ড্রাগণ চাষ করে সফল চাঁপাইনবাবগঞ্জের মিলন


চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট মোহনবাগ সাগরপাড়ায় পারিবারিকভাবে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ড্রাগণ ফলের চাষ করে বেশ সফলতা অর্জন করেছেন আতিকুর রহমান মিলন।

পারিবারিক চাহিদা পুরণ করার পরেও ড্রাগণ ফল বাজারে বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। তাঁকে অনুসরণ করে অনেকেই আগ্রহী হয়ে মাল্টা, পেয়ারা, বরই বাগান তৈরী করে নিজে সাবলম্বী হয়েছেন, ঘুঁচেছে বেকারত্ব।

আতিকুর রহমান মিলন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে মাষ্টার্স পাশ করে চাকুরী নামের সোনার হরিণের পিছনে না ছুটে ব্যবসা ও কৃষিকাজকে বেছে নিয়ে বেশ সফলতা অর্জন করেছেন।

চাকুরী না করে শিক্ষা জীবন থেকেই যেন তার মনে নেশা জন্মেছিল চাকুরীর পিছনে না ছুটে কৃষি কাজে জীবন গড়ার। প্রথমে কিছুটা কষ্ট ও আশংকা কাজ করলেও আজ বেশ সফলতা অর্জন করেছেন মিলন।

ফল চাষ করে যেমন লাভবান হয়েছেন, তেমনি তিনি বেকার যুবকদের মাঝে তার সাফল্যের কথা আলোচনা করে উদ্যোক্তা তৈরী করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

এখন তিনি নিজেই শত শত মানুষকে কাজে লাগিয়ে সে পরিবারগুলোর অভাব ঘুঁচিয়েছে। বিভিন্ন জাতের ফল চাষে সফলতা, উদ্যোক্তা তৈরী সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষসহ কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নজরও কেড়েছেন মিলন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পুঠিমারির বিলে ভবিষ্যতে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে এখানে “ন্যাচারাল সেভ” ব্যানারে ৭কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রাস্তার দুই ধারে প্রায় ৩ হাজার ২৫০টি তাল গাছের বীজ বপন করেছেন তিনি। নওগাঁ জেলার মতো এখানেও দেখা যাবে সারি সারি তাল গাছ।

কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নিতে পারবে কৃষাণ-কৃষাণীরা। তাল গাছের ছায়ায় বসে ক্লান্তি দুর করতে পারবেন পথচারীরা। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ করে চলেছেন।

ফল চাষী মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মোস্তাক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আমি আতিকুর রহমান মিলন’র পরামর্শে ১২’শ মাল্টার গাছ ও সাড়ে ৮’শ বরই গাছ লাগিয়েছি। এবছরেই আমি বরই বিক্রী করে প্রায় তিন লক্ষ টাকা পাব বলে আশা করছি। আগামীতে গাছের পরিমান আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।

আতিকুর রহমান মিলন জানান, পারিবারিকভাবে ১৫ কাঠা জমিতে ড্রাগণ চাষ করেছি। “যত্ম করলে রতœ মিলে” সময়মতো গাছের খাবার, প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরী কীটনাশক ও বালাইনাশক প্রয়োগসহ সার্বিক পরিচর্যা করা হচ্ছে। এটি স্বাস্থ্য সম্মত কীটনাশক মুক্ত ফল। এখানে প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ করে পরিবারের চাহিদা মিটানোর পর প্রথম মৌসুমে বাজারে ফল বিক্রী করে খরচের প্রায় সিংহভাগ টাকা উঠে এসেছে।

আগামীতে বাংলাদেশ ফল ভান্ডার দেশে রুপান্তরিত হবে এই আশা রাখছি। আমার পরামর্শ নিয়ে ৮-১০ জন ফলের বাগান করেছে। এছাড়াও আমার উদ্যোগে তিনজন কেঁচো কম্পোষ্ট সার তৈরী অব্যাহত রেখে লাভবান হয়েছে।

এছাড়াও এখানে দেখা গেছে ড্রাগণ বাগানে নতুন করে লাগান ভাগুয়া আনার, এ্যাপ্রিকট, মাল্টা, এ্যাভোকাডো, আলু বোখারা, লটকন, পেঁপে, তিনফল, বারোমাসি আম ফলের গাছ। এসব ফল ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হাড়ক্ষয়, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধ ও প্রতিশেধক হিসেবে কাজ করে থাকে।

এছাড়াও আতিকুর রহমান চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থানায় প্রায় ৫০০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে বারোমাসি আম, পেয়ারা, মাল্টা, কমলা, ড্রাগণসহ লাভজনক বিভিন্ন ফলের চাষাবাদ করে সফলতা অর্জন করেছেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.