টাকা না থাকায় ভাইয়ের মরদেহ কোলে করে বাড়ির পথে

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সাদা কাপড়ে মোড়ানো দুই বছর বয়সী এক শিশুর মরদেহ। সেই মরদেহ কোলে নিয়ে হেঁটে চলেছে ১০ বছর বয়সী এক বালক। ওই বালকের মুখে ক্লান্তি, চোখে বিষণ্ণতার ছাপ। চোখ থেকে গড়িয়ে পড়েছিল পানি। এ শিশুর কয়েক হাত দূরেই তার সঙ্গে হাটছিল তার বাবা। এমনই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তপ্রদেশের বাগপতে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, ১০ বছর বয়সী ওই শিশু কাঁদতে কাঁদছে বলেছে, তার সৎমা তার ভাইকে রাস্তায় চলন্ত গাড়ির নিচে ছুড়ে ফেলেন। পরে গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে তার ভাইয়ের মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে বাগপত হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। শিশুটির বাবা প্রবীণ কুমার তার ১০ বছর বয়ী ছেলে সাগরকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে যান। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ প্রবীণের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেই মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি লাশবাহী গাড়ির ব্যবস্থা করে দিতে বলেছিলেন পেশায় দিনমজুর প্রবীণ।
তিনি অভিযোগ করেন, হাসপাতাল থেকে তা ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়নি। গাড়ি ভাড়া করে সন্তানের দেহ ৪০ কিলোমিটার দূরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাবেন, সেই টাকাও ছিল না তার কাছে। ফলে বাধ্য হয়েই সন্তানের মরদেহ নিয়ে বাড়ির পথে হাঁটা শুরু করেন তিনি।
কিছু দূর যাওয়ার পর সন্তানের মরদেহ ছেলে সাগরের কোলে তুলে দেন প্রবীণ। তিনি বলেন, ‘কিছুটা হাঁটার পর আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। তাই ছোট ছেলের মরদেহ আমার বড় ছেলে সাগরের কোলে তুলে দিয়েছিলাম।’
সাগরকে তার ভাইয়ের মরদেহ কোলে নিয়ে হাঁটতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। এরপর পুলিশ হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করলে গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়।
বাগপত হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা দীনেশ কুমার বলেন, ‘যারা লাশবাহী গাড়ি চান, তাঁদেরই দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে কয়েক মিনিট দেরি হয়েছিল। ততক্ষণে ওই ব্যক্তি তার সন্তানের দেহ নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে হাঁটা শুরু করেন। বিষয়টি আমার গোচরে আসতেই তাদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’ #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.