টাঙ্গাইলে যৌনবর্ধক ও নকল ঔষধের ছড়াছড়ি, তথ্য সংগ্রহে গেলে হুমকি- ধামকি

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গালা ইউনিয়নের গালা দ’হের পাড় ও সাদুল্লাপুর বাজারের প্রায় প্রতিটি মুদি দোকানেই অবাধে বিক্রি হচ্ছে নকল এলোপ্যাথিক ঔষধ এবং আমদানি নিষিদ্ধ ইন্ডিয়ান যৌনবর্ধক ঔষধ। মুদি দোকানগুলোতে এলোপ্যাথিক ঔষধ বিক্রি করলেও তাদের নাই কোন অনুমোদন বা ড্রাগ লাইসেন্স। অথচ আইন বা এসব নিয়ে তাদের কোন তোয়াক্কা নাই।
এ সমস্ত যৌন বর্ধক ঔষধ সহজলভ্য হওয়ায় বিপথগামী হচ্ছে ওই এলাকার কিশোর ও তরুণ সমাজ। তাছাড়া স্বাস্থ্যহানীসহ নানারকম অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হচ্ছে ওইসব মারাত্মক ঔষধ সেবনকারীদের কেউ কেউ। ভেঙে পড়ছে ওইসব এলাকার পারিবারিক ও সামাজিক অবকাঠামো। অবনতি হচ্ছে আইন- শৃঙ্খলা পরিস্থিতির।
সরেজমিনে সাদুল্লাপুর বাজার ও দ’হের পাড় ঘুরে দেখা যায়-এখানে প্রায় খোলাখুলিভাবেই বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন নামকাওয়াস্তে কোম্পানির নকল ও যৌনবর্ধক ঔষধগুলো। গ্রামের অশিক্ষিত মানুষগুলোর সহজ- সরলতার সুযোগ নিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো ওষুধ দিয়ে দিচ্ছে দোকানদাররা।
ঔষধ সম্পর্কে নূন্যতম ধারণা না থাকলেও তারা হয়ে উঠছেন ঔষধ বিক্রেতা । এ সম্পর্কে দ’হের পাড়ের মুদি দোকানদার কামাল বলেন -মানুষজন রাইত_ বিরাতে বিপদে পইরা আহে। ওষুধ চায় । তাই দোকানে কিছু ওষুধ রাখি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান-তার ঔষধ সম্পর্কে কোন ধারণা নাই এবং তিনি বলতে গেলে অক্ষরজ্ঞান শূন্য।
দ’হের পাড়ের শাজাহানের দোকানে গেলে দেখা যায় আরো ভয়ংকর চিত্র। এখানে প্রায় ছোটখাটো একটা ফার্মেসির সমান ঔষধের মজুদ দেখা যায়। যার বেশির ভাগই নকল বা অনুমোদনহীন অখ্যাত সব কোম্পানির ঔষধ।
দেখা যায় বেশ কয়েক রকমের যৌনবর্ধক ঔষধ। সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে দোকানদার কৌশলে ওগুলো সরিয়ে ফেলতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত দুই ধরনের যৌনবর্ধক ওষুধ উদ্ধার করে এগুলো নিয়ে দোকানদার শাজাহানকে প্রশ্ন করা হলে এ সময় এগিয়ে আসেন এলাকার জনৈক মোহাম্মদ আলী।
তিনি নিজেকে এলাসিন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব অর্থাৎ সরকারি চাকুরিজীবী পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের সাথে অশালীন আচরণ করেন এবং তথ্য সংগ্রহে বাধা প্রদান করেন। উপস্থিত মানুষজনকে তিনি উত্তেজিত করে তোলেন এবং তাদের সাথে নিয়ে নানা রকম কটু বাক্য ব্যবহার করেন। তারপর সদম্ভে ঘোষণা করেন- তার এলাকায় এসব সাংবাদিকতা চলবে না। সাংবাদিকরা ইচ্ছা করলে যা খুশি লিখুক। সমস্যা নাই।
যৌনবর্ধক ঔষধ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন সাদুল্লাপুর বাজারের একজন সত্তোরোর্ধ প্রবীণ ব্যক্তি। তিনি বলেন- বাবা গো, আমার পোলাডা একসময় এইসব নীল বড়ি খাইতো। ওইসব খাইতে খাইতে ওর ভিতরে কিছু আর নাই। এক সময় ওর বউডাও ওরে থুইয়া চইলা গেছেগা।
এ প্রসঙ্গে গালাগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজসেবক আলী হোসেন বিটিসি নিউজকে বলেন- আমি বুঝতে পারি না অনুমোদনহীন, লাইসেন্সবিহীন তারা এগুলো কিভাবে বিক্রি করে? আমি পরবর্তীতে গ্রামের মানুষের সাথে কথা বলেছি। তারাও এসব বিষয়ে একমত।
যুব সমাজের প্রতি আমার আহ্বান রইল- আপনারা মাদক মুক্ত সমাজ গড়ুন। খেলাধুলা ও শরীরচর্চা করুন। এইসব আজেবাজে ঔষধ কখনো খাবেন না।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর টাঙ্গাইল প্রতিনিধি লুৎফর রহমান উজ্জল। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.