তিস্তার চরের চিত্র এখন পাল্টে গেছে তামাক ছেড়ে ভুট্টা চাষ

জলঢাকা প্রতিনিধি: নীলফামারীর জলঢাকায় তিস্তার চরের চিত্র এখন পাল্টে গেছে। এক সময়ে অনাহারে – অর্ধাহারে দিন পার করা মানুষগুলো এখন আর কষ্টের কথা শোনান না। তারা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শ্রমদিয়ে চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। তিস্তার ধূ ধু বালুচরে ভুট্টার আবাদ যেন সবুজের সমারহে পরিণত হয়েছে।
তামাকের পরিবর্তে বিভিন্ন জাতের ভূট্টার আবাদে বেশি আগ্রহ হয়েছেন কৃষকেরা। এবছর ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকেরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন। উপজলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আবাদ হচ্ছে ভুট্টা। তিস্তা নদীর বালুচর ছাড়াও জলঢাকা পৌর এলাকাসহ উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী, কৈমারী, খুটামারা, বালাগ্রাম, গােলনা, মীরগঞ্জ, শিমুলবাড়ী ও ধর্মপাল ইউনিয়নের প্রত্যান্ত অঞ্চলগুলােতে ব্যাপকভাবে ভুট্টার আবাদ করছেন কৃষকেরা।
আবহাওয়া অনুকুল থাকলে এবার ভুট্টার ফলন বিপ্লব ঘটবে, এমনটাই প্রত্যাশা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের। স্থানীয় ভাবে ভুট্টা চাষিরা জলঢাকায় ভুট্টা সংরক্ষণ করার পাশাপাশি ভুট্টা প্রক্রিয়াজাত কারখানা চালু করা দাবি করছেন।
গতকাল সরেজমিনে গােলমুন্ডার হলদি বাড়ীর চর গেলে, কৃষক সাদিকুল ইসলাম ও আব্দুল জব্বার জানায়, ভুট্টা প্রক্রিয়াজাত কারখানা চালু করা হলে স্থানীয় বাজারগুলােতে ভুট্টার দাম নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি এলাকার কর্মহীন মানুষদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, চলতি মৌসুমে ১৭ হাজার হেক্টর ভুট্টা আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। যার লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছ প্রায় ১৬ হাজার মেট্রিকটন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহ মােহাম্মদ মাহফুজুল হক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, এবার আবহাওয়া অনুকুল থাকার কারণে অন্যবছরের তুলনায় ভূট্টার আবাদ কােন পােকার আক্রমণ না থাকায় ভালো ফলনরে আশা করা যাচ্ছে।
কৃষক রুহুল আমিন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানায়, গত বছরে যে জমি গুলােতে তামাক আবাদ করেছিলাম সে জমি গুলােতে এবার তামাকের পরিবর্তে ভুট্টা লাগিয়েছি। সবমিলিয় ৪ বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ করছি। আর সময় মতাে সার ও পানি দেয়ার ফলে ফলন ভাল হয়েছে। আশা করছি বিঘা, প্রতি ২৫ থেকে ২৭ মণ, এমনকি তারও বেশি ফলন হতে পারে এমন টা আশা করা যায়। তবে বাজার মূল্য টা ভাল পাওয়া গেল আগামীতে সব জমিতেই ভূট্টা লাগাবাে।
তিস্তা পাড়ের কৃষক আলিমুল ও মাজদা বেগম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানায়, আগে বছরের পর বছর ধরে এসব জমি পড়ে থাকতাে। বিভিন্ন এনজিও সংস্থা এবং কৃষি অফিস থেকে আমাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ায় এখন এসব পরে থাকা জমি গুলােতেই গম, ভূট্টা, ধান, মিষ্টি কুমড়া ও শাকসবজি সহ নানান ধরনের ফসল তুলতে পারছি।
তিস্তা পাড়ের মানুষরা অনাহার – অর্ধাহার থাকতাে। কচু খেয়ে দিনপার করতো। এখন পাল্টে গেছে তাদের জীবন চিত্র। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিস্তার বুকচিরে ফসল তুলে নিজেদের চাহিদা পুরণ করে বিক্রি করছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধি এরশাদ আলম।  #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.