ঢাকাই জামদানি শাড়ি কানে নিয়ে এলেন বাঁধন

বিটিসি বিনোদন ডেস্ক: কান উৎসবের অফিসিয়াল সিলেকশনে বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র ‘রেহানা মরিয়ম নূর’, তাই বিশ্বমঞ্চে ঢাকাই জামদানি শাড়ি পরে হাজির হয়েছেন আজমেরী হক বাঁধন। ছবিটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারের জন্য তিনি পরেছেন আড়ং-এর শাড়ি ও অলঙ্কার।
গত বুধবার (০৮ জুলাই) কানের পালে দে ফেস্টিভাল ভবনের সাল দুবুসি প্রেক্ষাগৃহের মঞ্চে ঢাকাই জামদানি শাড়ি পরে হাজির হন বাঁধন। এখানেই আঁ সার্তে রিগা বিভাগে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত ছবিটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়।
শাড়িটি প্রসঙ্গে বাঁধন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘কানমঞ্চে ঢাকাই জামদানি পরতে পেরে দারুণ লেগেছে আমার। আর জামদানির বেলায় আড়ং ছাড়া অন্য কিছু মাথাতেই আসে না! স্বল্প সময়ে বিশেষ একটি শাড়ি তারা তৈরি করে দিয়েছে, এজন্য তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আমার শাড়ি ও জুয়েলারি তৈরির জন্য তারা অনেক পরিশ্রম করেছেন।’
ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার শেষ হতেই সাল দুবুসিতে উপস্থিত দর্শকরা দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ ছবির কলাকুশলীদের। এ সময় বাঁধভাঙা আনন্দে কান্নায় ভেসেছেন বাঁধন। ১ ঘণ্টা ৪৭ মিনিটের ছবিটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি। রেহানার জেদ, দৃঢ় মনোভাব ও বিচক্ষণতার সঙ্গে বিভিন্ন ভাষাভাষির দর্শকরা নিজেদের একাত্ম করতে পেরেছেন। তাই রেহানা জয় করে ফেলেছে সবার মন।
সাল দুবুসিতে গতকাল বৃহস্পতিবার (০৯ জুলাই) কান উৎসবের তৃতীয় দিনে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট) ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ আবার দেখানো হয়। এদিনও ১ হাজার ৬৮ আসনের প্রেক্ষাগৃহটি পরিপূর্ণ ছিলো দর্শকে। প্রদর্শনী শেষে সবাই ছবিটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (০৮৯জুলাই) সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা) কান শহরের মাল্টিপ্লেক্স ‘সিনেয়ুম অরা’য় এর আরেকটি প্রদর্শনী হয়েছে।এখানেও বেশ উৎসাহ নিয়ে ছবিটি দেখতে সমবেত হন দর্শকরা।
কান উৎসব আয়োজকদের আমন্ত্রণে জেব্লিউড ম্যারিয়ট হোটেলে উঠেছেন সাদ ও বাঁধন। অভিনন্দনের বন্যায় ভেসে হোটেলে ফেরার পথে সাগরপাড়ে দাঁড়িয়ে ঢাকাই জামদানি পরে বেশকিছু ছবি তুলেছেন বাঁধন। হোটেলের লবিতেও আলোকচিত্রীর ক্যামেরায় তাকিয়েছেন তিনি।
সাদ-বাঁধনের পাশাপাশি কানসৈকতে এসেছেন ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ ছবির প্রযোজক জেরেমি চুয়া, নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হক বাবু, চিত্রগ্রাহক তুহিন তমিজুল, প্রোডাকশন ডিজাইনার আলী আফজাল উজ্জল, শব্দ প্রকৌশলী শৈব তালুকদার ও কালারিস্ট চিন্ময় রয়। উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে তারা সবাই সাল দুবুসিতে ছিলেন।
ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছেন ও সম্পাদনা করেছেন সাদ নিজেই। একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক রেহানা মরিয়ম নূরকে কেন্দ্র করে এর গল্প। কর্মস্থলে ও পরিবারে তাল মেলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় তাকে। শিক্ষক, চিকিৎসক, বোন, কন্যা ও মা হিসেবে জটিল এক জীবনযাপন করেন তিনি। এক দিন সন্ধ্যায় একজন অধ্যাপকের কক্ষ থেকে এক ছাত্রীকে কাঁদতে কাঁদতে বের হতে দেখেন রেহানা। এ ঘটনার পর ক্রমে একরোখা হয়ে ওঠে তার মন। ঐ ছাত্রীর পক্ষ হয়ে সহকর্মীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু একই সময়ে তার ছয় বছর বয়সি মেয়ের বিরুদ্ধে স্কুল থেকে রূঢ় আচরণের অভিযোগ ওঠে। অনড় রেহানা তথাকথিত নিয়মের বাইরে গিয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী ও নিজের মেয়ের জন্য ন্যায়বিচারের লড়াই করতে থাকেন।
আঁ সার্তে রিগা’র বিচারকদের সভাপতি আন্দ্রেয়া আর্নল্ড বুধবার সাল দুবুসিতে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ দেখেছেন। এবারের আসরে এই বিভাগে স্থান পেয়েছে ২০টি ছবি। এগুলো দেখে পুরস্কারের জন্য বিচারকদের নির্বাচিত তালিকা ঘোষণা করা হবে আগামী ১৬ জুলাই। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.