তাসবিহ তৈরিতে রেকর্ড গড়তে চান : হায়দার

ব্রহ্মণবাড়িয়ার প্রতিনিধি: আল্লাহ তাআলার জিকির-বন্দনা করতে তাসবিহ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ‘তাসবিহ’ মূলত আরবি শব্দ। তাসবিহের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার গুণকীর্তন ও মহিমা প্রকাশ করা হয়।  সাধরণত একটা সুতার মধ্যে অনেকগুলো বোতাম বা গোটা গেঁথে তাসবিহ তৈরি হয়। অতীতে প্রাকৃতিক উপাদান বা বিভিন্ন গাছের ফল বা বীজ দিয়ে তাসবিহ তৈরি করা হলেও বর্তমানে প্লাস্টিক, পিতল, ধাতু ইত্যাদির সমন্বয়েও তাসবিহ-মালা তৈরি হতে দেখা যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের জালশুকা গ্রামের যুবক আব্দুল্লাহ আল হায়দার (৩০) সুদীর্ঘ তাসবিহ তৈরি করে এবার বিশ্বরেকর্ড গড়তে চাচ্ছেন। দুইজন সহযোগী নিয়ে দুই মাস কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে চার হাজার ফুট লম্বা তাসবিহ তৈরি করে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ নাম ওঠানোর আবেদন করেছেন তিনি।
সাদা, কালো, সোনালি, সবুজ  চার রঙের মিশ্রণে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০টি পুঁথি দিয়ে তাসবিহটি তৈরি করেছেন হায়দার। এটি তৈরিতে তার ব্যয় হয়েছে দেড় লাখ টাকা। তাসবিহটির ওজন ৬৭টি কেজিরও বেশি। হায়দারের বড় ভাই ফ্রান্স প্রবাসী আব্দুল্লাহ আল-হাসান তাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন।
এ বছরের জানুয়ারির দুই তারিখ থেকে তাসবিহ তৈরির কাজ শুরু করেন তিনি। মো. আরিফুল ইসলাম ও আল-মামুন নামে তার  দুই বন্ধু একাজে তাকে সহযোগিতা করেন।
বিটিসি নিউজের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে হায়দার বলেন, পুঁথি দিয়ে তৈরি তার এই তাসবিহটি এখন পর্যন্ত বিশ্বের সর্ববৃহৎ তাসবিহ। ধর্মীয় মূল্যবোধের পাশাপাশি বিশ্বরেকর্ড গড়ার লক্ষে এ তাসবিহ তৈরি করেছেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখেছি পাকিস্তানে ৬০ কেজি ওজনের একটি তাসবিহ রয়েছে। সে হিসেবে আমার তাসবিহটি লম্বা এবং ওজনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হবে। সুযোগ পেলে তাসবিহটি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানকে আমি উপহার দিতে চাই। যেহেতু তিনি তুরস্কের সবচেয়ে বড় মসজিদ নির্মাণ করেছেন, তাই তাসবিহটি তাকে দিতে চাই।
জালশুকা গ্রামের শরীফ আবাদুল্লাহ্ হারুন ও খোশ নাহার বেগম দম্পতির ছয় সন্তানের মধ্যে সবার ছোট হায়দার। পড়ালেখা শেষ করে এখন বাড়িতেই অলস সময় কাটছে তাঁর। তাই এই অলস সময়টাকে কাজে লাগাতে এমন কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন, যাতে রেকর্ড গড়া যায়। তাই মা খোশ নাহার বেগমের অনুমতি নিয়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই তাসবিহ তৈরির কাজ শুরু করেন। তার মা তাকে এই কাজে সময় দিচ্ছেন।
হায়দারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির একটি কক্ষের মেঝেতে কাপড়ের উপর তাসবিহটি রাখা হয়েছে। এটি রাখার জন্য কাঠ ও কাঁচ দিয়ে একটি বাক্স বানিয়েছেন। দিনের আলোতে বিভিন্ন রংয়ের আবরণে তাসবিহটি ঝিলিমিল করছে। বিশাল আকৃতির এ তাসবিহ দেখতে গ্রামের বিভিন্ন মানুষজন হায়দারের বাড়িতে আসছেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি মোঃ লোকমান হোসেন পলা।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.