তাইওয়ানে আলোচিত নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু, কড়া নজর চীনের

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্র-চীন ও যুক্তরাষ্ট্র-তাইওয়ানের মধ্যকার সাম্প্রতিক সম্পর্ক বিবেচনায় তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
স্থানীয় সময় আজ শনিবার সকালে দেশটিতে নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। এমন এক সময়ে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যার আগে চীন ধারাবাহিকভাবে তাইওয়ানকে চীনের সঙ্গে একীভূত করে নেওয়ার কথা বলেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, নানা কারণেই চীন এই নির্বাচনের ওপর কড়া নজর রাখবে।
তাইওয়ানে প্রথমবার স্বৈরতন্ত্র বিলুপ্ত হয় ১৯৯৬ সালে। সে বছরই দেশটির প্রথম গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরেও দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চীন এই নির্বাচনকে তাইওয়ানের জনগণের জন্য ‘যুদ্ধ অথবা শান্তির’ মধ্যে যেকোনো একটি পছন্দ বেছে নির্বাচন বলে আখ্যা দিয়েছে।
তাইওয়ানে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি) স্বাধীন তাইওয়ানের পরিচয় এগিয়ে নেওয়ার পক্ষপাতী। দলটি তাইওয়ানকে একীভূত করে নেওয়ার জন্য চীনের যে দাবি, তা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে। এই নির্বাচনে দলটির প্রার্থী বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে। ডিপিপি চাইছে এই নির্বাচনে জিতে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করতে।
নির্বাচনের আগে থেকেই চীন বারবার লাই চিং-তেকে ‘বিপজ্জনক বিচ্ছিন্নতাবাদী’ বলে আখ্যা দিয়েছে। চীনের অভিযোগ, লাই আলোচনার জন্য চীনা আহ্বান বারবার প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে লাই বলেছেন, তিনি তাইওয়ান প্রণালিতে শান্তিরক্ষা এবং দ্বীপ দেশটির প্রতিরক্ষা জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার সকালে বলেছে, আবারও স্পর্শকাতর তাইওয়ান প্রণালিতে চীনা বেলুন দেখেছে, যার মধ্যে একটি তাইওয়ানের ওপর দিয়ে উড়ে গেছে। গত মাসে তাইওয়ান প্রণালিতে বেলুন ওড়ানোর ঘটনাকে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ এবং বিমান চলাচলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা করেছে।
লাইয়ের বিপরীতে এই নির্বাচনে লড়ছেন তাইওয়ানের বৃহত্তম বিরোধী দল কুওমিনতাংয়ের (কেএমটি) হউ ইউ-ইহ এবং তাইওয়ান পিপলস পার্টির (টিপিপি) নেতা ও তাইপেইয়ের সাবেক মেয়র কো ওয়েন-জে। হউ চীন ও তাইওয়ানের জনগণের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক তৈরির পক্ষে। তিনি চান চীনের সঙ্গে আলোচনা আবারও শুরু করতে। হউ তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ লাইকে তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নবাদের সমর্থক বলে অভিহিত করেছেন। বিপরীতে লাই হউকে বেইজিংপন্থী বলে অভিযুক্ত করেছেন, তবে হউ এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
অপর প্রার্থী কো ওয়েন-জে তরুণদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। তিনি তাইওয়ানের জনগণের দৈনন্দিন জীবনের ওপর তাঁর মূল ফোকাস নির্ধারণ করেছেন। তিনিও তাইওয়ানকে চীনের সঙ্গে যুক্ত করার পক্ষে। তবে তিনি বলেছেন, এই একত্রীকরণ তাইওয়ানের গণতন্ত্র ও জীবনযাত্রার সুরক্ষার বিনিময়ে নয়, হতে হবে উইন-উইন পরিস্থিতিতে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.