তাপপ্রবাহে দিল্লিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২০

 

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। গরমের কারণে এখন পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এমন অবস্থায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৎপর হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বুধবার (১৯ জুন) কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নড্ডা দিল্লির সব সরকারি হাসপাতালকে বিশেষ নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন, যাতে গরমে অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসায় বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিশেষ করে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিকিৎসা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নয়াদিল্লির সঙ্গে উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অংশজুড়ে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে, যা মানুষকে অসুস্থ করে তুলছে। দিল্লির বিভিন্ন হাসপাতালে বেশ কয়েকজন রোগীকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে, যাদের অনেকেই হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত। দিল্লির তিনটি বড় হাসপাতালে গরমের কারণে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২০ জনের। কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায় সরকারি হাসপাতালগুলোকে হিটওয়েভ ইউনিট চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দিল্লির তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে রয়েছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি, যা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি। আপাতত স্বস্তির কোনও খবর দিতে পারেনি আবহাওয়া দফতর। গরমের কারণে দিল্লিতে পানির সংকটও দেখা দিয়েছে।
দিল্লির বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষও একটি পৃথক গাইডলাইন প্রকাশ করেছে। এতে হিটস্ট্রোক এবং গরমজনিত অন্যান্য অসুস্থতার হাত থেকে রক্ষা পেতে সাধারণ মানুষের করণীয় বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ২৭ মে থেকে দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে গরমজনিত বিভিন্ন অসুস্থতা নিয়ে ৪৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে সাত জন গত দু’দিনের মধ্যে মারা গেছেন। সফদরজং হাসপাতালে গরমের কারণে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে পাঁচ জনই মারা গেছেন গত বুধবার। লোকনায়ক হাসপাতালে গরমজনিত কারণে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালের সুপারিনটেন্ডেন্ট অজয় শুক্লা বলেন, হিটস্ট্রোকে মৃত্যুর হার অনেক বেশি, প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগীদের অনেক দেরিতে হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে, যে কারণে তাদের বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না। হিটস্ট্রোক নিয়ে সচেতনতার অভাবও রয়েছে। মানুষ বুঝতে পারছেন না, তারা হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত এবং উপসর্গগুলিকে অন্য কোনও রোগের উপসর্গ বলে মনে করছেন। রোগী সংজ্ঞা হারানোর পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.