টাঙ্গাইলের ইটভাটাগুলোতে শত শত মণ কাঠ পোড়ানো হচ্ছে

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের ইটভাটাগুলোয় কয়লার বদলে প্রকাশ্যে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। বিলীন হচ্ছে বনভূমিসহ বসতবাড়ির গাছপালা। এতে পরিবেশ দূষিত হয়ে স্বাস্থ্যহানির পাশাপাশি ফসলের উৎপাদন ব্যাপক ভাবে কমে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদ ও স্থানীয় লোকজন।
টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় – জেলায় মোট ২৮৫ ইট ভাটার মধ্যে ১৫৮ টি ইটভাটা অবৈধ ভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
এর মধ্যে কালিহাতী উপজেলায় ১০ টি, দেলদুয়ার উপজেলায় ১টি, বাসাইল উপজেলায় ৭টি, ভূঞাপুর উপজেলায় ৫টি, সখিপুর উপজেলায় ৫টি, গোপালপুর উপজেলায় ৩টি, মধুপুর উপজেলায় ১৯ টি ,নাগরপুর উপজেলা ৯টি, ধনবাড়ী উপজেলা ১৮টি, মির্জাপুর উপজেলার ৩২ টি এবং ঘাটাইল উপজেলা ৪৯ টি অবৈধ ইটভাটা আছে । বৈধভাবে ১২৭টি ইটভাটা পরিচালিত হলেও সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করছে না তারা।
সরেজমিনে কয়েকটি উপজেলা ঘুরে দেখা যায়- বেশিরভাগ ইটভাটা বসতবাড়ি ও কৃষি জমির আশেপাশেই করা হয়েছে।ইটভাটায় কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানোর নিয়ম থাকলেও খরচ সাশ্রয়ের জন্য তারা অবাধে পোড়াচ্ছে কাঠ। এক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করছে না তারা। এতে ফসলি জমিগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে । বনভূমি ধ্বংসের কারণে পরিবেশের বিপর্যয় হচ্ছে। ইটভাটাগুলোর কালো ধোঁয়ায় মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে চারপাশের পরিবেশ।
ঘাটাইল উপজেলার নাইম ব্রিকস,মদিনা ব্রিকস, কালিহাতী উপজেলার বি এস কে,বন্ধনসহ কয়েকটি ইটভাটা ঘুরে দেখা যায়- এসব ইটভাটায় শত শত মণ আকাশমনি, মেহেগুনি,আম,তেতুলসহ বিভিন্ন ধরনের কাঠ পোড়ানো হচ্ছে বা পোড়ানোর জন্য মজুদ করে রাখা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কালিহাতী উপজেলার সিংগাইর গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন-ইট ভাটা সম্পর্কে কিছু বলতে গেলেই ভাটার মালিক বা তাদের লোকজন আমাদের গালাগালি, ভয়-ভীতিসহ নানাভাবে হয়রানি করে।
এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি না হলেও কালিহাতীর বি এস কে ইটভাটার মালিক নাসির ও অপু বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন- আমরা সবদিক ম্যানেজ করেই ব্যবসা করছি। আপনারা যত পারেন খবর প্রকাশ করেন ।তাতে আমার আমাদের কিচ্ছু হবে না।
অনুরূপ বন্ধন ইটভাটার ম্যানেজার কামরুল এবং বিদ্যুৎ নামের আরেকজন কর্মচারী দম্ভ নিয়ে বলেন- ভাই বেশি বেশি খবর প্রকাশ করেন এবং ভিডিও করেন। এতে আমাদেরই প্রচার হবে বেশি।
টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন – গত বছর আমরা অনেকগুলো ইটভাটাকে জরিমানা করেছি। এ বছরও অভিযান বলবৎ আছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক কিলোমিটারের মধ্যে কোন ইটভাটা করা যাবেনা। যে সকল ইটভাটা বসতবাড়ি,ফসলী জমি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আছে সেগুলোর ছাড়পত্রও বাতিল করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর টাঙ্গাইল প্রতিনিধি লুৎফর রহমান উজ্জল। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.