জেলা শহর বাদ দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে পাসপোর্ট অফিস! নির্মানাধীন মার্কেট ও ব্যাংক ঋন থাকায় পথে বসবেন জমির মালিক


নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরে জেলা শহর ব্যতিরেকেই ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে পাসপোর্ট অফিস। জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় উপস্থিত জনপ্রতিনিধি এবং সরকারী কর্মকর্তারা এরুপ সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করলেও বিচেনায় নেয়া হয়নি তা।

অপরদিকে ভুমি অধিগ্রহণ নীতিমালা অমান্য করে একজন ব্যবসায়ীর নির্র্মাণাধীন ৪ তলা মার্কেট অধিগ্রহণ করা হলে নিংস্ব হয়ে পড়বেন ওই ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীর দাবি তিনি ওই জায়গার অপর ব্যাংক থেকে ২ কোটি ১১ লাখ টাকা ঋন গ্রহণ করেছেন।

এ ব্যাপারে লিখিত আপত্তি জানালেও তা বিবেচনায় আনছেনা জেলা ভুমি অধিগ্রহণ শাখা। এছাড়া জেলা শহরের বাইরে পাসপোর্ট আিফস নির্মাণ করা হলে েেসখানে যাতায়াতের জন্য জেলা বাসীকে ভোগান্তি পোহাতে হবে।

নাটোর শহরের মল্লিকহাটি মহল্লার অধিবাসী ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বিটিসি নিউজকে জানান, তিনি একজন বেকারী ব্যবসায়ী। নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় বেকারী সাগ্রী তৈরির জন্য প্রতিবেশীদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে তিনি শহরের বাইরে বড় হরিশপুর ইউনিয়নের বড়হরিশপুর মৌজায় বিভিন্ন সময়ে জমি ক্রয় ও এওয়াজবদল করে ১২৫৭.১২৫৮.১২৫৯ ও ১২৬০ দাগে মোট ৪১ মতাংশ জমির মালিক হন। এরপর ওই জমির সামনে মার্কেট ও পিছনে কারখানা নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালে সাউথ ইস্ট ব্যাংক থেকে এক কোটি ৮০ লাখ টাকা ঋন গ্রহণ করেন।যা বর্তমানে সুদাসলে ২ কোটি ১১ লাখ টাকা হয়েছে।

এরপর উপজেলা পরিষদ থেকে নক্সা পাস করে সেখানে ৪ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে মার্কেট নির্মাণ শুরু করেন। বর্তমানে সেখানে আন্ডার গ্রাউন্ডসহ দ্বিতল ভবন নির্মাণ শুরু করা । দোকান ঘরগুলোর ছাদ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল।

এ অবস্থায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর তার ওই জমির সন্মুখভাগে মার্কেটের জন্য নির্মিত ভবনের ২৪ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের জন্য পত্র পান এবং আপত্তি থাকলে ১০ অক্টোবরের মধ্যে লিখিতভাবে দাখিলের জন্য নাটোর জেলা প্রশাসকের ভুমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে পত্র পান।

উক্ত পত্র প্রাপ্তির পর তিনি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসকের ভুমি হুকুম দকল শাখায় লিখিত অপত্তি দাখিল করেন। এরপর গত গত ৫ নভেম্বর শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু বিশ্বস্ত মারফত জানতে পেরেছি ওই জমি হুকুম দখলের জন্য জেলা প্রশাসন অটল রয়েছেন।

তিনি দাবি করেন তার বর্তমান জমির মূল্য শতাংশ প্রতি প্রায় ১০ লাখ টাকা । কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের অন্তুরগত হওয়ায় শতাংশ সরকারী গড় মূল্য ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা শতাংশ। এছাড়া তিনি দোকান ঘর ইজারা দিয়ে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। কারখানার জন্য প্রায় ৭০ লক্ষ টাকার মেশিনারী ক্রয় করেছেন।

এ অবস্থায় ওই জমি অধিগ্রহণ করা হলে তিনি পথে বসবেন।

নাটোর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান বিটিসি নিউজকে বলেন, গত নভেম্বর জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় প্রস্তাবিত জায়গায় পাসপোর্ট অফিস না করে কালেক্টরেট অফিসের সামনে অথবা শহরের মধ্যে কোন ফাঁকা জায়গায় করার প্রস্তাব করা হয়। কারণ ফাকা জায়গা অধিগ্রহণ করা হলে সরকারের ব্যয় সাশ্রয় হবে।

ওই সভায় উপস্থিত জনপ্রতিনিধি এবং সরকারী কর্মকর্তাদের অধিকাংশ একমত পোষণ করেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে শহরের বাইরে ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় পাসপোর্ট অফিস নির্মাণ আমাদের বোধগম্য নয়।এর ফলে একজন মানুষকে রাতারাতি নিঃস্ব করে দেয়া হবে শুধু তাই নয়। শহরের বাইরে পাসপোর্ট অফিসে যাতায়াতের জন্য লোকজনকে ভোগান্তি পোহাতে হবে।

এ বিষয়ে পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক আলী আশরাফ বিটিসি নিউজকে জানান, তার আগের কর্মকর্তারা ওই জমি সিলেকশান করে অনুমোদনের জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলেন। সেই মোতাবেক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুপারিশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ওই জায়গা অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন । এক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার নেই।

অপরদিকে ভুমি অধিগ্রহণ শাখা সুত্রে জানা যায়, যে কোন সরকারী সংস্থার জন্য ভুমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের ভুমি অধিগ্রহণ শাকাকে জানানো হয়। জেলা প্রশাসন জমি নির্ধারণ এবং অধিগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। কিন্তু এক্ষেত্রে নির্দ্দিষ্ট জমি অধিগ্রহণ করার জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যা অধিগহণ নীতিমালার সাথে সাংঘর্ষিক।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় পাসপোর্ট অফিসের জমি অধিগ্রহণের কিষয়ে আপত্তি উত্থাপনের কথা স্বীকার করে বলেন ,সেখানে অন্যত্র জমি দেখার প্রস্তাব করা হয়েছিল।

কিন্তু পাসপোর্ট অফিস অনড় থাকায় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের প্রেক্ষিতে ওই জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুর করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে অপত্তির শুনানী গ্রহণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.