তেতুঁলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ-পর্ব -১

পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই।ভুয়া দাতা, জাল দলিল,খারিজ এবং ভুয়া ওয়ারিশানে সাব-রেজিস্ট্রারকে ম্যানেজ করেই জমি রেজিস্ট্রি করা হচ্ছে এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী অনেকের। এতে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকার শত শত মানুষের।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ১৭ সালের দিকে বেক্সিমকো কোম্পানি ডাঙ্গাপাড়া নামক স্থানে আমিরুলের কাছ থেকে জমি ক্রয় করে। তারপর থেকে শুরু হয় ভুয়া দাতা, জাল খারিজে জমি ক্রয়ের হিড়িক।
তেতুঁলিয়ার পাথর ঘাটা এলাকার সোরওয়াদ্দী ও আনোয়ার দুই সহোদরকে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে ভুয়া দাতা বানিয়ে ভজনপুরের হারুন প্রধানের বাড়িতে ৪ আগষ্ট ২০ইং দলিল নং ১৪৮৪/২০ এবং ২৭ জুলাই ২০ইং রাতে ১৪৩৬/২০ নং দলিল মুলে বেক্সিমকো কোম্পানির উদ্দেশ্যে শেখগজ মৌজার ৫৪৮ নং খতিয়ানের ৮.৪৩ একর জমি ক্রয় করেন, ওসমান কায়সার চৌধুরী । ধানমন্ডি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নিউমার্কেট ১২০৫ এলাকার ধানমন্ডি আ/এ, রোড নং- ০৫, বাসা নং- ৫০ এর মৃত সাবের আহাম্মদ চৌধুরীর পুত্র।
তিন ডিসেম্বর ১৯ ইং তারিখে তেতুঁলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে শেখগজ মৌজার ১৫৫ নং খতিয়ানের ৩ . ৭৯ একর জমি।রেকডীয় মালিক অধুনা মৃত পরবাশু মহাম্মদের শহিদুল ইসলাম কোন ওয়ারিশ পুত্র না হওয়া স্বত্বেও জাল আইডি কার্ড, ব্যবহার করে ৩৩০৯/১৯ নং দলিল মুলে ক্রেতা ওসমান কায়সার চৌধুরীর নামে রেজিস্ট্রি হয়।
আব্দুর ছাত্তার কালু মহাম্মদের ১ মাত্র পুত্র সাজিয়া ৪ ডিসেম্বর ১৯ ইং জেএল ৩২ মৌজা শেখগজ,২৯৫ এস এ খতিয়ানের ১৭ একর জমি ৩৩৫৮/১৯ নং আমমোক্তার দলিল সৃষ্টি করে।
অভিযোগ আছে সাব-রেজিস্ট্রার রাতের অন্ধকারে কার যোগে ভজনপুরের প্রভাবশালী হারুন প্রধানের বাড়িতে দলিল লেখক আব্দুর রহিম ও আনিছুরের সহযোগিতায় ভুয়া দাতা,ওয়ারিশান, জাল খারিজের, মাধ্যমে মোটা উৎকোচের বিনিময়ে এ দলিলগুলো সম্পাদন করেন। আরোও অভিযোগ, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তেতুঁলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের এক কর্মচারী বলেন,দলিল সম্পাদনে চেকিং ফি’র নামে ৮ শ’৫০ টাকা দিতে হয় অফিসকে। না দিলে বিভিন্ন সমস্যা দেখায় দলিল সম্পাদনে।
তেতুঁলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার রবিউল আলম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, কাগজপত্রাদি দেখে দলিল সম্পাদন করা হয়েছে। তারপরও যদি দাতা, কাগজপত্র ভুয়া হয় সেটা আদালত বুঝবে প্রয়োজনে আদালতে গিয়ে সাক্ষী দিব।
এদিকে অতিরিক্ত ফি আদায়ে মেতে উঠেছে দলিল লেখকরা। দলিল সম্পাদন করতে চুক্তি করে নেয় আগে। গত তিন নভেম্বর ২০ইং লোহাকাচি মৌজার চার লক্ষ টাকা, ৯৬ শতক জমির দলিল সম্পাদন খরচ বাবদ ৪৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় দলিল লেখক আকবর। দলিল লেখকের কাছে জিম্মি জমি ক্রেতা-বিক্রেতারা।
দলিল লেখক আকবর বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমি সেদিন অফিস করি নাই আমার জুনিয়র লেখকরা করেছে বিষয়টা কতদুর কি জানিনা।
দলিল লেখক সমিতির সভাপতি তেতুঁলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিস শামসুল হক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, চার লক্ষ টাকার মূল্যের জমি দলিল সম্পাদনে সর্বসাকুল্য খরচ ৩০ হাজার টাকা। ১৪ হাজার টাকা অতিরিক্ত নেয়া হয়েছে। আমি দলিল লেখকের সাথে কথা বলে জানি বিষয়টা কি।
জেলা রেজিস্ট্রার পঞ্চগড় মীর মাহাবুব মেহেদী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, এর আগেও ভুলত্রুটি পেয়েছি, তবে এই চাকুরীটা খুবই জটিল বিষয়ের অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা ছাড়া হয় না। উৎকোচ নেয়ার বিষয়টা এড়িয়ে গিয়ে আশ্বাস দেন, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর পঞ্চগড় প্রতিনিধি শেখ সম্রাট হোসাইন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.