অবস্থা শোচনীয় করে। কেবল বাইরের শীতল তো নয়, ঘরের শুষ্ক তাপ ত্বকের ওপর বিরূপ প্রভাবও ফেলে। ঘরে হিউমিডিফায়ার থাকলে ভালো। প্রচুর পানি পান, ময়শ্চারাইজার ব্যবহার। সানস্ক্রিন।

ভ্রমণে ত্বকের খেয়াল :

উড়োজাহাজের ভেতরে শুষ্ক ও কটকটে হয়ে যায় ত্বক কম আর্দ্র আবহাওয়ায়। উড়াল ভ্রমণে কফি ও মদ্যপান না করে শুধু পানি পান উত্তম। ভ্রমণের আগে, ভ্রমণের সময় ও পরে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। উড়ালের সময় মেকআপ না করা ভালো। ৩ আউন্স লোশন বরং রাখুন ব্যাগে।

ক্লোজআপে ভালো দেখাবে :

আলো বদলালে মুখের দেখনও বদলাবে। ফ্লুরোসেন্ট লাইটে ত্বকের টোন হলুদ বা লাল দেখাবে, এমনি আলোতে মৃদু হয় রং। টোন হয় কম। আয়না আলো সবই পরিবেশ দেয় দেখন চেহারার জন্য।#

 


Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.