তরুণ-তরুণীদের পদচারণায় মুখর উত্তরাঞ্চলের শিল্প বাণিজ্য বিকাশে রাজশাহীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে ৩১ একর জায়গা জুড়ে সাড়ে তিনশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে উঠেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক। তরুণদের কর্মসংস্থানের অপার সম্ভাবনা এই হাইটেক পার্ক।
এখানে প্রায় ১৪ হাজার যুব’র কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি চূড়ান্ত পর্যায়ে। এরইমধ্যে তরুণ-তরুণীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে এই হাইটেক পার্কটি। এখানে শুরু হয়েছে বিশ্বের নামীদামী সাইট রক্ষণাবেক্ষণের কাজ, সফটওয়্যার ডেভেলপ ও বাইরের দেশের চাহিদামতো ফাইল নিয়ে বিভিন্ন কাজ শুরু করে দিয়েছেন তরুনরা।
এখানে রয়েছে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ইনকিউবেশন সেন্টার ও জয় সিলিকন টাওয়ার। কর্মসংস্থানের পাশাপাশি এখানে তৈরি হচ্ছে উদ্যোক্তা। উদ্যোক্তারা তৈরি করছেন আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স প্রোগ্রাম, অ্যাপ ও ভেন্ডিং মেশিনসহ অনেক কিছু। দেশে আনছেন বৈদেশিক মুদ্রা। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কের তিনটি স্থাপনা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্যোক্তারা জানান, সারা বিশ্বের ৪০০ এর বেশি ক্লায়েন্টের সঙ্গে কাজ করছি। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা অনেক ভালোভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে। যার কারণে আমরা বাইরে থেকে অনেক কাজ নিয়ে আসতে পারছি। আরেক উদ্যোক্তা জানান, শুন্য হাতে শুরু করে এখন বছরে ৭০-৮০ লাখ টাকা বাৎসরিক আয় হচ্ছে তার। তরুণদের এতবড় একটা প্লাটফর্ম করে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আরেক উদ্যোক্তারা। তারা বলেন, এ হাইটেক পার্কের কারণে আমরা নিজেরা কর্মসংস্থান করতে পারছি। চাকরির পেছনে দৌঁড়াতে হচ্ছে না। আমরা নিজেরাই প্রতিষ্ঠিত।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, উন্নত দেশগুলো ফ্রিল্যান্সের মাধ্যমে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। সেক্ষেত্রে আমাদের দেশের তরুণরাও যেন এই সেক্টরে এগিয়ে যেতে পারে তার জন্য সরকার হাইটেক পার্ক নির্মাণ করেছে। এর মাধ্যমে নতুন অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। আশা করছি উত্তরাঞ্চলের শিল্প বাণিজ্য বিকাশে এ আইটি পার্ক ব্যাপক ভ‚মিকা পালন করবে।
রাজশাহী হাইটেক পার্কে মোবাইল গেমস এবং অন্যান্য সফটওয়্যারসেবা দিতে আরেক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে ‘টেক রাজশাহী’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাহফুজুর রহমান। তিনি জানান, তার প্রতিষ্ঠানে এখন ১৪২জন কর্মী আছে। হাইটেক পার্কটির অবস্থান এবং অন্যান্য আধুনিক সুবিধার পাশাপাশি এখানে একটি অফিস থাকা মানে প্রতিষ্ঠানের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ অনেকখানি বেড়ে যাওয়া।
শীর্ষ দুটি ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস এ্যামাজন ও ওয়ালমার্টের স্টোর পরিচালনা প্রতিষ্ঠানটির সেবাগুলোর অন্যতম। এ ছাড়াও রোবোটিক্স টেকনোলজি, এআই সমাধান এবং পরিষেবা নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী ফজলুল হক জানান, এলাকাভিত্তিক উন্নয়ন নিশ্চিতের মাধ্যমে জ্ঞানভিত্তিক তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রায় ৩৩৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয়ে পদ্মা নদীর তীরে রাজশাহী মহানগর সংলগ্ন নবীনগর এলাকায় প্রায় ৩১ একর জমির ওপর পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছে।
অবকাঠামো উন্নয়ন কাজের মধ্যে রয়েছে- ভূমি উন্নয়ন, ২ লাখ ৭০ হাজার বর্গফুট আয়তনের একটি দশ তলা সিলিকন টাওয়ার, একটি সাবস্টেশন ভবন, অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও ড্রেন, সীমানা প্রাচীর এবং উচ্চ গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট। ৬২ হাজার বর্গফুটের আইটি ইনকিউবেশন সেন্টারে একটি অত্যাধুনিক অফিস ভবনসহ বহুমুখী প্রশিক্ষণ সুবিধা, উচ্চ-মানের স্টার্ট আপ, বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎসের ব্যবস্থা রয়েছে।
এছাড়াও, গত ১৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্কে ১৭২ আসনের স্টার সিনেফ্লেক্স চালু হয়েছে। সিনেমা দেখানোর পাশাপাশি, সিনেপ্লেক্সটি সংশ্লিষ্ট সংস্থার দ্বারা প্রকল্প প্রশিক্ষণ এবং অডিও-ভিজ্যুয়ালের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো.মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.