টেনিস বল’র পরিবর্তে মোংলা বন্দরে পৌঁছলো ৪ কন্টেইনার (পোস্তদানা) আফিম!

বাগেরহাট প্রতিনিধি: মোংলা বন্দর জেটিতে ঘোষণা বর্হিভূত, আমদানী নিষিদ্ধ চার কন্টেইনার আফিম (পোস্তদানা) জব্দ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ আগষ্ট) দুপুরে এই আফিম জব্দ করে কাস্টম কর্তৃপক্ষ।

মোংলা কাস্টম হাউজের কমিশনার মোঃ হোসেন আহম্মেদ এ তথ্য বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে নিশ্চিত করে বলেন, নিষিদ্ধ এই পণ্য আমদানী কারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার আয়শা ও তাজ ট্রেডার্স এবং স্থানীয় শিপিং এজেন্ট খুলনার মেসার্স ওশান ট্রেড লিমিটেডের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আফিম জব্দের বিস্তারিত বিষয়ে তিনি বলেন, টেনিস বল আমদানীর কথা থাকলেও আমদানীকারকরা আফিম আমদানী করছেন- এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে (আমদানী পণ্য নাম্বার-২০২০/৫৩৫) এই নিষিদ্ধ পণ্য জব্দ করেছেন তারা। মোংলা বন্দরের ২ নম্বর জেটিতে আমদানীকৃত ২০ ফিটের কন্টেইনার নাম্বার হলো- MRKU-7818271, MRKU-8117700, MRKU-1170996 I MRKU-6793517। 

মোংলা বন্দরের সহকারী ট্রাফিক ম্যানেজার মোঃ সোহাগ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আমদানী নিষিদ্ধ এই পণ্য নিয়ে গত সোমবার (১০ আগস্ট) সাইপ্রাস পতাকাবাহী জাহাজ ‘এম ভি স্যানজোর্জিও’ মোংলা বন্দরের জেটিতে আসে। জাহাজটিতে থাকা ৩১৭টি কন্টেইনারের মধ্যে চারটি কন্টেইনারে আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য আফিম (পোস্তদানা) আছে, এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জাহাজটি বন্দর জেটিতে আসার আগেই ওই পণ্যবাহী কন্টেইনার আটক করে কাস্টম কর্তৃপক্ষ।

এরপরে গত সোমবার (১০ আগস্ট) বন্দর জেটিতে আসার পরেই ২০ ফিটের-MRKU-7818271, MRKU-8117700, MRKU-1170996 I MRKU-6793517 -এই কন্টেইনারগুলোকে সংরক্ষিত করে রাখা হয়। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ আগষ্ট) দুপুরে এসব কন্টেইনার খুলে আমদানী নিষিদ্ধ পণ্য জব্দ করে কাস্টম কর্তৃপক্ষ।

মোংলা বন্দরে আসা জাহাজ ‘এম ভি স্যানজোর্জিও’ স্থানীয় শিপিং এজেন্ট মেসার্স ওশান ট্রেড লিমিটেডের খুলনাস্থ সহকারী ম্যানেজার মোঃ মেহেদি হাসান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরা শুধু ওই জাহাজে থাকা কন্টেইনারগুলো আমদানী করেছি, তবে কন্টেইনারের মধ্যে কি পণ্য ছিল সেটা আমরা জানতাম না’। এটা ওই কন্টেনারে পণ্য আমদানীকারকরাই ভালো বলতে পারবেন বলে তিনি জানান।

তবে পণ্য আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার মের্সাস তাজ ট্রের্ডাস-এর মালিক মোঃ সাব্বির হোসেন দাবী করেন, এই পণ্য তিনি আমদানী করেন নি, তিনি টেনিস বল আমদানীর জন্য টাকা পাঠিয়েছেন। সাব্বির হোসেন আরও বলেন, ভূলবশত মালয়েশিয়ার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নিউসাইন কর্পোরেশন এটা করেছেন। কারণ তারা টেনিস বল বিক্রির পাশাপাশি পোস্তদানাও বিক্রি করেন।

আরেক পণ্য আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আয়শা ট্রেডার্স-এর মালিক মোঃ আকবর হোসেনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেন নি।

বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্সের নেতা মোঃ কবির হোসেন ও মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, পণ্য আমদানীকারদের বক্তব্য হাস্যকর, এটা পুরোটাই নাটক। তারা মোংলা বন্দরের ভাবমূর্তি আর্ন্তজাতিকভাবে নষ্ট করার জন্য এসব পণ্য আমদানী করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।

এদিকে মোংলা কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মোঃ শামসুল আরেফিন খান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, প্রাথমিকভাবে তাদের কাছে মনে হয়েছে- আমদানীকৃত এই নিষিদ্ধ পণ্য বন্দর জেটি থেকে বের করে দিতে জেটির নিরাপত্তা কর্মীরা সহায়তা করতেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগেরহাট প্রতিনিধি মাসুম হাওলাদার। #