জোর করে বাগান থেকে আম পাড়ার অভিযোগ ভূমিদস্যু ফারুকের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে আদালত ও প্রশাসনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ব্যক্তি মালিকানা জমি দখলের চেষ্ট করে যাচ্ছে ভূমিদস্যু এসএম ওমর ফারুক নামের এক ব্যক্তি। আর এ কাজে তিনি ধর্মিয় অনুভূতিকে কাজে লাগাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জমির প্রকৃত মালিক রাজশাহী নগরীর দরগাপাড়া এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম শাফিক।

তিনি বলেন, নগরীর উপকণ্ঠ পবার মুশরইল নারিকেল বাড়িয়া কৌচুয়াতৈল এলাকায় আমার ক্রয়কৃত পরিত্যক্ত একটি বাগান আছে। প্রয়োজন না হওয়ায় আমি আমার জমি কখনই বাউন্ডারি দেই নাই।

আর পরিত্যক্ত রাখার ফলে স্থানীয়দের ভূল বুঝিয়ে ঈদগাহ্ ময়দান ঘোষণা দেন এই ফারুক। সেখানে জোর পূর্বক সীমানা প্রাচীর নির্মান করে একটি লোক দেখানো মিনার তৈরী করেছে। এই জমিটি দীর্ঘদিনের ঈদগাহ্ ময়দান বলে ফারুক অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান শাফিক।

এছাড়াও আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তার বাগানে থাকা ৮টি আম গাছ থেকে জোর করে ফারুকের দোসররা আম পেরে নিয়েছে। অথচ এই জমি নিয়ে রাজশাহী কোর্টে মামলা চলমান রয়েছে। মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই জমি কেউ ব্যবহার ও জমি থেকে কেউ কিছু ভোগ দখল করতে পারবে না জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারুক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, এটি তার এলাকার পরিত্যক্ত আম বাগান। এই বাগানের আম গ্রামের লোকের হক। তাই তার নির্দেশেই তারা আম নামিয়েছে। তবে আম বিক্রি করেননি বলে জানান তিনি।

এদিকে শাফিক বলেন, প্রাচীর ও মিনার তৈরীর খবর পেয়ে চলতি বছরের ১৮ মার্চ আমি জমিতে যাই এবং সীমানা প্রাচীর ও মিনার করা হচ্ছে কেন জানতে চাইলে ফারুক কৌশলে মসজিদে গিয়ে ভাড়াটিয়া গুন্ডাবাহিনী এসে ঈদগাহ্ দখল করছে এই মর্মে মাইকে ঘোষণা দেন।

সেইসাথে তাদের প্রতিহত করার জন্য এলাকাবাসীকে আহবান জানান। তার এই ঘোষণায় স্থানীয়রা লাঠি ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ভূমিদস্যু ফারুকের গুন্ডাবাহিনীর সাথে যোগদিয়ে স্থানীয়রা আমার উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে দখলবাজ ফারুকের আক্রমনে আমার সাথে থাকা ভাগিনাসহ কয়েকজন আহত হন। পরে পুলিশের সহযোগীতায় আমি প্রানে বেঁচে ফিরে আসি। এ ঘটনায় নগরীর চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।

শফিক আরো বলেন, আমার জমিটি কয়েক কোটি টাকা মূল্যের হওয়ায় ফারুকের নজরে পড়েছে। তিনি আমার নিকট তার ব্যক্তিগত ফায়দা হাসিল করার উদ্দেশ্যে এসকল অপপ্রচার ও চক্রান্ত চালাচ্ছে। ব্যবহার করছে স্থানীয়দের। আসলে ঈদগাহ এর নামে জমিটি এলাকাবাসীকে দিয়ে দখল করে কৌশলে নিজের নামে করে নেয়াই হচ্ছে ফারুকের মূল লক্ষ।

শুধু তাই নয় আমার করা মামলার আসামীদের আটক করতে গেলেও মসজিদে মাইকিং করে পুলিশের উপর চড়াও হচ্ছে ফারুকসহ তার বাহিনী। এছাড়াও সরকারী কাজে বাঁধাদান করাসহ মারমুখি আচরন অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ করেন শাফিক।

জানতে চাইলে ফারুক বলেন, আমি সাম্যবাদি দলের নেতা। আমাদের এলাকার এটা পরিত্যক্ত জমি। এই জমি ঈদগাহ ময়দান হিসেবে এলাকার লোকজন ব্যবহার করবে। কোনভাবেই আমি এ জমি কাউকে ভোগ দখল করতে দেবো না। জমির কাজপত্র বা মালিকানা আছে কিনা, এমন প্রশ্নে উত্তর তিনি বলেন, তার নামে এই জমিরি কোন কাগজপত্র নাই। এমনকি ঈদগাহের নামেও জমির কোন প্রকার কাগজপত্র। দখল সূত্রে তিনি এই জমিতে ঈদগাহ করার ঘোষণা দিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানায়, গত ২০মে চন্দ্রিমা থানা পুলিশ এই এলাকায় যায় আসামী ধরতে। এসময় ফারুক মসজিদে মাইকিং করে পুলিশকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন। এতে পুলিশ চরম বিপাকে পড়েন। একপর্যায়ে তারা আসামী না ধরে পিছু ফিরে আসতে বাধ্য হন বলে জানান তারা।

জানতে চাইলে চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুম মনির বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, এলাকাবাসীর হামলার ঘটনায় শফিকুল ইসলাম শাফিক বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। ঐ মামলায় এর আগে একজনকে আটক করা হয়।

এরপর সাবেক মেম্বর নূরুল ইসলাম হুদা ও তার ছেলে রিপনকে আটক করা হয়। এখন এজাহারভূক্ত অন্য আসামীদের ধরতে গেলে ওমর ফারুক সরকারী কাজে বাঁধাদান করাসহ পুলিশের উপর এলাকাবাসীদের নিয়ে চড়াও হচ্ছে। তবে এই জমি ফারুক কোনভাবেই রক্ষা করতে পারবেনা।

কারণ ফারুকের নিকট জমির কোন প্রকার কাজপত্র নেই। এমনকি ঈদগাহ করার জন্য সরকারের নিকট থেকে কোন প্রকার কাগজপ্রত নেননি। পুলিশের কাজে বাধা এবং পুলিশের উপর চড়াও হওয়ার বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ ফজলুল করিম (বাবলুরাজশাহী। # 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.