তাবলিগের দু’গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, চরম উত্তেজনা

ঢাকা প্রতিনিধি: আজ শনিবার রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় তাবলিগ জামাতের বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ সকাল ৮টার দিকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা।

এসময় একটি পক্ষ সড়কের একপাশে অবস্থান নেয়ায় উত্তরাঞ্চলগামী সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। অপরদিকে আব্দুল্লাহপুরেও অবস্থান নিয়েছে আরেকটি পক্ষ। এতে করে মহাখালী থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

শেষ সংবাদ পাওয়া পর্যন্ত দুই পক্ষই মুখোমুখি অবস্থান করছে এবং ওই এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।

মওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা জানিয়েছেন, তাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ থেকে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা হওয়ার কথা তুরাগ নদীর তীরে বিশ্বইজতেমা ময়দানে। এদিকে দেওবন্দপন্থী মওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা আগে থেকেই ইজতেমা মাঠে অবস্থান করার কারণে সাদপন্থীরা ময়দানের ভেতরে প্রবেশ করতে পারছেন না। আর এ কারণেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে তাবলিগের দুই গ্রুপের মধ্যে অনেক দিন থেকেই বিরোধ চলছে। তাদের মধ্যে বিদ্যমান দ্বন্দ্ব নিরসনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েছেন। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, ইজতেমা ময়দানের ভেতরে তারা কোনো ধরনের অনুষ্ঠান। কিন্তু তারা সেটিকে উপেক্ষা করে ইজতেমা ময়দানের ভেতরে এবং বাইরে অবস্থান নেয়।

তাবলিগ সংশ্লিষ্টসূত্রে জানা গেছে, ৩০ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ দিনের জোড় (সম্মিলন) এবং আগামী ১১ জানুয়ারি থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত তিন দিনের ইজতেমা করার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের তাবলিগ জামাতের মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। অপরদিকে তাবলিগের দেওবন্দপন্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন, তারা ৭ ডিসেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জোড় এবং আগামী ১৮ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত তিন দিনের ইজতেমা করবেন।

এই বিবাদের জেরে আগে থেকেই ইজতেমা ময়দানে দেওবন্দিপন্থীরা মাঠ দখল করে পাহারা দিচ্ছে বলে গত বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন সাদপন্থীরা। এক্ষেত্রে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন সাদপন্থী তাবলিগের অনুসারীরা।

টঙ্গীর তুরাগ নদের পাড়ে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান ঘিরে তাবলিগ জামাতের দু’টি পক্ষের কর্মসূচি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতির আশঙ্কা করে ভোটের আগে ওই ময়দানে যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা দেয় নির্বাচন কমিশন।

বৃহস্পতিবার ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্ম-সচিব ফরহাদ আহম্মদ খান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের তরফ থেকে ইসিতে করা আবেদনে টঙ্গী ময়দানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতির আশঙ্কা করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.