ভূমি মন্ত্রণালয়: ডিজিটাল ভূমিসেবা সুষ্ঠুভাবে প্রদানের লক্ষ্যে দক্ষ জনবল নিয়োগ করার প্রস্তাব ইতিমধ্যে প্রদান করা হয়েছে – যা এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে। চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী এবং ফেনী জেলায় অনুষ্ঠিতব্য ৪ দিন ব্যাপী ই-নামজারি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য প্রদানকালে মাননীয় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এ কথা বলেন।
ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেবার পর তিনি ৯০ দিনের কর্মসূচী গ্রহণ করেন। এই ফেব্রুয়ারির মধ্যই সারা দেশে ই-নামজারি প্রশিক্ষণ শেষ হবে। এটি মূলত প্রথম ৯০ দিনের কার্যক্রমের একটি অংশ। এছাড়া, মৌজা ম্যাপের ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম খুব দ্রুত শেষ হচ্ছে – ইতিমধ্যে প্রায় এক কোটি বিশ লক্ষ ম্যাপিং শেষ হয়েছে। ভূমি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার জন্য দেশব্যাপী ভূমি সপ্তাহ এবং ভূমি উন্নয়ন মেলা পালন করা হবে।
মাননীয় মন্ত্রী আরও বলেন, জনগণকে হয়রানি মুক্ত ভূমিসেবা প্রদানের লক্ষ্যে ইএফটি সেবাও চালু করা হচ্ছে – এর মাধ্যমে অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তরা ঘরে বসেই ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন। এছাড়া প্রবাসীদের সেবা দেওয়ার জন্যও একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার কথাও তিনি বলেন।
উল্লেখ্য, এটুআই এবং ভূমি সংস্কার বোর্ডের সহায়তায় ই-নামজারি কোর্স পরিচালিত করা হচ্ছে। উক্ত কোর্সে সহকারী কমিশনার (ভূমি), কানুনগো, সার্ভেয়ার, নামজারি সহকারী সহ মাঠ পর্যায়ে ভূমি সেবা প্রদানরত সরকারি কর্মচারীদের উক্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ‘ই-নামজারি’ অ্যাপ্লিকেশনটি মূলত ‘জমি’ নামক জাতীয় ভূমি-তথ্য ও সেবা অনলাইন প্ল্যাটফর্মের একটি অংশ। এরই মধ্য উপরোল্লিখিত পাঁচটি জেলার কয়েকটি উপজেলায় ই-নামজারি কার্যক্রম চালু হয়েছে। বাকিগুলোতে ই-নামজারি চালু করার উদ্দেশ্য জনবল আজ প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্বোধন করা হয়।
ভিডিও কনফারেন্সে সংশ্লিষ্ট পাঁচটি জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়, ই-নামজারি অ্যাপ্লিকেশনটি খুবই ব্যবহার বান্ধব। এছাড়াও, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভূমি সেবা প্রদানকারীদের নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রুপ খোলা হয়েছে – যেন প্রথমে তাঁরা নিজ সমস্যার কথা একে অপরকে জানানোর মাধ্যমে দ্রুত সমাধান পেতে পারেন। সেই সাথে, অ্যাপ্লিকেশনটির ব্যবহার পদ্ধতি ইউটিউবে আপলোড করা আছে। ভূমিসেবা গ্রহণকারীদের নির্বিঘ্ন সেবা প্রদানের সুবিধার কথা বিবেচনা করেই তাঁরা এই অনানুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেবা সহজীকরণ কার্যক্রমের এক ধরণের বাস্তবায়ন।
ভিডিও কনফারেন্সে মাননীয় মন্ত্রী জেলার গুলোর বিভিন্ন সমস্যার কথাও জানতে চান। তিনি বলেন আমাদের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমাদের সবার উচিত যার যে দায়িত্ব সেখানে সর্বোচ্চ ঢেলে দেওয়া। সবাই নিজ নিজ স্থান থেকে মনোযোগ দিয়ে কাজ করলে সমস্যা আর থাকবেনা। এসি ল্যান্ডদের দাপ্তরিক কাজের সুবিধার্থে গাড়ি প্রদান করা হয়েছে উল্লেখ করে মাননীয় মন্ত্রী বলেন, নতুন জনবল নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত পাশের উপজেলায় ভাগাভাগি করে দায়িত্ব পালন করাটা আগের চেয়ে অনেক সহজ হবার কথা। জনবলের অভাব পূরণে চলমান পদক্ষেপ গুলোর কথাও তিনি জানান।
মাননীয় মন্ত্রী বলেন, তিনি টিমে বিশ্বাসী। তিনি আশা ব্যক্ত করেন সবাই মিলে ভালোভাবে কাজ করলে অবশ্যই ভূমি সেক্টরের বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত সমাধান করা সম্ভব। মাননীয় মন্ত্রী বলেন, কাজের স্বার্থে তাঁর দরজা সবার জন্য খোলা। বিভিন্ন জায়গায় উক্ত এলাকাভিত্তিক বিশেষ সমস্যাও থাকতে পারে উল্লেখ করে মাননীয় মন্ত্রী বলেন মাঠ পর্যায় থেকে তিনি আইডিয়া নিতে ইচ্ছুক। জনস্বার্থে যেকোনো কার্যকরী আইডিয়া গুরুত্বের সাথে গৃহীত করে কার্যকর করা হবে বলে তিনি বলেন। মুজিববর্ষ শুরু হবার আগেই ভূমি মন্ত্রণালয়কে একটি পর্যায় নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে মাননীয় মন্ত্রী দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেন।
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে ভূমি মন্ত্রী ছাড়াও, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভূমি সচিব মোঃ মাক্ছুদুর রহমান পাটোয়ারী। অনুষ্ঠানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তা অংশ নেন। এছাড়া, ভিডিও কনফারেন্সের মাঠ পর্যায়ের অংশে উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকবৃন্দ সহ প্রশিক্ষণ তত্ত্বাবধানরত প্রশিক্ষক, সংশ্লিষ্ট কালেক্টরেটের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং প্রশিক্ষণার্থীবৃন্দ। ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন।
(ভূমি মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সরকারের ভূমি ব্যবস্থাপনা , ভূমি কর আদায় এবং ভূমি সংক্রান্ত সেবা প্রদানের দায়িত্বে নিয়োজিত। মাননীয় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দুর্নীতিমুক্ত ও জনবান্ধব ভূমিসেবা নিশ্চিত করতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।) #( প্রেস বিজ্ঞপ্তি )#
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.