তেলাপোকার স্প্রের বিষক্রিয়ায় দুই শিশুর মৃত্যু: পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান-এমডি গ্রেফতার

ক্রাইম (ঢাকা) রিপোর্টার: রাজধানীর বসুন্ধরায় তেলাপোকার স্প্রের বিষক্রিয়ায় দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন উর রশিদ।
তিনি বলেন, তারা হলেন আশরাফ ও ফরহাদ। দুজনে নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বর্ডার এলাকায় ঘুরতে থাকেন।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তিন দিন পর এমডি ও চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করা হয়।
হারুন অর রশিদ বলেন, আমরা দেশীয় ও বিদেশি বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছি, তেলাপোকা মারার ওষুধ কোন প্রক্রিয়ায় দিতে হয়, কীভাবে কার্যকরী হয়, এসব বিষয় সম্পর্কে আমরা জেনেছি। এটা শুধু বীজগুদাম অনাবাসিক এলাকা বড় গার্মেন্টস এলাকায় ব্যবহার করা যায়। এগুলো কখনও বাসা-বাড়িতে ব্যবহার করা যায় না। আর কেউ যদি একান্তই বাসায় বেশি তেলাপোকা থাকার কারণে ব্যবহার করতে চায়, সেটা যেন ৭২ থেকে ৯৬ ঘণ্টা ওষুধ ছিটিয়ে ২৪ ঘণ্টা বাসার দরজা-জানালা খোলা রাখতে হয়। এ প্রতিষ্ঠানটি কোনও কিছু না বলে শুধু টাকা ইনকামের লোভে এই কোম্পানির মালিক ও কর্মচারীরা স্বাস্থ্যঝুঁকির কোনও বিষয় বিবেচনায় আনেননি। কোনও নিরাপত্তা উপদেশ না দিয়ে অদক্ষ কর্মচারীদের দিয়ে কীটনাশক স্প্রে করে দুটি শিশুর অকাল মৃত্যু হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা আমাদের পুলিশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।
এই বিষাক্ত আইটেম কোথা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে, এটার অনুমোদন আছে কি না, রাসায়নিক অনুপাত ঠিক রয়েছে কি না, মানবদেহের জন্য কতটুকু ক্ষতির কারণ—এসব বিষয় যাচাই-বাছাই করা হবে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে গ্রেফতারের পর আমরা যতগুলো তথ্য তাদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছি, তারা কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি। আমরা মনে করি প্রায়ই কোনও না কোনও ভুলে অনেক পরিবারের অনেক মানুষই মারা যাচ্ছে।
পরিবারের সদস্যদের অনুরোধ জানিয়ে হারুন অর রশিদ বলেন, বাসায় অনেক সময় স্প্রে ও বিভিন্ন ধরনের লিকুইড ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আসলে এটা কতটুকু কার্যকর, শিশুদের স্বাস্থ্য উপযোগী গুণগতমান ঠিক রয়েছে কি না, সেসব দেখে বাসা-বাড়িতে এগুলো ব্যবহার করা উচিত। যে বাবা-মা সন্তান হারান, তারাই বোঝেন তাদের যন্ত্রণা।
তিনি বলেন, এমনিতেই দেশে বর্তমানে প্রচণ্ড গরম চলছে। জনজীবন অতিষ্ঠ। শিশুদের শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি লেগে আছে। আর এর মধ্যে বিষাক্ত তেলাপোকা তাড়ানোর জন্য এ ধরনের রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, নিহত দুই সন্তানের পরিবারের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তারাও চায় এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করা হোক।
এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত, এসব বিষয় আমরা খতিয়ে দেখবো বলে জানান গোয়েন্দা পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ক্রাইম (ঢাকা) রিপোর্টার স্বপন বালমেকী / ঢাকা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.