তালেবানের আত্মসমর্পণের আহ্বান, পাঞ্জশির বিদ্রোহীদের পাল্টা হুঙ্কার

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাঞ্জশিরের বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছে তালেবান। তবে বিদ্রোহীরা বলছে, তালেবানের কাছে তারা আত্মসমর্পণ করবেন না। পাঞ্জশিরে তালেবান বিরোধী অন্যতম বিদ্রোহী আহমাদ মাসউদ বলেন, তালেবানের কাছে পাঞ্জশির হস্তান্তর করা হবে না। তারা এই এলাকা দখল করতে চাইলে আমাদের বাহিনী তাদেরকে প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত।
আফগানিস্তানের একেবারে শেষ প্রান্তের প্রদেশ পাঞ্জশির। পাঞ্জশির নদীর নামেই এই উপত্যকা। কাবুলের মাত্র ৬৫ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে হিন্দুকুশ পর্বতমালায় এর অবস্থান।
এই উপত্যকায় বসে বিদ্রোহের ঘোষণা দিয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত আফগান সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ। তার সঙ্গে আছেন গনি সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল বিসমিল্লাহ মোহাম্মদী ও আফগানিস্তানের প্রয়াত মোজাহিদীন কমান্ডার শাহ আহমদ মাসউদের ছেলে আহমদ মাসউদ।
বিদ্রোহীরা তালেবানকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের দাবি জানাচ্ছেন। সেই সরকারে তাদের জায়গা দিতে আহ্বান জানাচ্ছেন।
কিন্তু তালেবান বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের জন্য সময় বেঁধে দিয়েছে। ৪ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছে কাবুল বিজেতারা।
কিন্তু বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণে রাজি নন। অন্যতম বিদ্রোহী নেতা আহমদ মাসউদ আল আরাবিয়া নিউজকে বলেন, আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নকে মোকাবেলা করেছি, তালেবানকেও মোকাবেলা করতে সক্ষম হব। তালেবান পাঞ্জশির দখল করতে চাইলে যুদ্ধ অনিবার্য।
তবে এই বিদ্রোহী নেতা এটাও বলেছেন যে, তালেবান যদি আফগানিস্তানে শান্তি এবং নিরাপত্তার শর্ত পূরণ করতে পারে তাহলে তিনি তার বাবাকে হত্যার জন্য তালেবানকে ক্ষমা করে দেবেন।
উল্লেখ্য, আহমেদ মাসউদের বাবা শাহ আহমদ মাসউদের নেতৃত্বে পাঞ্জশিরের যোদ্ধারা আশির দশকে সোভিয়েত বাহিনী, এরপর নব্বই দশকে তালেবানকে ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন। কমিউনিস্টবিরোধী যুদ্ধে অসমসাহসিকতার জন্য তাকে ‘পানশিরের সিংহ’ নামে ডাকা হয়। আফগানদের ‘জাতীয় বীর’ হিসেবেও তার নাম উচ্চারিত হয়। শাহ আহমদ মাসউদ তালেবানের পূর্বের শাসনামলে আল-কায়েদার ছদ্মবেশী অনুচরের হাতেই নিহত হন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান বলছে, পাঞ্জশিরে লড়াই-ই হতে পারে একমাত্র সমাধান। তালেবানের মধ্যে আগেরবারের শাসনে পাঞ্জশিরকে পরাস্ত করতে না পারার ক্ষোভ রয়েছে। রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিসেবে নিজেদেরকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করে এবার আরও শক্তিশালী হয়ে কাবুল মসনদে এসেছেন তারা। ফলে তালেবানের বিপুল শক্তির কাছে পাঞ্জশিরের বিদ্রোহীরা থমকে যেতে পারেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.